আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

A "দেশপ্রেমিক" In জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট!!!

মত প্রকাশের স্বাধীনতা কোন সুযোগ নয়, অধিকার। তার নাম মোল্লা ওবায়দুল্লাহ বাকী। বাড়ি পুণ্যভূমি গোপালগঞ্জ জেলায় গত সাড়ে তিন বছরে যেখানে মেধার বিস্ফোরণ ঘটেছে। মেধার কারণে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে যাদের নিয়োগ করা হয়েছে তাদের কেউ কেউ একটি কলেজ থেকে পাশ করে, জীবনে কোনোভাবে মাত্র একটা প্রথম বিভাগ অর্জন করেও দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে উপাচার্যের পদকে অলংকৃত করেছেন। রাজধানীর নামিদামি স্কুলগুলোর ছাত্র হওয়ার যোগ্য না হয়েও ঐসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে নিজের ছাত্রীদের নানাভাবে জিম্মি করে কোমলমতি বালিকাদের সিরিজ ধর্ষণ করে হিরো হয়েছেন।

ঐ পুণ্যভূমিতে জন্ম নেওয়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কোন উপাচার্য আবার নিজের যোগ্যতা বলে টিকতে না পেরে নিজ পুন্যভূমি থেকে ঠ্যাঙারে বাহিনী এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পিটিয়ে নিজের আসনে অধিষ্ঠিত থাকতে চেষ্টা করেছেন। তেমনি একজন হলেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোল্লা ওবায়দুল্লাহ বাকী। তিনি একজন সহযোগী অধ্যাপক। এই পরিচালক পদটি অধ্যাপকের। এই ইনস্টিটিউটে পাঁচজন অধ্যাপক আছেন থাকলেও পুন্যভুমিরতে জন্মগ্রহণ করার সুবাদে অধ্যাপকদের ডিঙিয়ে সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা ওবায়দুল্লাহ বাকী পরিচালক পদকে অলংকৃত(!!!) করেছেন ২০০৯ সালের আগস্টে।

উক্ত পদকে অলংকৃত করার পর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নানা রকম কারিশমা তিনি দেখিয়েছেন। নিজের ছেলে আবু ওবায়েদ মো.শহীদুল্লাহকে ক্যানসার ইনস্টিটিউটে হেলথ এডুকেটর পদে চাকরি দিয়েছেন। তাছাড়া ভাইয়ের ছেলে মোল্লা সাইফুল্লাহ,চাচাতো ভাই মোল্লা মিজানুর রহমান,শ্যালকের স্ত্রী শেহেরি আফরোজা,ভায়রার ভাইয়ের ছেলে রিয়াজউদ্দিনকে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়েছেন তিনি। এখানেই ক্ষান্ত হননি, নিজের বাড়ি গোপালগঞ্জের পাইকান্দির ডজনখানেক আয়া,ওয়ার্ডবয়,স্ট্রেচার ও ট্রলি বাহক,ডেটা এন্ট্রি অপারেটর,এমএলএসএস পদে নিয়োগ দিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত গাড়িচলাক আবদুর রহিম শেখকে সরকারি গাড়িচালক বানিয়েছেন এবং বোন নাসরীন বেগমকে এমএলএসএস পদে চাকরি দিয়েছেন।

সন্তান বা পোষ্য চাকরির পরীক্ষায় বসলে নিয়োগ কমিটিতে থাকার বিধান না থাকলেও ২০১০ সালের মার্চে হাসপাতালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ওবায়দুল্লাহ ছিলেন কমিটির সভাপতি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া যখন প্রায় চূড়ান্ত,তখন স্বাস্থ্য ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের দুই প্রতিনিধিকে তাড়িয়ে দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের নিজেই নিয়োগপত্র পাঠান তিনি। এই বিষয়ে তদন্তে নিয়োগ সঠিক হয়নি বলা হলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তা বাতিল করেনি। পরিচালক আত্মীয়স্বজনদের হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়েছেন প্রতিদিন গাড়িচালক ও তাঁর বোন পরিচালকের সঙ্গে ইনস্টিটিউটে আসেন,ছুটির পর পরিচালকের গাড়িতে করে বাসায় ফিরে ঘরের কাজ-কর্ম করেন। এই নিয়ে ২৯ এপ্রিল ২০১০ নিয়োগ কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি কামরুল ইসলাম তাং ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি মো.রফিকুল ইসলাম লিখিতভাবে অভিযাগ করেন । অন্যদিকে রংপুরের মুক্তিযোদ্ধা সুবোধ চন্দ্র দেবনাথ স্বাস্থ্যসচিবকে লিখেছেন,তাঁর ছেলেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় সহকারী হিসাবরক্ষক পদে নিয়োগ না দিয়ে পরিচালক নিজের ভাতিজাকে চাকরি দিয়েছেন।

এসব অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে কমিটি মন্তব্য করে,নিয়োগে কোটা পদ্ধতি মানা হয়নি। ২০১০ সালে ইউজার ফি বাবদ এক কোটি ৯২ লাখ ৯২ হাজার ৮৫০ টাকা রোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ক্যাশিয়ার আবদুস সালামকে জেল খাটতে হয়।

চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আবদুস সালামকে তৃতীয় শ্রেণীর পদে বসিয়েছিলেন তিনি। হাসপাতালের অর্থ আত্মসাৎ ও সরকারকে ধোঁকা দেওয়ার তথ্য পেলেও পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি পরিচালক নয় কোটি টাকা ব্যয়ে টিউমার অপসারণ করার আধুনিক যন্ত্র কিনেছেন। নিয়ম অনুযায়ী যন্ত্র কেনার আগে তা রাখার জন্য বাংকার তৈরি করার কথা। বাংকার তৈরি না করেও পরিচালক মন্ত্রণালয়কে বাংকার আছে বলে জানান।

ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গরমিল ধরে ফেলে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে ওষুধ পেতে জনপ্রতিনিধির সনদের প্রয়োজন না হলেও ক্যানসার হাসপাতালে এই নিয়ম চালু করেছেন ওবায়েদুল্লাহ বাকী। বিনা মূল্যে ওষুধ পাওয়ার জন্য দরখাস্ত করে রোগীকে সাত থেকে ১০ দিন অপেক্ষা করতে হয়।

আত্মীয়স্বজন দিয়ে ক্যানসার হাসপাতাল চালাচ্ছেন পরিচালক পদ্মা সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সদ্য পদত্যাগী মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে জানতে পারলামগত বুধবার (২৫-০৭-২০১২); লন্ডনের একটি হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে আবুল হোসেনকে এই খেতাবে ভূষিত করেছেন। আবুল হোসেন ‘দেশপ্রেমিক’ অতএব, আমরা আরও একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক খুঁজে পেলাম জনাব মোল্লা ওবায়দুল্লাহ বাকীকে। সুতরাং আমরা সহজেই বলতে পারি ‘Another 'দেশপ্রেমিক' Found In জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট!!! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।