সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল কে এই পান্না? সে কি সুন্দরি লাস্যময়ি কোন ষোড়ষি? যাকে অনেক আগ থেকেই সাবধান করে দেয়া হচ্ছে? অথবা হুমকি? ভাবছেন ইভ টিজিং এ নেমেছি? সেও গুড়ে বালি !
আমাদের দেশের সন্ত্রাসি কার্যক্রম কেন বন্ধ হয় না জানেন তো? কারণ তাদেরকে ক্ষমতাসীন সরকার ( সে যে দলেরই হোক না কেন) প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকে।
তা দুধ কলা দিয়ে যতই পোষা হোক না কেন, সাপ তো ছোবল দেবেই।
আওয়ামি লিগের এক এমপি (ঢাকা জেলার) ময়েজউদ্দিনকে খুন করেছিল তারই হাতে গড়া সন্ত্রাসি আযম। তবে আযমও বাচতে পারেনি। তার ফাসি হয়েছিল।
সে অনেক বছর আগের কথা।
এরকম আরো উদাহারণ দিয়ে লিস্টি বাড়িয়ে কি লাভ? তাতে সমস্যার তো সমাধান হবে না।
শুধু রাজনীতিবিদদের দোষ দিয়েও লাভ নেই।
আচ্ছা এমন একটি পেশার নাম বলুন দেখি, যাদের আইন লংঘনকারিদের দিয়েই রুটি রুজির সংস্থান করতে হয়।
জানি, প্রথমেই আপনার মনে পুলিশের নাম মুখে আসবে।
ভুল।
তিনারা হলেন উকিল।
এমন একটা বিশ্ব কল্পণা করুন তো যেখানে আইনের খেলাপকারি কেউ নেই।
কোন পেশার লোকজন ধনে প্রাণে মারা যাবে?
জ্বি ! ঠিকই ধরেছেন। ইনারা উকিল।
দেশে তো মামলা খাবার ভয়ে কেউ এই উকিল বাবুদের নিয়ে কিচ্ছু বলে না। পশ্চিমা বিশ্বের এই পেশাটিকে বলা হয় নেসেসারি ইভিল। এদের নিয়ে রম্য কথা বা কার্টুনের ছড়াছড়ি।
আমাদের দেশে সবাইকে নিয়েই তো কার্টুন আকা হয়েছে। বাদ শুধু এই পেশার লোকজন।
ফৌজদারির কথা পরে আসছি।
এমন দিনও ছিল যে, দেওয়ানি মামলায় কয়েক বংশ পার হয়ে যাবার পর তবেই মামলার রায় হয়েছিল। এমনও দেখা গেছে উকিল বাবুদের টাকার খাই মেটাতে সম্পত্তির মুল্যের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমান ব্যয় হয়ে গিয়েছে। এর পরেও রায় হয়নি। আবার এমনও আছে, যে উকিলবাবুদের টাকার খাই মেটাতে এক মামলায় খরচ মেটাতেই মানুষকে বাকি সম্পত্তি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যেতে হয়েছে।
আর ফৌজদারি মামলায়? বেশ শক্ত পোক্ত পরিমানে টাকা ঢালতে পারলেও অন্তত চটির জুতা ক্ষয় হবার পরেই তবে নিস্কৃতি।
তবে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সমর্থন + মোটা অর্থ ব্যয় + নামকরা সন্ত্রাসি হলে, জামিন একেবারে পানি ভাত। জামিন নামের ব্যাবস্থাটি এখন সন্ত্রাসিদের চটজলদি মুক্ত করে আবারও অপরাধ সংঘটনের হাতিয়ার হয়ে গিয়েছে।
নিজের হাতে বানানো ফ্রাঙ্কেন্টাইন বুকে ভারি পাথর হয়ে বসার কারণে গত বিএনপি সরকারের আমলেই সেনাবাহিনীকে দিয়ে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। যাতে নির্মুল হওয়াদের প্রায় সবাই ( দুই একটা ব্যাতিক্র থাকলে থাকতেও পারে) ছিল চিহ্নিত সন্ত্রাসি।
এদেরকে উকিল বাবুদের টাকা বানানোর উপলক্ষ না বানিয়ে সরাসরি বিধাতার আদালতে পাঠানো হয়েছিল।
দেশবাদি তখন হাপ ছেড়ে বেচেছিল। এবং এই অভিযানের প্রতি তাদের পুর্ণ সমর্থন ছিল। কারণ এই উ ল বাবুদের "কর্মতৎপড়তায়" সন্ত্রাসিরা জামিনে মুক্ত হয়ে আরো বেশি সন্ত্রাসে লিপ্ত হতো। এমন কি মামলার বাদিকেও খুন করে ফেলা হতো।
যদিও এদের প্রায় সবাই ছিল বিএনপির সন্ত্রাসি ক্যাডার। কিন্তু এদের জন্য বঙ্গ আপার কি কান্না ! সেই অশ্রু জলে ধানমন্ডি লেকের পানি প্রায় কয়েক ইঞ্চি বেড়ে যাওয়াও বিচিত্র নয়।
তখন বঙ্গ আপা ছিলেন বিরোধী দলীয় নেত্রি। দূরে বসেই তিনি মানবাধিকারের বুলি কপচিয়ে কুম্ভিরাশ্রু বর্ষন করতেন। ক্ষমতায় আসলেই তিনি র্যাব ভেঙ্গে দিবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ক্ষমতায় এসে র্যাব ভেঙ্গে দেয়া তো দুর, উলটো ছাত্রলিগের ভুতপুর্ব সন্ত্রাসিদের র্যাবে নিয়োগ দিয়ে এটাকে বিরোধী দলের নেতা নেত্রিদের হত্যা নির্যাতন এবং গুমের হাতিয়ার বানিয়েছেন।
অপারেশন ক্লিন হার্টের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও সমর্থনেরর কারনে সে সময় বিএনপি সরকার দায়মুক্তি বিল পাশ করেছিল।
বিএনপির অনেক সিদ্ধান্তই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে উলটে দিলেও, সেই দায়মুক্তি বিল নিয়ে কিছু বলেওনি , করেওনি।
তাই উকিল বাবুরা প্রমাদ গণা শুরু করলেন। হায় হায় হায় ! এভাবে উকিলের চক্কর ছাড়াই যদি সন্ত্রাসিরা একেবারে উপরে যেতে থাকে, তাহলে তো বউ পোলাপান নিয়ে চর্ব চোষ্য লেহ্য পেয় ছাড়াই জীবন কাটাতে হবে।
আমার মুরুব্বিরা বলতেন একশটা শয়তান মরলে নাকি একটা উকিল পয়দা হয়।
কথাটার যথার্থতার প্রমানে দেখলাম,
" ৯ জানুয়ারি২০০৩ পর্যন্ত ‘অপারেশন ক্লিনহার্টে’ অংশ নেয়া সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যদের দায়মুক্তি আইন কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
বিদায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মানবাধিকার ও আইনি সহায়তা বিষয়ক কমিটির প্রধান জেড আই খান পান্নার রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ আজ এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে ওই সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট "।
তথ্য সুত্র ঃ Click This Link
বিদায় হবার আগেও শয়তানি কমেনি।
আর বড় হুজুরদের কথা কি বলবো। চুলের চেয়েও চিকন ইনাদের আত্মসম্মানবোধ। সামান্য কিছু বললেই উনাদের মানহানি হয়। তবে ত্রাণ তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ নিলে অবশ্য তাদের মানের মানদন্ডের কোন বদল হয় না।
তবে হ্যা।
এটা মানতেই হবে যে, উকিল ছাড়া জজ সাহেবদেরও অবস্থাও তো তথৈবচ।
উপরের পান্না সাহেবের রিট আবেদন মোতাবেক "ক্ষতিগ্রস্থদের" ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপুরণের জন্য তহবিলও গঠনের কথা বলা হয়েছে।
ভালো ভালো। "ক্ষতিগ্রস্থরা সাধারণ নিরীহ পাব্লিকের টাকা পয়সা লুট করে যে ক্ষতি করেছে, তার ক্ষতিপুরণের ব্যাবস্থাটা কে করবে শুনি?
টাকা পয়সার কথা না হয় বাদ দিলাম। আলোচ্য ক্ষতিগ্রস্থরা যে পরিবারের বাবা ভাই ছেলেকে খুন করেছে, যে কন্যা জায়া জননির সম্ভ্রম লুটে নিয়েছে তার ক্ষতিপুরণ কে দিবে?
(যে ক্ষতি অপরিসীম তার ক্ষতি পুরণের একটাই সান্তনা।
সেই অপরাধীদের শ্বাস নেবার অধিকার কেড়ে নেয়া। )
আর এই একশো কোটি টাকার তহবিল আসবে কোত্থেকে? সরকার কি টাকার গাছ বুনেছে? নাকি জনগণের টাকা রাখার যায়গা নেই?
এই টাকা তো আসবে তাদের রক্ত জল করা পরিশ্রমে, যারা দিন নেই রাত নেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করে যাচ্ছে।
হ্যা্ আমি সেই বোনদের কথা বলছি, যারা গার্মেন্টসে কাজ করেন। আমি সেই ভাইদের কথা বলছি, যারা প্রতিকুল পরিবেশে শত কস্টের মাঝেও বিদেশে কাজ করে অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন।
মহামান্য আদালতের কি উচিত ছিল না, যাদের টাকায় তহবিল বানানোর হতে পারে, আগে তাদের মতামত চাওয়া?
নাকি রাজনীতিবিদদের মত তারাও ভেবেছেন, জনগণ? সে আবার কোন * টের *ল?
ধরে নিলাম ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হলো।
সেই টাকা উঠাতে "ক্ষতিগ্রস্থদের" আত্মিয় স্বজনকে কার কাছে ধর্ণা দিতে হবে?
এই তো বুঝে ফেলেছেন।
উকিল বাবুদের ইনকামের আরেকটা রাস্তা বানানো, অথবা সোজা ভাষায় আরো বাড়তি ইনকামের ব্যাবস্থার জন্যই এই রিট।
মানবাধিকার-টিকার এই সব লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই না।
তা পান্না ভাই। আপনি তো রিট করেই খালাস ! এখন যদি সত্যি সেটা বাস্তবে পরিণত হয়, তাহলে কি হবে ভাবতে পেরেছেন?
আপনি তো ভবিষ্যতে কবজি ঢুবিয়ে ঘি খাবার স্বপ্নে অন্ধ হয়ে গিয়েছেন।
তাই আপনার অন্ধত্ব দুর করার ( সাধার মানুষকে সচেতন করার) জন্য এই অধমকেই দুটি কথা বলতে হচ্ছে।
এই রিট বাস্তব হলে, সন্ত্রাসিদের জন্য স্বর্গের দুয়ার খুলে যাবে। অনেকটা লাইফ ইন্সুরেন্সের মতই। মরলেও বৌ বাচ্চা বা পরিবার অনেকগুলি টাকা পাবে, এই নিশ্চয়তায় তারা তাদের সন্ত্রাস খুন নির্যাতন এবং ধর্ষনের পরিমান বাড়িয়ে দিবে।
আর আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর পক্ষ্যেও শক্ত অবস্থান নেয়া দুরহ হয়ে পড়বে।
কে চাইবে যেচে পড়ে নিজের চাকরি হারাতে বা জেলে থাকতে?
তাই তখন তারা একান্ত বাধ্যগতের মতই অপরাধীদের ধরে উকিল বাবুদের টাকা বানানোর মেশিনে পুরতে বাধ্য হবে।
যখন পান্না বাবুর নিজে বা তার পুত্র পিতা ভাই খুন হবে, বা পরিবারের স্ত্রীলোকেরা সম্ভ্রমহানির শিকার হবে, তখন কিন্ত শত আফসোসেও কাজ হবে না।
তিনি যদি ভেবে থাকেন, তিনি আইনের লোক বলে সন্ত্রাসের হাত থেকে বাচতে পারবেন, তাহলে বলতে হয় তিনি বাস্তবতা থেকে বহু দূরে অবস্থান করছেন।
সন্ত্রাস মুখ চিনে চিনে কারো উপর ঝাপিয়ে পড়ে না।
অনেক সুশিল বলবেন, তাহলে কি জঙ্গলের আইন চালু হবে?
আমার উত্তর হ্যা।
যতদিন বাংলাদেশের অন্তত অর্ধেক মানুষের মধ্যে নাগরিক দায়িত্ব সমন্ধে সচেতনা না আসবে, যতদিন টাকার গরমে আইনকে পকেটে রেখে যা খুশি করার লাইসেন্সের ইতি না ঘটবে, ততদিন সন্ত্রাসিদের সরাসরি বিধাতার আদালতে পাঠানোটাই হবে সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত এবং জনগণের আস্থার কাজ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।