আগের পর্বে সেন্টমার্টিন যাওয়া নিয়ে লিখেছিলাম।
রাত নটার দিকে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ হয়ে ফেরত আসলাম। কক্সবাজারে দেখার মাঝে বাকী আছে ইনানী বীচ আর হিমছড়ি। খোজ নিলাম, ২টা জায়গাই ৪-৫ ঘন্টার মাঝে ঘুরে আসা যাবে। এটা শুনে আমার স্ত্রী বায়না ধরলো, কাল সকালের দিকে ইনানী হিমছড়ি ঘুরে দুপুরের পরে বান্দরবানের দিকে রওনা দিলে কেমন হয়? রাজী হয়ে গেলাম।
পরদিন সকালে নাস্তা সেরে একটা ইজিবাইক ঠিক করলাম। আমাদের ইনানী বীচ আর হিমছড়ি ঘুরিয়ে আনবে, সময় যতক্ষণ লাগুক ৮০০ টাকায়। পরে ভাড়া ৫০০ টাকায় রফা হলো। অনেকেই যাচ্ছে খোলা জীপে করে, অনেকে সিএনজিতে করে। কেউবা রিক্সাতে।
রিক্সাতে সময় বেশি লাগবে, সিএনজিতে শব্দ বেশি হবে, আর জীপে ২জনের জন্য যাওয়াটা ব্যয়বহুল। ইজিবাইকই পছন্দ হলো, মাঝে মাঝে থামলাম, ছবি তুললাম অনেকগুলো।
ইনি হচ্ছেন আমাদের ইজিবাইকের ড্রাইভার।
হিমছড়ি ইনানীর দিকে যাওয়ার রাস্তার দুই পাশেই প্রচুর জায়গা প্লট করে বিক্রি করা হয়ে গেছে। সবাই বাগানবাড়ী, রিসোর্ট এর জন্য কিনে রেখেছেন।
সাথে নিজের সাইনবোর্ডও।
বাদ যান নাই গায়ক হাবিবও।
সাগরের পাড়ে পাড়ে আছে অনেক পানের বরজ।
পানের বরজ, কাছ থেকে তোলা। পান চাষের জন্য এমন ঘর তৈরী করা হয় খড় দিয়ে।
উকি দিয়ে ভেতরের ছবিও তুললাম একটা।
সাগরের তীর ঘেষে রাস্তা। অপর পাশে পাহাড়।
ইনানী বিচের একটা আলাদা সৌন্দর্য্য আছে, যেটা কক্সবাজারে বুঝা যায় না, ইনানীতে পানি খুব পরিষ্কার। খুব ঘন ঘন ঢেউ ছুটে আসে।
আরো একটা ছবি।
সাগরের ক্রমাগত ঢেউ যাতে রাস্তার ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য অনেক বড় বড় বালির বস্তা দেওয়া হয়েছে। সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়লেও রাস্তা নিরাপদে থাকে।
কিছু কিছু জায়গাতে বড় বড় কনক্রিটের পাথরও ফেলা হয়েছে,সাগরের ঢেউ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
সেই পাথরে কিছু সী ফুড শুকাতে দিয়েছে এক হোটেল ব্যবসায়ী।
ভাটার সময় বালির বাঁধ ধরে অনেকটুকু সাগরের দিকে যাওয়া যায়। তিমি মাছের মতো বালির বাঁধ জেগে উঠে সাগরের মাঝখানে।
এমন একটা তিমি মাছের উপর দাড়িয়ে আমার নায়িকা।
ইনানী বীচ এলাকাতে তোলা আরো কয়েকটা ছবি।
নৌকাগুলো খুব সুন্দর।
বোনাস হিসাবে ছিলো গরুর ঝগড়া দেখা।
ফেরার পথে হিমছড়িতে থামলাম। টিকেট কেটে পাহাড়ের উপর উঠছে সবাই। আমরাও তাই করলাম। কিন্তু সেই পাহাড়ের সিড়ি আর শেষ হচ্ছে না।
উঠছি তো উঠছিই। পাহাড়ের উপর থেকে তোলা ছবি।
দূরে সাগর দেখা যাচ্ছে।
প্রায় শতাধিক সিড়ি বেয়ে পাহাড়ে উঠার পর যখন এতো সুন্দর সমুদ্র দেখা যায়, তখন পাহাড়ে উঠার সব কষ্ট এক নিমিষেই চলে যায়।
হিমছড়িতে প্রাকৃতিক ঝরণা।
শীতকাল, তারপরও অল্প অল্প পানি পড়ছে।
কিন্তু বান্দরবান নিয়ে আমার একটু ভয় ভয় কাজ করছিলো। হিমছড়ি থেকে ফিরে এসে দুপুরে হোটেল ছেড়ে দিলাম। ছুটলাম বাস কাউন্টারের দিকে। গিয়ে শুনলাম, মাত্র ১০ মিনিট আগে একটা বাস চলে গেল।
পরের বাস আরো একঘন্টা পরে। টিকেট কেটে অপেক্ষা করছি। দুইটার দিকে বাস ছাড়লো। মনে করেছিলাম, কোনো একটা ডাইরেক্ট সার্ভিস হবে। কিন্তু এটা একটা লোকাল বাস, এবং মনোপলি ব্যবসা এইরুটে।
অন্য কোনো বাস নাই। আমাদের বাস কক্সবাজার থেকে ছেড়ে এমন কোনো স্টপেজ ছিলো না, যেটাতে থামে নাই। শীতকাল, তাড়াতাড়ি সন্ধ্যা নামে। যখন বান্দরবান পৌঁছালাম তখন সন্ধ্যে সাড়ে পাঁচটা। সূর্য্য ডুবি ডুবি।
এর পরে হোটেল খোজা নিয়ে এক ইতিহাস।
পরের পর্বে >> ২য় দফা হানিমুন: বান্দরবান পর্ব
আগের পর্ব সমূহ।
২য় দফা হানিমুন: কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, বান্দরবান
প্রথম সেন্টমার্টিন যাত্রার কিছু এলোমেলো ছবি :: প্রথম পর্ব
পাকাচুলের সেন্টমার্টিন ভ্রমণ: ২য় পর্ব ছবিব্লগ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।