i would like to read and write কাজে মন বসাতে পারছেন না জোবায়ের। মেঘলা দিনে কাজের গতি পান না তিনি। এটা তার পুরনো অভ্যাস।
শ্রাবণের আকাশ। গুঁড়ি গুুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে।
মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে সূর্য, সেই সকাল থেকেই। এরকম দিনে বউয়ের সঙ্গে খুনসুটি করেই কাটাতে মজা। কিন্তুু ব্যস্ত লোকদের সে ফুরসত কই? কাজের মাঝে ডুবে থাকতে হয়। তবু বউকে সময় কম দেন না তিনি। আজ ইচ্ছে থাকলেও বাসায় কাটাতে পারেননি, কারণ আজকের দিনটা তার কাছে অন্যদিনের চেয়ে আলাদা।
রাতেও ভাল ঘুম হয়নি। বরং সকালের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। নতুন ব্যবসার কাজে হাত দিবেন। ঘুম থেকে উঠেই তড়িঘড়ি করে অফিসে এলেন। নাস্তা খেতে খেতে খবরের কাগজটা একবার উল্টিয়েছেন।
ভাল করে দেখা হয়নি।
অফিসে বসে ঘড়ির কাঁটা গুনছেন তিনি। আর মাত্র দুই ঘন্টা পরে ঠিক বারোটায় তাকে পৌঁছাতে হবে বিমানবন্দরে। রওয়ানা দিতে হবে এক ঘন্টা আগে। যদিও মতিঝিল থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের পথ এক ঘন্টার নয়।
তবু উপায় নেই। সময় বাঁচিয়ে চলা এ শহরে একদম পারা যায় না। রাস্তায় জ্যাম, মিছিল মিটিং করে পথ আটকানো এক শ্রেণীর নাগরিকদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সকালে অফিসে আসার পথেও হকার পুনর্বাসনের নামে রাস্তা বন্ধ রেখে সৃষ্ট জটলায় তার আধ ঘন্টা সময় নষ্ট হয়েছে।
জটলা আসলে কোথায় নেই? ভাবেন জোবায়ের- প্রতিনিয়তই নানা রকম ঝুটঝামেলা পেরিয়ে মানুষকে চলতে হয়।
আজ আমার এই অবস্থায় উন্নীত হতে কতই না ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। এদেশে ব্যবসা করতে হলে, শিল্পকারখানা গড়তে গেলে হাজারো সমস্যা এসে সামনে দাঁড়ায়। সরকারিভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য আর্থিক সহায়তা পেতেও নানান বেগ পেতে হয়। ব্যাংক ঋণ নিতে হলে ব্যাংকারদের সঙ্গে কমিশনের চুক্তিটি আগেই সেরে নিতে হয়।
এসব সমস্যা মোকাবেলা করে জোবায়ের এখন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি।
পত্রপত্রিকা থেকে সাংবাদিকরা এসে তার মতামত জানতে চায়। একজন শিল্পভাবুক হিসাবে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতেও তার ডাক পড়ে। এদেশের শিল্প সম্ভাবনা ও সমস্যাদি সম্পর্কে তার মতামত গুরুত্বসহকারে শোনা হলেও এখনো কার্যত সেসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হয় না। তবু তাকে বলতে হয়, তিনি ও বলেন। দেশপ্রেম নামের একটা পাগলামি বোধ তাকে সবসময় আচ্ছন্ন করে রাখে।
সেজন্যই একটা স্বনির্ভর দেশ গঠনের জন্য তার প্রানপণ চেষ্টা। নতুন নতুন উদ্যোগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টিই তার জীবনের বড় লক্ষ্য এখন।
আজ বারোটায় জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭০৭ বিমানটি অবতরণ করবে। এই বিমানে আসছেন জোবায়েরের বন্ধু মার্টিন হুজ। বৃটেনের নাগরিক হলেও জাপানের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।
সেই ছোটবেলা থেকেই বাবামার সাথে জাপানে আসা। বাবা জাপানে বৃটিশ হাইকমিশনে টাইপিস্টের চাকরি করতেন। তারপর দীর্ঘ দিবস রজনী, জাপান ছাড়তে মন চায়নি। জাপানি এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম প্রেম খেলা, অতপর বিয়ে। দুর্ভ্যাগ্যজনক ভাবে সড়ক দূর্ঘটনায় তার বাবামা দু’জনই মারা যায়।
মার্টিন তার স্ত্রীকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন। স্ত্রীকে ফেলে রেখে লন্ডনে যাওয়াটাও ছিল তার পক্ষে অসম্ভব। শেষে জাপানেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন। একটি ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানিতে চাকরি নেন। বছর কয়েক পরে নিজের বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলে নিজেই গড়ে তোলেন একটি কারখানা।
এভাবে ধীরে ধীরে প্রতিটি ঘর্মাক্ত পদক্ষেপ আজ তাকে পৌঁছে দিয়েছে জাপানের মত একটি উন্নত দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক মর্যাদায়।
মার্টিনের সাথে এখানেই জোবায়েরের মিল। গ্রাম থেকে একটি চাকরির খোঁজে ঢাকায় আসেন জোবায়ের। স্কুল শিক্ষক মামার পরিচয়ে একটি এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ লাভ, তারপর..।
সেদিনের স্মৃতিগুলো মনে হলে এখনো চোখের কোনে জলবিন্দু স্পষ্ট হয়।
শুরুটা ছিল টাইপিষ্টের। আমদানি চাহিদা পত্র তৈরিসহ আনুষঙ্গিক কাজগুলো টাইপ করতে হত তাকে। প্রথমে বারোশ’ টাকা বেতন। যা দিয়ে গ্রামে সংসার চালানো, ছোট ভাইবোনের পড়ার খরচ মিটতো না। বছর ঘুরে দুই হাজার টাকা বেতন দাঁড়ায়।
তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। কোম্পানিতে বিশ্বস্ত কর্মী হিসাবে জোবায়ের এগিয়ে যান তার কর্মনৈপূণ্য নিয়ে। যা নিয়ে সহকর্মীদেরও মাঝেমধ্যে বিরাগভাজন হতে হয়েছে তাকে। একজন টাইপিষ্টকে অযথা পদোন্নতি দেয়ার বিষয়টিও ভাল চোখে দেখেননি অনেকে। নানা রকম তীর্যক মন্তব্যও শুনতে হয়েছে।
সেসবে কান দেননি জোবায়ের। তার ছিল উদ্যম আর মনোবল। এগিয়ে যাওয়ার তীব্র বাসনা। সঙ্গে যোগ হয়েছিল আজমল সাহেবের সুদৃষ্টি। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমল সাহেব একবার কোম্পানির কাজে তাকে জাপান নিয়ে গিয়েছিলেন।
সেখানেই মার্টিনের সাথে পরিচয় ঘটে। মাত্র কয়েকদিনে ঘনিষ্টতা বন্ধুত্ব পর্যন্ত গড়ায়।
বছর দুই পরে জোবায়ের চাকরি ছেড়ে দেন। নিজেই ব্যবসা শুরু করেন। তারপর আরো কয়েক বছরে গড়ে তোলেন জোবায়ের গ্রুপ অফ কোম্পানিজ।
কখনো কখনো স্বপ্নের মত মনে হয়, তার নিজের কাছেই। গ্রাম থেকে উঠে আসা বিএ পাস এক যুবক মাত্র দশবছরে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। নিজেকেই নিজের বিশ্বাস হয় না তখন। গ্রামের সেই সব স্মৃতির কথা মনে পড়ে যায়। চারপাশ থেকে ঘিরে থাকা রাস্তার মাঝখানে তাদের গ্রাম।
পাশেই বয়ে গেছে ছ্ট্টো নদী। চৈত্রের খরা মৌসুমে নদীর হাঁটুজলে গরু-বাছুরের সঙ্গে সাঁতরে বেড়ানো, স্কুল পালিয়ে বাঁশ ঝাড়ে মার্বেল খেলা......।
গ্রামের স্মৃতি থেকে জোবায়ের ফিরে আসেন টেলিফোনের আওয়াজ শুনে। চমকে ওঠেন তিনি, ওপার থেকে মার্টিনের কণ্ঠ-‘সরি জোবায়ের, আই’ম টু লেইট, বিকজ বাংলাদেশ বিমান ক্যান্ট ফাই ফর ইটস মেকানিক্যাল ডিস্টার্বনেস’। তারপর মার্টিন যা বলল বাংলায় তা এরকম: বড় শখ করে তোমাদের দেশিয় বিমানে তোমাদের দেশে যেতে চেয়েছিলাম।
অবশ্য তোমাকে খুশি করার জন্যও। কারণ, আমি জানি তুমি তোমার দেশকে খুব ভালবাস। কিন্তুু তোমাদের বিমান সিডিউল মিস করল। আমি একা নই, আরো অনেকে বিমান বন্দরের লাউঞ্জে আটকা পড়েছে। এই সেরে যাবে, উড্ডয়ন হবে হচ্ছে বলে সব যাত্রীকে লাউঞ্জেই গোটা রাতটা কাটাতে বাধ্য করেছিল।
এখানে তোমাদের দেশীয় একজনকে পেয়েছি। খুব মজার মানুষ। তোমার কোম্পানির নাম সে জানে। তুমি অপেক্ষা কর, বিমান উড্ডয়নের আগে আগেই তোমাকে জানিয়ে দিব।
ওপর থেকে লাইন কাটার শব্দ শোনা গেল।
রিসিভার হাতেই জোবায়ের একবার উঠে দাঁড়ালেন। আবার বসলেন, আবার দাঁড়ালেন। রিসিভারটা টেলিফোনের ওপর ছুঁড়ে ফেললেন। বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্রোধে ফেটে পড়লেন তিনি। বিড় বিড় করে তার মুখ থেকে বেরুলো- শালা দেশ দেশ করে আমরা মরছি, আর সব শালারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমোয়।
কেমন ক্যাপ্টেন ক্রু নিয়োগ করে বিমানের দোষত্রুটি খুঁজে বের করতে পারে না। ডিস্টার্ব করবেই বা কেন? আগে থেকে চেক করে নিতে পারল না? সেদিকে খেয়াল থাকবে কেন? খেয়াল তো কেবল মাস শেষে মাইনে আর উপরি আয়ের দিকে। এক জীবনে বাড়িগাড়ি কিভাবে করবে সেটাই সারাক্ষণ ধান্ধা।
মার্টিনের আসায় বিঘœ ঘটায় জোবায়ের আশাভঙ্গের বেদনায় ব্যথিত। শুরুতেই একটি উদ্যোগ হোঁচট খেল।
আজ মার্টিনের বাংলাদেশে আসা নিছক ভ্রমণের উদ্দেশে নয়। জোবায়ের তাকে আসতে বলেছেন নতুন ব্যবসার কাজে। প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। জোবায়েরের আশা দু’জনের যৌথ বিনিয়োগে এদেশে এমন কিছু করা যাতে বাংলাদেশ লাভবান হয়। দু’জনের পুঁজি বিনিয়োগে ব্যবসায়িক সাফল্যও যাতে আসে।
জোবায়ের প্ল্যানপ্রোগ্রাম ঠিক করে রেখেছিলেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে তার একশ’ একর জমি আছে। এই জমিতে ফসল খুব একটা ভাল হয় না। পতিত না রেখে বরং নতুন কারখানা স্থাপনই ভাল। মহাসড়কের পাশে হওয়ায় যোগাযোগেও অসুবিধা হবে না।
জাপানী আদলে এখানে একটি ইলেকট্রনিক্স হাব গড়ে তোলার স্বপ্ন তার। কারণ, বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদনে অনেক পিছিয়ে। এখানে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাষ্ট্রি গড়ে তোলা সম্ভব হলে অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহের পাশাপাশি রফতানিও করা যাবে। দেশীয় বাজারে সস্তায় পণ্য কিনতে পারবে মানুষ। শ্রমঘণ শিল্প হওয়ায় কাজের সুযোগ পাবে বিপুল সংখ্যক বেকার।
মার্টিনের সাথে আজ রাতে সে চুক্তিটাই ফাইনাল হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তুু...
জোবায়েরের কপাল ধরে ঘাম ঝরে। মার্টিন আসবে সেজন্যে অনেক কাজও হাতে নেননি। মার্টিনের জন্যই রেখেছিলেন আজকের দিনটা। সোনারগাঁও হোটেলে মার্টিনের জন্য রুম বুকড করা হয়েছে এক সপ্তাহ আগে।
এ উপলক্ষ্যে জোবায়ের তার ঘনিষ্ট কয়েকজন ব্যবসায়ী বন্ধুকেও রাতের পার্টিতে দাওয়াত দিয়েছেন।
দরজায় টোকা দিয়ে জোবায়েরের রুমে প্রবেশ করেন আনিস আহমেদ। কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার। বয়সটা পঞ্চাশের কাছাকাছি। অভিজ্ঞতাও কম নয়।
তবু জোবায়েরের রুমে ঢুকে তিনি থ’ হয়ে গেলেন। এ কি! রুমে ফুলস্পীডে এসি চলছে। অথচ জোবায়ের ঘামছেন, চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ। আনিস আহমেদ কিছু বুঝে উঠতে পারেন না। অফিসে ঢোকার সময় স্বভাবসুলভ হাসি লেগেছিল জোবায়েরের মুখে।
এরই মধ্যে কোন সাক্ষাতপ্রার্থীও আসেনি। তাহলে... তাহলে কি কোন টেলিফোন ম্যাসেজ, দু:সংবাদ!
আনিস আহমেদ ঘড়ির দিকে তাকান। ঘড়ির কাটা টিকটিক করে এগিয়ে চলছে। সোয়া এগারোটা বাজতে কয়েক সেকেন্ড মাত্র বাকি। পঁয়তাল্লিশ মিনিট পরেই বারোটা বাজবে।
কিছু বুঝতে না পেরে আনিস আহমেদ ভাবেন- স্যার মনে হয় ভুলেই গেছে আজ মার্টিনের আসার কথা। কিন্তুু এটাতো ভুলবার নয়। জিগ্যেস করবে কি না, বসকে বিরক্ত করা ঠিক হবে কি না এভাবেই কিছুক্ষণ কেটে যায়। স্যার মাথা তুলেও তাকাচ্ছেন না। তাহলে হয়তো হাঁফ ছেড়ে বাচতেন আনিস আহমেদ।
তার মনে হয় স্যার বলেছিলেন, যে কোন কাজের কথায় তিনি বিরক্ত হবেন না। একবার তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানে কেউ স্টাফ, এমপ্লয়ী বলে কিছু নেই। আমরা সবাই এসোসিয়েটস। সহকর্মী হিসাবেই আমরা কোম্পানির স্বার্থে কাজ করবো।
এবার আনিস আহমেদ মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ান।
অস্ফুট কন্ঠে তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসে- স্যার।
আনিস আহমেদের উপস্থিতি টের পেয়ে জোবায়ের ঘুরে দাঁড়ান। বাম হাতে কয়েক পিস টিস্যু পেপার নিয়ে মুখটা মোছেন। তারপর চেয়ারে গা এলিয়ে দেন। ইশারায় আনিস আহমেদকে বসার ইঙ্গিত দিয়ে
ইন্টারকমে দু’কাপ কফি চান।
বসকে শান্ত হতে দেখে আনিস আহমেদের পুরোদমে প্রাণ আসে। নির্ঝর গলায় বলে, স্যার মি. মার্টিন...
- ফাই করতে পারেননি এখনো, এই মাত্র টেলিফোনে জানলাম বাংলাদেশ বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়ায় তার আসতে দেরি হচ্ছে।
আনিস আহমেদ এতক্ষণে বুঝতে পারলেন বসের অবস্থা। জোবায়ের আবার বলতে শুরু করল- আচ্ছা বলুন তো আমাদের দেশের বেশির ভাগ সংস্থায় ট্রান্সপারেন্সি নেই, মানে স্বচ্ছতা নেই কেন? একজন বিনিয়োগকারী এদেশে আসবে, তাতে লাভ কি তার একার না আমার? এতে কি দেশ লাভবান হবে না? কিন্তুু তারা যদি আমাদের দেশে ইন করতেই বাঁধার সম্মুখীন হয় তাহলে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে কেন? অথচ এদেশের মাটি, যার তুলনা মিলে না। ইচ্ছে করলে সোনাও ফলানো যায়।
কিন্তুু এদেশে না এলে পরখ করে না দেখলে তারা বিশ্বাস করবেই বা কেন? জোবায়ের দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কিছুক্ষণ চুপ থাকে।
কম বয়েসী বসের যুক্তিসঙ্গত কথার সম্মতি জানাতে নিজের বয়স আর অভিজ্ঞতার কথা ধরে আনিস আহমেদ বলেন, আসলে স্যার বেসরকারিকরণ ছাড়া এদেশের সরকারীখাতগুলো থেকে প্রয়োজনীয় আউটপুট পাওয়া যাবে না। যা অতীতেও সম্ভব হয়নি।
-কিন্তুু, বেসরকারীকরণের ফলতো আমরা ভাল দেখছি না।
- আমাদের বেসরকারীকরণ প্রক্রিয়াটাই তো স্বচ্ছ নয়।
যথাযথ নয়। এখানে সরকারী কলকারখানা চালু রাখার জন্যে কেউ আসে না। সবাই জমিজমাসহ সম্পদের লোভেই সরকারী প্রতিষ্ঠান কিনতে আসে। জমির যা দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তাই তো লাভ। কইয়ের তেলে কই ভাজার মত।
-ঠিকই বলছেন।
- স্যার, আমার মনে হয় এভাবে ঢালাও বেসরকারীকরণ কোন সমাধান হতে পারে না। বরং ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেটাইজ করে দেয়া উচিত।
- এসব কি মন্ত্রী-আমলারা বোঝে না?
-বুঝতে চায় না। নইলে অতিরিক্ত জনবল ছাঁটাইয়ের পর আবার নিয়োগ করার কি মানে আছে?
- এটা তো রাজনীতি।
- স্যার, ব্যবসায় মুনাফা করতে হলে ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই বিমানকে চালাতে হবে। প্রতিযোগিতায় ফেলতে হবে। আন্তর্জাতিক রুটে বেসরকারী বিমান কোম্পানিকে অনুমতি দেয়ার সময় বলা হয়েছিল প্রতিযোগিতা বাড়বে। সেবার মানও বাড়াবে। আদতে তা হয়নি।
- ঠিকই বলছেন। মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। এ অবস্থা চলতে থাকলে তো দেশে কেউ বিনিয়োগ করতে আসবে না। এমনিতেই ইমেজ সংকট রয়েছে। এই যে ধরুন, আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে বিনিয়োগ স¤প্রসারণে আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের এদেশে বিনিয়োগ লাভজনক কথাটি বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করছি। কিন্তুু তারা যখন শোনে এদেশে রাজনৈতিক দলগুলো লাগাতার হরতাল বেধে দিয়ে ক্ষমতা দখলের প্রাণপণ চেষ্টা চালায়, তখন আমাদেরকে আর বিশ্বাস করতে চায় না।
-ঠিক বলেছেন স্যার। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা কখনো হুজুগে বিনিয়োগ করে না। অনেক ভেবেচিন্তে তারপর পা ফেলে।
আমরা যেমন চাই, তেমনি তারাও, সবসময় বেটার অপশন খোঁজে। হায়ার রিটার্ন আসবে কি না, সেসব আগে চিন্তা করে।
-এগজাক্টলি, তারা বিনিয়োগ করার আগে বেটার অপশন খোঁজে। আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে কি না খতিয়ে দেখে। আবার তারা প্রেডিক্ট্যাবল বিজনেস স্ট্রাকচারও আশা করে।
আর আমরা যদি হঠাৎ কাস্টমস ডিউটির সমালোচনা করি, সরকার তখন সেটা মানতে চায় না।
পিয়ন দু’কাপ কফি এনে দুজনের সামনে দিল। জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে আর গরম কফিতে চুমুক দিয়ে জোবায়ের কিছুটা স্বস্তিবোধ করলেন। বিরক্তির ছাপ এখন একেবারেই নেই তার চোখেমুখে। কফির কাপটা এক পাশে রেখে টেবিলে জমানো ফাইলগুলো সামনে এনে সই করতে লাগলেন।
আনিস আহমেদ বুঝলেন কাজে মন বসেছে তার বসের। বললেন- স্যার আমি তাহলে আসি।
- আসুন।
আনিস আহমেদ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। জোবায়ের বলল- শুনুন।
-স্যার।
-মার্টিনের আগমন উপলক্ষ্যে যাদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছে তাদেরকে দু:খ প্রকাশ করে ঘটনাটা খুলে বলবেন। এও বলবেন যে মার্টিন এলে তাদের জানান হবে।
-জ্বি স্যার ।
বসের নির্দেশ পেয়ে আনিস আহমেদ রুম থেকে বেরিয়ে নিজের চেয়ারে গিয়ে বসলেন।
ম্যালা কাজ জমে আছে তার।
দুই.
টেবিলে জমানো সবগুলো ফাইল সই করে জোবায়ের আরেক কাপ কফির জন্য বললেন। ইন্টারকমে তার পিএস নীলাকেও ডাকলেন।
এই ফাঁকে বিশতলা ভবনের চৌদ্দতলার জানালা দিয়ে বাইরে তাকান জোবায়ের। বৃষ্টি নেই এখন।
ঘোলাটে ভাবটাও কেটে গেছে। আকাশ এখন স্বচ্ছ, সূর্যের আলোয় আকাশের নীল স্পষ্ট। কোথায় গিয়ে মিলেছে এই আকাশ বলা মুশকিল। দিগন্তে তাকিয়ে জোবায়ের খোলা আকাশের নিচে ছবির মত সবুজশ্যামল প্রকৃতিতে হারিয়ে যান। ইটসুরকির অসম শরীর এই নগরীর কৃত্রিম সৌন্দর্য্যকে ম্লান করে দেয় পল্লীর সেই উদার প্রকৃতি তার সৌন্দর্য্যরে বহিপ্রকাশ ঘটিয়ে।
জোবায়েরের স্মৃতিতে সেই নিভৃত পল্লীর কথা, যেখানে জন্ম হয়েছে তার। মনে পড়ে গানের ক’টি লাইন-
শ্রাবনের আকাশ মেঘলা আমি একলা বন্দী হয়ে লোহার খাঁচায়
ছুটে যেতে চাই তোমার কাছে ওগো পল্লী মা
এ শহর যেতে দিতে নাহি চায়
কেবলি আমায় আশার প্রলোভনে নাচায়...
গানের কথা শেষ না হতেই রুমে কারো উপস্থিতি টের পান। বুঝে নেন নীলা এসেছে। পিয়নটাও আসতে পারে কফি নিয়ে। জোবায়ের পেছন ফিরে দেখেন কফি হাতে নীলা দাঁড়িয়ে।
- তুমি কেন কফি আনতে গেলে? পিয়নটা কোথায়..বস।
- চমৎকার স্যার। গানের কথাগুলো খুব সুন্দর। জানেন স্যার, আমারও গাইতে ইচ্ছে করে এমন সব গান- কেবলি আমায় আশার প্রলোভনে নাচায়।
নীলা মেয়েটা খুব সুন্দরী।
অপ্সরী বললে অবশ্য বাড়িয়ে বলা হবে। জোবায়ের তার বউকেই শুধু অপ্সরী বলেন। তারমতে, এই পৃথিবীতে তার বউয়ের মত সুন্দরী দ্বিতীয়টি নেই। সেই গাঁয়ের মেঠোপথ, চারপাশে সবুজ শ্যামল ফসলের মাঠ, মাঝে মাঝে ছায়ার মত সবুজ বেস্টনীর ছোট ছোট টিনের ঘর, খড়ের ঘর, মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ, নারকেল সুপারির সারি সারি বাগান, ঝোঁপঝাড়ে জোনাকির মৃদু আলো, অমাবশ্যার অন্ধকার কেটে কেটে রূপালি আলোয় পৃথিবীকে উদ্ভাসিত করা পূর্ণিমার গোল চাঁদমুখখানা দেখেই জোবায়ের শেলীকে ঘরে বউ করে এনেছে। তার তুলনা বিরল।
শেলীকে সেরা সুন্দরীর আসনে বসালেও জোবায়ের নীলার সৌন্দর্য্যে অস্বীকার করেন না। বয়সও খুব বেশি নয়, বড়জোর বিশএকুশ হবে। বিএ পাস করেই চাকরিতে ঢুকেছে। কোমলমতি মেয়েটির প্রতি জোবায়েরের আন্তরিকতার কমতি নেই। মেয়েটিও কর্মনিষ্ঠ।
সারাক্ষণ কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে চায়। কাজ করে দু:খকে ভুলে থাকতে চায়। ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছে। মা অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখিয়েছে। বিয়েথাও দিয়েছে।
কিন্তুু দুর্ভাগ্য নীলার। সুন্দর রূপ দিয়েও যৌতুকলোভী স্বামীকে বিমোহিত করতে পারেনি। ডিভোর্স হয়ে গেছে। কাজের খোঁজে একদিন জোবায়েরের বাসায় আসে। অভাবের তাড়নায় বিএ পাস মেয়েটা বাসায় ঝিয়ের কাজ করতে চায়।
পরে শেলী জোবায়েরকে বলে কয়ে এই চাকরিটা ধরিয়ে দেয়।
নীলার মুখের দিকে তাকালে সে মুখে দু:খের তীব্রতা খুঁজে পান জোবায়ের। প্রসঙ্গ বদলাতে বলেন - নীলা ‘বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগের অন্তরায় ও সমাধান’ শীর্ষক আমার বক্তব্যটির কম্পোজ শেষ হয়েছে তো?
নীলা দ্রুত উত্তর দেয়- হ্যাঁ স্যার। একটা প্রিন্ট নিয়ে আসবো কি?
- হ্যাঁ, নিয়ে এসো। দেখি কেমন হয়েছে।
..না থাক, আমিই যাচ্ছি কম্পিউটার রুমে।
জোবায়ের কম্পিউটার অন করেন। মার্টিন এলে দেশের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে নিয়ে একটা গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করবেন। তাতে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, শিল্পায়ন ও বিদেশী বিনিয়োগ সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীকে অনুরোধ করেছেন তিনি। তার নিজেরও বক্তব্য থাকবে সেখানে।
গত কয়েকদিন ধরে রাত জেগে জেগে একটা কাঠামো দাঁড় করিয়েছেন। জোবায়ের কম্পিউটারের স্ক্রীণে চোখ রাখেন। পড়ে যান সশব্দে। ভুল হলে মানসম্মানের ব্যাপার। এমনিতেই তার ইংরেজি জ্ঞান কম।
আগে তো ইংরেজি তেমন জানতেন না। ব্যবসা করতে এসে মোটামুটি জানা হয়েছে।
জোবায়ের তার বক্তব্যের দুটো প্রিন্ট বের করেন, বাংলা ও ইংরেজিতে। কম্পিউটার রুম থেকে বের হতেই নীলা কর্ডলেস সেটটা এগিয়ে দিয়ে বলে- ম্যাডামের ফোন স্যার।
জোবায়ের হ্যালো বলে।
ওপার থেকে শেলীর কণ্ঠস্বর- এই কয়টা বাজে এখন? লাঞ্চ করতে আসবে না?
- ও সরি, এুনি আসছি।
জোবায়ের রুমে না গিয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা দেন। তার আগে নীলাকে বলে রাখেন মার্টিন ফোন করলে তাৎক্ষণিক ভাবে যেন তাকে জানান হয়।
গাড়িতে বসে জোবায়ের তার বক্তব্যটা আরেকবার পড়েন। বাসায় গিয়ে শেলীর হাতে বক্তব্যের কাগজটা এগিয়ে দিয়ে বলেন, পড়ে দেখো তো।
কোন পয়েন্ট বাদ পড়ছে কি না। শেলী কাগজটা হাতে নিয়ে ওয়ারড্রোবে রাখেন। বলেন- আগে খাওয়া শেষ করে নিই, পরে পড়বো।
- ঠিক আছে, কর্তীর ইচ্ছাই তো কর্তার ইচ্ছে।
- তাহলে ফ্রেশ হয়ে এসো।
সময় কিন্তুু দু’মিনিট।
স্বামীর প্রতি শেলীর এ অধিকারবোধ জন্মেছে জোবায়েরের ভালবাসা থেকেই। স্ত্রীর প্রেরণাও এক দুর্নিবার শক্তি হিসাবে তাকে সহযোগিতা করে।
- দু’মিনিটের বেশি হয়নি কিন্তুু, বলতে বলতে খাবার টেবিলের পাশে দাঁড়ায় জোবায়ের। শেলী তখন প্লেটে ভাত তুলে দিচ্ছিলেন।
জোবায়েরের চোখের দিকে তাকিয়ে শেলী যেন অন্য কিছুর আভাস পান। তাই দেরী না করেই তরকারির বাটি নিয়ে আসার ছলে রান্না ঘরের দিকে যেতে যেতে বলেন, বেশ করেছো। এখন লক্ষীটির মত বসে পড়।
তিন.
দুপুরে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে বলেন শেলী। জোবায়ের আপত্তি করে না।
অফিস থেকে কোন খবর আসেনি। মনটাও ছটফট করছে। এত বড় একটি বিনিয়োগ সুবিধা পাছে হাতছাড়া হয়ে না যায়। এমনিতেই অনেক পয়সা নস্ট হয়েছে। মার্টিনের পেছনেও অনেক দিন ঘুরতে হয়েছে।
জোবায়ের ভাবেন, এতগুলো এপয়েন্টমেন্ট করতেও কম ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়নি। বাণিজ্যমন্ত্রী, ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মার্টিনের পৃথক বৈঠকেরও দিনক্ষণ ঠিক করা আছে। শেষ পর্যন্ত মার্টিন আসতে না পারলে সবই যদি ভেস্তে যায়!
মার্টিন বলেছিল, দুদিন থাকবে সে। তাকে যেতে হবে মরিশাসে। সেখানেও নতুন ব্যবসার খোঁজ পেয়েছে সে।
সময়মত না এলে কি হবে- এসব নিয়ে জোবায়েরের ভাবনার অন্ত নেই। রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এসবের কোন ঠিকঠিকানা নেই। আপাতত, পরিস্থিতি শান্ত আছে। এমন সময় কাজটা করতে পারলে ভাল হত। কিন্তুু জোবায়েরের মনে শংকা রয়েই গেল।
শংকা আরো অনেক কিছুতেই আছে। তার বন্ধু সাফিন সেদিন বলেছিল, দোস্ত ইন্ডাষ্ট্রি করবা- গ্যাস কই। বিদ্যুৎ নাই। জেনারেটর দিয়ে তোমার অতবড় ইন্ডাষ্ট্রি কতদিন রান করাতে পারবা?
শাফিন ঠিকই বলেছিল। দেশে গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যা যে প্রকট আকার ধারণ করেছে তাতে এদেশে শিল্প গড়ার স্বপ্ন দেখা দু:স্বপ্নের মতই।
তবু জোবায়ের দমেনি। তার আশা উপায় একটা হবেই। নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেলে তার জ্বালানি সমস্যা মিটে যাবে। মাথায় বিকল্প চিন্তাও করে রেখেছে সে। যদিও বিকল্প পদ্ধতিতে তার পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে।
সেক্ষেত্রে লাভের অংকটা কম হবেই।
ব্যবসায় মুনাফা প্রসঙ্গে জোবায়ের কিছু নীতি মেনে চলে। শ্রমিক-কর্মচারিদের শ্রম, উৎপাদনশীলতার বিনিময়ে তার পকেটে টাকা আসে, বিষয়টি সে মানে। নতুন বিনিয়োগ প্রকল্পে মুনাফার চেয়েও তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসংস্থান। যদি ঠিকঠাকমত করা যায় তবে কমপক্ষে পাঁচশ’ লোকের কাজের সুযোগ হবে।
পাঁচশ’টি পরিবারে সংসার ব্যয় নির্বাহ নিশ্চিত হবে।
পাশে বসা শেলী জোবায়েরকে বিমর্ষ দেখে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। বলেন, যা হবার হবে। তুমি এত চিন্তা করো না।
বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে।
বৃষ্টির মাঝে সুর তাল লয় খুজে পাচ্ছেন জোবায়ের। এই বুঝি মার্টিন আসছে। এমন সময় অফিস থেকে ফোন। আশংকাই সত্যি হল। নীলা জানাল, মার্টিন ফোন করেছিল।
তার আসা হচ্ছে না। বাংলাদেশ বিমান ফাইট একদিন পিছিয়ে দিয়েছে। এই মুহূর্তে অন্য কোন এয়ারলাইন্সে আসা সম্ভব হচ্ছে না। মরিশাস থেকে ফেরার পর হয়তো নতুন দিনক্ষণ ঠিক করে আসবে।
একটি বড় প্রকল্পে বিনিয়োগে শুরুতেই এমন হোঁচট খাওয়ার জন্য প্রস্তুুত ছিলেন না জোবায়ের।
দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারলে ভালই হত। দেশের পরিস্থিতি কখন কোথায় গিয়ে ঠেকে কে জানে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সাংঘর্ষিক রূপ নিলে মার্টিনও পিছু হটবে। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া করণীয় নেই।
জোবায়ের নীলাকে বললেন- রাতের পার্টির আর হচ্ছে না।
সবাইকে জানিয়ে দাও।
পার্টি যখন হচ্ছে না তার মানে মার্টিন আসছে না তা বুঝে নেয় শেলী। আরেকটু ঘনিষ্ট হয়ে বসেন। তার হাতে জোবায়েরের ‘বিদেশী বিনিয়োগের অন্তরায় ও সমাধান’ শীর্ষক লেখার কপিটি। সেটি পাশে রেখে স্বামীকে বলেন, মন খারাপ করো না।
বাইরে তখনো বৃষ্টি, তবে রিমঝিম ছন্দ আর কানে বাজছে না তাদের।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।