কিছুই বলবো না ..... বেশিদিন নয়, সম্ভবত বছর দুয়েক আগের ঘটনা। একটি সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে পাবলিক ও প্রাইভেট মেডিকেল-ডেন্টাল কলেজগুলোতে এডমিসন সিস্টেম একটি কমন বা সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষার আওতায় আনা হয়। উদ্দেশ্য ছিল, যারা ডাক্তারীতে ভর্তি হবে তাদের সবার জন্য যেন একটি সাধারণ বা একক মানদণ্ড সৃষ্টি। মেডিকেলে ভর্তি সংক্রান্ত জটিলতায় সিদ্ধান্তটিও ছিল যথেষ্ট সময়োপযোগী।
কিন্তু কয়েক বছর থেকে চলে আসা ‘কোচিং বাণিজ্য-প্রশ্ন ফাঁস’
মাথাব্যথায় আজ মন্ত্রণালয় থেকে ডিসাইড হল এখন থেকে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে কোনো ভর্তি পরীক্ষা হবে না।
মেধা তালিকার ভিত্তিতে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবে। মাথা ব্যথার কোন ওষুধ না পেয়ে পুরো মাথাটিই যেন ধড় থেকে কেটে ফেলা হল।
সরকারী-বেসরকারী মিলিয়ে পুরো দেশের মেডিকেল আর ডেন্টাল কলেজ এখন প্রায় শখানেক, মোট আসন সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। যে পাবলিক পরীক্ষায় হাজার হাজার স্টুডেন্ট দেশের সেরা রেজাল্ট করে, সেই পরীক্ষার রেজাল্ট কোনো যুক্তিতেই ২৫০০সিট আছে এমন কোনো একটা প্রতিষ্ঠানের এডমিশন কোয়ালিফিকেশন হতে পারে না। ২০১২ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬২,৪২৬ টি এ+ ফলাফল এসেছে।
তাদের মধ্যে প্রায় ২৩,২১৫ জন গোল্ডেন এ+ পেয়েছে। আবার ঐ ২৩,২১৫ জনের মধ্যে প্রায় ২১,৫৬২ জনই মাধ্যমিক পরীক্ষায় গোল্ডেন এ+ পেয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই আবার বিভাগীয় শহর বা বড় বড় জেলা শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ,এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মেডিকেলে পড়ার সুযোগ দেওয়া হলে ডাক্তারী পেশা যে শুধুমাত্র শহর কেন্দ্রিক হয়ে যাবে তা মনে হয় না বললেও চলে।
গ্রাম আর মফস্বলের ছাত্ররা বরাবরই শহুরে ছাত্রদের থেকে পিছিয়ে থাকে।
শিক্ষাব্যবস্থার-ও এমন আহামরি কোনো পরিবর্তন হয়নি যে, গ্রাম আর শহরের ছাত্রদের ফলাফল প্রায় কাছাকাছি হবে। সবচেয়ে বড় কথা প্রায় সব পরীক্ষক এক ভাবে খাতা কাঁটেন না। পরীক্ষকের মেজাজ-মর্জির উপর ভিত্তি করে খাতায় যে মার্কসের তারতম্য ঘটবে তা নিশ্চিত। এছাড়া এ+ পেতে প্রাকটিকাল পরীক্ষাও বেশ বড় ভূমিকা রাখে । 'সুযোগ-সুবিধা'র অভাবে বা সুযোগে একেক প্রাক্টিক্যাল এক্সামের মার্কস যে একেক ফল দিবে না তাও বা কে বলতে পারে।
বিগত বছর যারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন তারাই বা কি করবেন? মেডিক্যালে যারা চান্স পায় তাদের ৩৫-৪০% দেখা যায় পুরাতন ব্যাচের। নতুন এই প্রক্রিয়ায় সমস্যা তো কমবে না, বরং আরও বাড়বে। ফলশ্রুতিতে এই এডমিসন সিস্টেম মেডিকেলের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও বিরাট প্রভাব ফেলবে।
সবচাইতে বড় কথা, সরকার যদি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার চিন্তা ভাবনা আগের থেকেই করে থাকে তাহলে হুট করে না নিয়ে পরের বছর থেকে নিলেও পারত। এতে করে যারা সেকেন্ড টাইমের প্রিপারেশন নিচ্ছিল তারা অন্তত বিকল্প কিছু একটা ভেবে রাখার সুযোগ পেত।
পুনশ্চঃ মিডিয়া থেকে শুরু করে, কাপড়-চোপড়, লাইফস্টাইল তথা আমাদের সরকারী কর্মকান্ডে যে ভাবে ভারতীয় প্রভাব দেখা যায়, কাল রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সবাই একযোগে ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’ দেখেছেন কিনা কে জানে!
(collected) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।