আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক মূর্খ-ভিক্ষুক মা-ই করে দেখালেন!!! কোন শিক্ষিত-সভ্য পয়সাওয়ালা বুদ্ধিজীবী বা সুশিল নয়? লেখাটা পড়েত গিয়ে কাঁদলাম।

লেখকের ভাষা অনেকটা আবেগী ও আক্রমণাত্মক তারপরও ভাললেখা- দৃশ্যটা চার্মিং-বেদনাদায়ক। ২০-২২ বছরের এক তরুণী। সারা শরীর আগুনে পোড়া। কি বিভৎস! দেখলে ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠতে ইচ্ছে করে। কাওরাণবাজারের ফুটপাতের রাস্তায় ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে শুয়িয়ে রাখা হয়েছে তাকে।

শরীরে কাপড় নেই। দু’জায়গায় দু’ছত্র তেনা পেচানো। উলঙ্গ শরীরটা যেন পোড়া পিঠ দিয়ে ঢাকা। পাশে দাঁড়িয়ে হাওমাও করে কাঁদছে এক তরুণ। দু'চোখ বেয়ে অঝোরে পানি পড়ছে তার।

মহিলাটা কোঁকড়াচ্ছে। মনে হল বিদগ্ধ নারীর চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাচ্ছে ছেলেটি। ছেলেটাকে দেখে ঠিক ভিক্ষুক মনে হলো না । শিক্ষিত মানুষগুলো পরিবারের সঙ্গে ইফতারি করবে বলে ব্যস্ত হয়ে ছুটছে। হন্যে তারা, ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত।

একজন মেয়ের বিভৎসতা তাদের ভাবায়না। এসব তাদের চোখেও পড়ে না। রোজার বিকেলে পেটে প্রচ- ক্ষুধা। মেয়েটির দিকে চোখ রেখে চোখ ফিরাই। গাঁ কাটা দিয়ে উঠে।

মাথা নোয়াই। আবার তুলি। একটা উৎকুট গন্ধ ও যেন আসে। ‌ তবু দাঁড়িয়ে থাকি কি যেন দেখার নেশায়। বড়লোক শিক্ষিত মানুষগুলোর মানবতা দেখার নেশায় হয়তো।

ভদ্র লোকগুলো কেউ পায়ে হেঁটে কেউবা গাড়িতে করে, সবাই পাশ কাটিয়ে চলে গেল। কেউ সাহায্য করল না। আশ্চর্য অনেকে চোখ ফিরে তাকালও না। ছেলেটি কাঁদছেই। কখনো তার কান্নার স্পীড বাড়ছে কখনো কমছে।

এবার আমি অফিসে যাব বল আবার হাঁটা শুরু করি। দেখি ভিক্ষার ঝুলি হাতে শিশু সন্তান কোলে এক মা। হয়তো বাসার দিকে ফিড়ছে। তার মুখ মলিন। শিশুটির মুখ আরও বেশি।

মেয়েটির অসহায়ত্ব মায়ের দৃষ্টি এড়াল না। তিনি মেয়েটির কাছে গেলেন। তার হাতে থাকা কয়টা ভাংতি পয়সা তরুণীটির মাথার কাছে রাখলেন। আবার সন্তান কোলে হাঁটতে থাকলেন মহিয়সী!!!ভিড় ঠেলে হাঁটতেই থাকলেন। একবারও পেছনে ফিরে তাকালেন না।

এই ভাংতি পয়সাগুলো হয়তো সে মায়ের সারা দিনের কামাই। সব দান করে দিয়ে তিনি কি একথা ভাবতে ভাবতে হাঁটছেন... ৪ফিট/৮ ফিটের বস্তিতে ফিরে ওদরের-আদরের শিশু সন্তানকে খাওয়াবেনটা কি? আরেকটি রাত উপোসের কথা ভেবে তিনি কি বিষন্ন? নাকি আরেক অসহায়কে সাহায্য করতে পারার খুশিতে সব দু:খ ভুলে গিয়ে বীর দর্পে হাঁটছেন। এ ভিক্ষুক মা যা করে দেখালেন। বাংলাদেশীদের একটা অংশ যদি তা করে দেখাতো তবে নিশ্চয়ই পাল্টে যেত দেশের চেহারা। এ দেশের শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবী, পরজীবী, টকশোজীবী, গোলটেবিজীবী, কলামজীবী, মানাবধিকারজীবী, দানাবধীকারজীবী।

যত জীবীর ফস ফস টস টসের জ্বালায় আমরা টিভি অন করতে পারি না। রাস্তায় হাঁটতে পারি না। কোথাও বসে আড্ডা দিতে পারি না। সেসব পরজীবীদের বলছি। চাপার বাহার কমিয়ে মনের বাহার দেখান।

আমরা আপনাদের থেকেও এমন কাজ কামনা করি। সব ডক্টরেট ডিগ্রী ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে এই মা থেকে জীবনের মূল শিক্ষা নেন। আর যারা বড়লোক, বিজনেস ম্যাগনেট বা শিল্পপতি কিংবা উচ্চ শিক্ষিত, শভ্য আধুনিক তারা। আর যারা রাজনীতিবিদ, তারা দয়া করে মাফ করে দিবেন আমাকে এ রাবিশ লেখার জন্য। আমার লেখার এ দেশের চাষাভুষা অশিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত মানুষদের উদ্দেশে।

অবিরাম স্বপ্ন দেখে চলা একদল তরুণের উদ্দেশে। সত্যবোধ যাদের থেকে এখনও বিলুপ্ত হয়ে যায়নি, তাদের উদ্দেশে... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।