আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সৃষ্টিকর্তা,একটি অন্যরকম ভাবনা ও জান্নাত জাহান্নাম প্রসঙ্গ

হৃদয়ে আমার “একাত্তর” স্বপ্নে দেখি রঙিন ভোর! স্রষ্টা কিংবা ধর্মে বিশ্বাসীগণ প্রায়শই এমন কিছু প্রশ্ন কিংবা জিজ্ঞাসার মুখোমুখি হন যা কিনা তাদেরকে যথেষ্ট বিব্রত এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে আতঙ্কিতও করে তোলে ! কেননা, অনেক ক্ষেত্রে এ ধরণের প্রশ্নের উদ্রেক ঘটা বা এসকল জিজ্ঞাসা মনে বেশিক্ষণ ঠাই দেওয়া মানেই ভয়াবহ অন্যায় বা অপরাধের শামিল ! ধর্মগ্রন্থে অবশ্য ঠিক এমনটি বলা আছে । উল্লেখ্য যে, স্রষ্টা কিংবা ধর্মের কোন বিষয় সম্পর্কে বিন্দু মাত্র সংশয় কিংবা সন্দেহের কোন অনুমতি বা সমর্থন ধর্ম গ্রন্থে নেই ! এবার মূল বিষয়ে আসা যাক । এখানে ইসলাম ধর্মের কিছু মৌলিক আকিদা বা ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে কিছুটা দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে । ইসলামী বিশ্বাস মতে, মহান আল্লাহ্‌ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁরই ইবাদত করার উদ্দেশ্যে । মানুষ ছাড়াও আরেকটি সৃষ্টি রয়েছে পবিত্র কুরআনে যাকে জীন নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

যাইহোক, ইসলামী বিশ্বাস মতে একমাত্র মানুষ এবং জীন নামক এই সৃষ্টি দুটিকে স্বাধীন ইচ্ছা শক্তি দেয়া হয়েছে । যার দরুন এই সৃষ্টিদ্বয় শেষ বিচারের দিন হিসাবনিকাশ তথা জবাবদিহিতার মুখোমুখি হবে । শেষ বিচারের দিন প্রত্যেককে তার নিজ নিজ কর্মের প্রতিফল দেয়া হবে । সেই হিসেবে পাপীকে তার কর্মের প্রতিদান স্বরূপ দোজখ বা জাহান্নাম আর পুণ্যবানকে তার প্রতিদান স্বরূপ স্বর্গ বা বেহেশত প্রদান করা হবে । পবিত্র কুরআনের প্রচুর আয়াত এবং সহিহ হাদিসের অনেক যায়গায় স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যে, জান্নাত ও জাহান্নাম হচ্ছে চিরস্থায়ী বসবাসের স্থান ।

অর্থাৎ জান্নাত এবং জাহান্নাম অনন্ত কাল ধরে থাকবে । সেখানকার বাসিন্দারাও অনন্ত কাল ধরে সেখানেই থাকবে । তাদের আর কোন ধ্বংস, ক্ষয় বা মৃত্যু নেই ! এ এমনি এক অবস্থা, এমনি এক পরিস্থিতি যার কোন উপমা নেই, যার কোন ব্যাখ্যা নেই । এর অসীমতা বা স্থায়িত্ব সম্পর্কে হয়তোবা কিছুটা অনুভব করা যায় মাত্র । কিন্তু মানব জ্ঞান দিয়ে এর কোন কূলকিনারা করা যায় না হয়তোবা ! নাস্তিকবাদি দর্শনে এই মহাবিশ্বকে অসীম বলা হয়েছে ।

বস্তুকে স্বয়ম্ভু এবং আদিম রূপে দেখানো হয়েছে । সেই হিসেবে নাস্তিক ধর্মে বস্তুই চূড়ান্ত হিসেবে স্বীকৃত । যাইহোক, নাস্তিকতা আজকের আলচনার বিষবস্তু না হওয়াতে আপাতত পূর্বের আলোচনায় ফিরে যাচ্ছি । ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, স্রষ্টা তাঁর আপন ইচ্ছা শক্তিবলে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কে অস্তিত্বে নিয়ে আসেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি জান্নাত এবং জাহান্নামকে চিরকাল ব্যাপী (?)বিরাজমান রাখবেন ।

কালের এই সময়টাকে অসীমতার চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছে । এখন প্রশ্ন হোল, এই অসীম কালের কি কোন সীমারেখা নেই ? নেই কোন সমাপ্তি ? অথচ, ইসলাম ধর্মের স্বীকৃত বিশ্বাস অনুযায়ী একমাত্র মহান স্রষ্টাই চিরস্থায়ী , চিরঞ্জীবী । অনন্ত কাল ব্যাপী জান্নাত, জাহান্নাম তথা সৃষ্টির এই ধারাবাহিক লিলা বিরাজমান থাকার আসল হেতু কি ? কি বা এর পেছনে লুকায়িত রহস্য ? এমনটা কি হবার সম্ভাবনা মোটেও নেই যে, মহান স্রষ্টা কালের এই অসীম ধারাটিকে তাঁর আপন ক্ষমতা এবং ইচ্ছায় মহা সমাপ্তির দিকে নিয়ে গেলেন ? বেঁধে দিলেন সীমানার বাঁধনে ? বেহেশত, দোজখ , মানুষ , জীন , ফেরেস্তা, জানা – অজানা সকল সৃষ্টিকে বিলীন করে দিলেন চিরতরে ! একমাত্র অসীম হয়ে রইলেন তিনি নিজে । চিরকাল শুধু তাঁরই অস্তিত্ব বিরাজমান রইল । যেমনটা তিনি আগেও ছিলেন ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।