আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ অনেকদিন পর

কাঁধের ব্যাগটা ভারী ছিল অনেক মাথাটা নীচু ছিল খানিক চোখের মাঝে ছিল কালো ফ্রেমের চশমা ভারী সৌন্দর্য কালো রাস্তায় আজ ঝরে পড়েছে সব গতরাতের ঝড়ে কৃষ্ণচূড়া অবনত মস্তকে এভাবে অপ্রীতিকর একটি ঘটনা অপেক্ষমান অগ্রসর ভাবলে কি আর মাথা নিচু করে রাখি ! ধাক্কাটা বিব্রত করে দিয়েছিল। কেমন যেন ঘোর লাগা একটি ধাক্কা পুরুষত্ব নিয়ে সব সময় বিচার করা যায় না এহেন কার্যকলাপে। শুধু বোকার মত কিছু ঝাড়ি খেয়ে যেতে হয়, নয়তো অবনত মস্তকে আরও একটু সামনে অগ্রসর হতে হয়। নবনীতা নাম ছিল তাঁর। ক্লাসের শেষে ক্যান্টিনে পরিচয় হয়।

এসে কুটকাট করে "সরি" নামক একটি শব্দ চোখের আর মুখের উপর ঝুলিয়ে গিয়েই যেন সে হনহন করে প্রস্থান করলো। চশমার ফাঁক থেকে তাঁকে দেখার চেয়ে তাঁর চলে যাওয়াই দেখে যেতে হল। এভাবেই বহুদিন কেটে যায় বর্ষাবরনে এসেছিল সবাই শাড়ী পরে সব মেয়েদের মাঝে নবনীতাকেই দেখতে বড্ড ইচ্ছে ছিল। খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল, শেষমেষ খুঁজে পেলাম, যখন আকাশে কালো মেঘ ঢেকে দিয়েছি, যখন ওর খোঁপার কদমফুলগুলো মেঘের কাছে বৃষ্টি চাইছিল। ওর টান টান করা চোখের মাঝে যেন মেঘবতী খেলা করেছিল যেন মেঘ ওর দিকে চেয়ে চেয়ে অপেক্ষায়রত কখন মেয়েটি বের হবে আর কখন এক পশলা বৃষ্টি নামবে।

এক নাগাড়ে এইভাবেই লাইনগুলো চলে আসলো ওকে দেখার পর। অতঃপর খুঁজে নিয়েছি বৃষ্টি তাঁকে, কিছুদূর হেঁটে যেতে যেতেই বৃষ্টি নামলো প্রথমে তাঁর কেশ, কদমফুল, অধর , তারপর সেই শাড়ী ছুঁয়ে। বেশি দূরত্ব ছিল না কথা দুটো বলার মাঝে দুটো মানুষই এখানে আমরা, ছাতাটা তুমি নিয়ে যেতে পারো বাড়িয়ে দিলাম দ্বিধাহীন ভাবে, নিজেকে মনে হতে লাগলো কোন বিজ্ঞাপনের নায়ক। একটু পরেই বিজ্ঞাপনটা শেষ হয়ে যাবে মেয়েটি চলে যাবে ছেলেটি বৃষ্টিতে ভিজবে। কিন্তু না, নবনীতা দাঁড়িয়ে রইলো, ছাতাটা ধরল না ছুঁয়ে অবাক করে দিয়ে আমার সকল ভাব ও ভাবনাকে।

বৃষ্টিবাক্য বিনিময়ে প্রথম কথাটি ছিল এই -- আপনি চাইলে পাশে এসে দাঁড়াতে পারেন। ছাতাটা বৃষ্টির উপর তুলে। যা বলেছে তাই করার জন্য পাশেই দাঁড়িয়ে থাকলাম। অতঃপর থেমে গেলো বৃষ্টি , ভেজা ছিল আমার অর্ধেক অঞ্চল শরীরের। অর্ধেক স্থান করে দিয়েছিলাম যেন তাঁকে কিভাবে যেন মনে আর মনে।

এভাবেই বুঝি দরজায় ভালোবাসার কড়া নাড়ে। আর এভাবেই সাহস হয়েছিল একটু একটু চোখে চোখ রাখার একটু একটু করে দিনে কয়েকবার ক্লাসের ফাঁকে অথবা ক্যান্টিনের গরম চায়ের আড্ডায় জিভ পুড়ে শুধু একবার তাঁকে দেখার। কোন একদিন কথা হল কিছুটা , অতঃপর হেঁটে গেলাম আরও কিছুদূর অতঃপর হাতটা বাড়িয়ে দিলাম সেই হাত বাড়িয়ে দেওয়াটা নিশ্চয়ই অস্বাভাবিক ছিল না ! অস্বাভাবিক ছিল সেই হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পরের সময়গুলো, অস্বাভাবিক ভালোলাগা অস্বাভাবিক কষ্টবোধ আর সব শেষে অস্বাভাবিক শূন্যতা আর পূর্ণতা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।