মনের জানালা কতদিন পরে দেখা তাই না?
-হুম, অনেকদিন তা তো পাঁচ বছর হবেই।
এতদিনে কি একবারও আমার কোন খোঁজ নিতে ইচ্ছে করে নি?
-করে নি যে তা নয়, কিন্তু তুমি তো জান, আমার ভিতর ইগো প্রবলেম অনেক বেশি।
কি করছো এখন আজকাল?
-এই তো একটা ব্যাঙ্কে জয়েন করেছি। তুমি?
দেখে কি মনে হয়?
-কিছুই মনে হচ্ছে না।
থাক, কিছু মনে না হলেই ভাল।
তারপর যাচ্ছ কোথায়?
-চট্টগ্রাম যাবো। আগামী মাস থেকে ওখানেই বদলি হয়েছি।
তোমার ট্রেন কয়টায়?
-রাত এগারটায়। তোমার?
ম্লান হাসি হাসল দিপা। আমারো মনে হয় এগারোটায়।
-ও আচ্ছা।
তূর্ণা এখনো এসে পৌঁছায় নি। এতক্ষণ কি করবে ভেবে পাচ্ছে না অয়ন। যে ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে আসবে সেটাই আবার চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। প্লাটফর্মের মেয়ে কণ্ঠে বলে উঠলো "আরো ঘণ্টা খানিক নাকি লাগবে"।
আনুমানিক সাড়ে এগারোটার দিকে ট্রেন এসে পৌঁছালো। ট্রেন ইঞ্জিন বদল হবে, পরিষ্কার করবে। আরো ঘণ্টা খানিক তো লাগবে। ট্রেন থেকে যাত্রীরা নামতে শুরু করেছে।
দিপাকে উৎকণ্ঠা দেখালো।
হাঁটা শুরু করলো সে। "ঘ" বগি খুঁজছে সে। অয়নও কি মনে করে তার সাথে হাঁটা শুরু করলো "ঘ" বগি খুঁজতে। চিন্তা করতে শুরু করলো সে। তার টিকেটের নাম্বারও তো "ঘ" বগির।
২৩ নম্বর সিট।
"ঘ" বগির কাছে গিয়ে পৌঁছালো তারা।
একি তুমি? তুমি এত রাতে এখানে এলে কেনো?
-বারে তোমাকে নিতে আসলাম। চমকে দেবার জন্য।
তো একটা ফোন কল করা যেত না , তুমি আসছো?
-তুমি অবাক হয়েছো তাই না? অবাক করার জন্যই তো এলাম।
আর কমলাপুরের পাশেই তো আমার খালার বাসা। ওখানে এসেছি, তোমাকে এসএমএস করেছিলাম, ভুলে গেছো?
- এই আমার প্যাকেটগুলো একটু ধরনা? ট্রেন এর দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটি তার হাত বাড়িয়ে দেয় মিঃ রিফাতের দিকে। বাড়িয়ে দেয়া হাত দেখে নিজের ভিতর এক ধরণের শুন্যতা অনুভব করে সে। চোখ মুখ ভয়ার্ত হয়ে আসে তার।
অন্য মনস্ক দেখালো মিঃ রিফাত কে।
কি ভেবে যেন মনে মনে গালা গালি করলো। এর কিছু পরেই ভয়ঙ্কর একটি কান্ড ঘটে গেল দিপার সামনে। যার জন্য সে একদম প্রস্তুত ছিল না।
ঘণ্টা খানিক পর। নিজের সিটে বসে অয়ন।
আর কিছু পরেই ট্রেন ছেড়ে দিবে। সব কিছু তার কাছে যেন এলোমেলো লাগছে। দিপার কথাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। সে সাথে মায়া আর অদ্ভুত এক দুঃখ অনুভব করছে সে তার জন্য। সে ভেবেছিল ভাল আছে সে।
কিন্ত. .। .। যখন অয়ন হিসাব কষছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ভুলগুলো কি ছিল তখনি একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পায় সে।
- আমাকে তোমার সাথে নিবে? পাশ ফিরে তাকায় অয়ন। না সে ভুল দেখছে না।
চোখ ছল ছল করা মেয়েটিকে তো ঠিক দিপার মতই লাগছে।
ঝিক ঝিক করে ট্রেন চলছে। ঘুমিয়ে পড়েছে দিপা। তার ঘুমন্ত মুখটি দেখে অসম্ভব মায়া হল অয়নের। নিজের মুঠো ফোনটির দিকে কিছুক্ষণ পর পর তাকিয়ে দেখে চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে তার।
ওই তো আলোকিত স্ক্রিনে রিয়ার এসএমএস দেখাচ্ছে,
" চট্টগ্রামে আসো তুমি, প্লাটফর্মে তোমার জন্য ভয়ঙ্কর কিছু অপেক্ষা করছে, হি হি "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।