আধুনিক নাগরিক জীবন মানেই কেবল ছুটে চলা। আর এই ছুটে চলার মধ্যে সবাই যেন ব্যাস্ত। কোথাও এতটুকু দম ফেলবার ফুরসত নেই। পৃথিবীর সকল শহরের চিত্রই আসলে এক। তবু মানুষ যেহেতু প্রকৃতিগত ভাবেই খানিকটা অবসর, অলসতা প্রিয়, সেহেতু তার ওপর যতই কাজ আর জীবনের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হোক না কেন খানিকটা আলস্যতার ফাঁকতো সে খুঁজে বেড়াবেই।
আমরা অনেকেই খুব গাল ফুলিয়ে বলতে পছন্দ করি, “আরে বাদ দিন মশাই, বাঙ্গালি জাতি অলস। ” কিন্তু সেসব গালভরা বুলিআওরানো লোকদের জবাব দিতেই জানাই, সারা পৃথিবীর ২০টি অলস দেশের তালিকায় কিন্তু আমাদের দেশের কোনো শহরের নাম আপনি খুঁজে পাবেন না। বরং যেসব দেশকে নিয়ে অনেকের গর্বের শেষ নেই যমন, ইতালি, বৃটেন, মালয়েশিয়া, কুয়েত, সুইজারল্যান্ড জেনে রাখুন তাদেরই নাম রয়েছে বিশ্বের সব চেয়ে অলস দেশের তালিকায়।
পৃথিবীর ১২২টি দেশের মধ্যে গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞান সাময়িকি “দ্য ল্যানচেট” সবচেয়ে অলস দেশের এই তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় প্রথমেই আছে দক্ষিণ ইউরোপের দেশ মালটা।
তথ্যে বলা হয়েছে দেশটি প্রায় ৭১.৯ শতাংশ মানুষ নিস্ক্রিয়। দ্বিতীয় স্থানে আছে সুইজারল্যান্ড। এই দেশের মানুষ
ের মধ্যে ৬০.০ শতাংশ নিস্ক্রিয়। তৃতীয় অবস্থানে আছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। মরুভূমির এই দেশে ৬৮.৮ শতাংশ মানুষ নিস্ত্রিয়।
এরপর ক্রমান্বয়ে আসে সার্বিয়া, আর্জেন্টিনা, মাইক্রোনেশিয়া, কুয়েত, বৃটেন, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, জাপান, ডমেনিকান রিপাব্লিক, নামিবিয়া, ইরাক, তুরস্ক, সাইপ্রাস, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভুটান।
এরমধ্যে নিজেদের নিয়ে গর্ব করা বৃটিশ জাতির অবস্থান অলস তালিকার আট নম্বরে। গবেষণায় দেখা গেছে দেশটির সকল মানুষের মধ্যে ৬৩.৩ শতাংশ মানুষ নিস্ক্রিয়। আশ্চরর্যভাবে সুইজারল্যান্ড আছে এই তালিকার দ্বিতীয়তে। তাদের দেশের মোট মানুষের ৬৯.০ ভাগ নিস্ত্রিয়।
আর ইউরোপের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো তালিকায় তাদের প্রতিনিধিত্বই সবচেয়ে বেশি।
তবে লক্ষ্য করার মতো বিষয় হচ্ছে, এই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র অলস দেশ হিসেবে নাম উঠে এসেছে ভুটানের। যদিও তালিকার সবচেয়ে শেষ স্থানটি তার জন্য বরাদ্দ। সুতরাং কর্মঠ দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে আমরা গর্বই করতে পারি। সেইসঙ্গে কদিন আগেতো ল্যানচেট জানিয়েই দিয়েছে, বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচাইতে পরিশ্রমী দেশগুলোর মধ্যে একটি।
সুতরাং অলস বাঙ্গালি বিশেষনটি ভুল প্রমাণ করার গর্ব আমরা এখন করতেই পারি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।