দেশের বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ অথবা সীমিত করার জন্য সরকার ১৯৮৬ সালের মন্ত্রীসভা বৈঠকের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।
গতমাসে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠানো একটি চিঠিতে মন্ত্রিসভা-বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বাস্তবায়নাধীন সাম্প্রতিক কয়েকটি সিদ্ধান্তের সাথে ৮ই ডিসেম্বর ১৯৮৬’র একটি সিদ্ধান্ত যুক্ত করে দিয়ে বলেছে ওটাও বাস্তবায়নাধীন।
এরশাদ সরকারের আমলে নেয়া ওই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার অনুকুল পরিবেশ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে ইহাদের রাজনীতি মুক্ত করা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর কোন অঙ্গদল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকবে কিনা, ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের কোন [বাইরের রাজনৈতিক দলের সহিত সম্পর্কিত না হইয়া] রাজনৈতিক দল তাহাদের ক্যাম্পাসে গঠন ও রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাইতে পারিবে কিনা সে বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাহায্যে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষেদের বিবেচনার জন্য পেশ করিবে।
বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকবৃন্দ রাজনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে তাহাদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি করিতে পারিবেন কিনা সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট সুপারিশ উল্লেখিত প্রতিবেদনে থাকিতে হইবে। ”
শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র ডেইলিএডুকেশনডটনেটকে জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহে তারা বেশ কয়েকটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। গতকাল (বুধবার) শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সাথে সন্ধ্যায় বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে আরও দুজন সিনিয়র মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
হঠাৎ কেন ৮৬ সালের সিদ্ধান্ত সামনে নিয়ে আনা হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘উপরের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে তারা কাজ করছেন।
’
উল্লেখ্য, বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর, বুয়েট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা কারনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এছাড়া ডাকসু নির্বাচনের দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ভিসি অপসারণের দাবীতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত হয়েছে।
সূত্র: http://dailyeducation.net/?p=801
যে যুক্তিতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের কথা বলা হচ্ছে, সে যুক্তিতে তাহলে আওয়ামিলীগ বিএনপি জামাতের রাজনীতি আগে বন্ধ করে দিতে হয় কারণ এদের নষ্ট রাজনীতির কারণেই ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতি নষ্ট হয়েছে। মূল রাজনীতি নষ্ট থাকলে ছাত্র শিক্ষক রাজনীতি যতই বন্ধ করা হউক, যুব সংগঠন, তরুণ সংগঠন, যুবদল, যুব লীগ ইত্যাদি নানান ভাবেই তরুণদের শক্তিকে এদের ক্ষমতার রাজনীতি ও লুটপাটের কাজে লাগানো হবে।
মাঝখানে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের নামে ছাত্র অধিকারের রাজনীতি মার খাবে, ক্যাম্পাসে শাসক দলের ভিসি'রা ইচ্ছা মত লুটপাট করতে পারবে, বেসরকারি করণ আর বানিজ্যিকীকরণ চালাতে পারবে।
আমি ছাত্ররাজনীতি বন্ধের তৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।