স্থান, কাল, পরিবেশ ভেদে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের স্থানান্তরের কারণে এবং তাদের আধিপত্য বিস্তারের কারণে একই অঞ্চলের ভাষা অন্য অঞ্চলেও প্রাধান্য তথা মাশহুবিয়াত লাভ করে থাকে। যা মূলত একই বিষয় ও বস্তুকে বুঝিয়ে থাকে।
যেমন, উল্লিখিত নামসমূহ দ্বারা ليلة النصف من شعبان বা শা’বানের ১৫ তারিখ রাতকে বুঝানো হয়। একে ফারসীতে ‘শবে বরাত’ বাংলায় ‘মুক্তির রাত’ বা ‘ভাগ্য রজনী’ বলে থাকে। আর এই ‘শবে বরাত’ শব্দটি যদিও বাহ্যত আরবী ও ফারসীর সমন্বয়ে গঠিত।
তবুও তা ফারসী ভাষা। কেননা, ফারসী ভাষা মূলত আরবী ও ফারসীর সংমিশ্রণে গঠিত। তদ্রুপ উর্দূ ভাষাও মূলত আরবী উর্দূ এর সংমিশ্রণে গঠিত।
যেমন,
افتاب الدين عالمگیر شاه مخدوم شاه كبير. شاه عالم شاه صوفى. فول صراط. غول نور. شب معراد. اب حياة. قدرة خدا. اب زمزم. شب قدر
অনুরূপভাবে شب براءة শব্দটিও আরবী ফারসীর সমন্বয়ে গঠিত। এরূপ আরো কোটি কোটি শব্দ রয়েছে।
যা দ্বারা অসংখ্য অগণিত বিশ্বখ্যাত কিতাবও রচিত হয়েছে।
তবে আমাদের দেশে ফারসী ও আরবী ভাষার প্রচলন এত ব্যাপক কেন?
এ প্রশ্নের জবাব হচ্ছে, এদেশের মানুষ ছিল বিভিন্ন বাতিল ধর্মের করাগ্রাসে নিমজ্জিত। আরবী ও ফারসী দেশ থেকে অসংখ্য আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইসলামের মর্মবাণী এদেশের মানুষদের মাঝে প্রচার করে তাদেরকে কালিমা শরীফ পড়িয়ে মুসলমান বানিয়ে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেন। ফলে এদেশের মানুষ মুসলমানের মহা সনদ লাভ করেন। বিশেষ করে ফারসী ভাষাভাষী আওলিয়ায়ে কিরামগণ উনাদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য।
উনাদের ছোহবত ও কুরবতের কারণে তাদের ফারসী ভাষাগুলো আমাদের কাছে ক্রিয়া করে মাশহূরিয়াত লাভ করেছে। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে ‘শবে বরাত। ’
উল্লেখ্য, এক ভাষায় অপর ভাষার শব্দের মিশ্রণ মূলত একটি অনিবার্য ঐতিহ্য। প্রায় সব ভাষায়ই এর নিদর্শন রয়েছে। আমাদের বাংলা ভাষায়ও এর নিদর্শন অনেক।
এবং এটি প্রায় সব ভাষারই প্রকৃতি। ব্যাকরণের ভাষায় একে বলা হয় মিশ্র শব্দ। প্রতি ভাষায়ই মিশ্র শব্দের ব্যবহার রয়েছে।
কাজেই যারা বলবে যে, অর্ধেক আরবী আর অর্ধেক ফারসী ভাষার শব্দের মিশ্রন গ্রহণযোগ্য নয়। তারা মূলত শুধু ইসলাম সম্পর্কেই অজ্ঞ নয় বরং দুনিয়াবী জ্ঞানের দিক থেকেও তারা প্রাইমারি স্তরের জ্ঞানও রাখে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।