আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যা বলেন ইনি আর উনি

লিখে খাই, সবার ভাল চাই কথা হচ্ছিল সংবিধান সংশোধন নিয়ে। সংসদে দাঁড়িয়ে মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন দাবি জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে এখনই তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি সংবিধান সংশোধন নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। বলেছেন, আমরা ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ মাস আগে নির্বাচন হবে।

আমরা এমপি হয়ে নির্বাচনী মাঠে লড়াই করবো। অন্যরা এমপি না হয়ে মাঠে থাকবেন। তা হতে পারে না। এতে লেভেল প্লেইং ফিল্ড রইলো কোথায়? তিনি আবার সংবিধান সংশোধন করার পক্ষে কথা বলেন। পরদিনই দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, এই সংবিধানে হাত দেয়া যাবে না।

তিনি আমেরিকার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সেখানে প্রেসিডেন্ট ওবামা তার পদে থেকেই তো নির্বাচন করছেন। কই আমেরিকায় তো লেভেল প্লেইং ফিল্ডের প্রশ্ন ওঠে না। প্রশ্ন হলো, আসলেই কি সংবিধানে হাত দেয়া যাবে না? দাদার সঙ্গে এ নিয়েই কথা হচ্ছিল। দাদাকে সংবিধান প্রসঙ্গে বলতেই তিনি বললেন, শোন, দেশ এখন দু’ধারায় বিভক্ত। জোলা আর বুজক্কর।

আমজনতা, যারা ভোট দেন, যাদের ট্যাক্সের টাকায় প্রশাসনযন্ত্র চলে তারা হলেন জোলা। আর যারা নির্বাচিত হন, প্রশাসনে ছড়ি ঘোরান তারা হলেন বুজক্কর। তারা যা বলবেন তা-ই বেদবাক্য। তাদের আদেশ-নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। অন্যথায় আদেশ অমান্য করার দায়ে দণ্ডিত হতে হবে।

এমনটাই চলছে, চলবে। এতে দোষের কিছু নেই। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে এ পর্যন্ত তা-ই হয়ে এসেছে। মাঝখানে আমরা যারা জোলা তারা শুধু রাজপথে দাঁড়িয়ে চিৎকার করি। গলা ভাঙি।

কাজের কাজ কিছুই হয় না। বুজক্কর মানে তারা হলেন মহাজ্ঞানী। তাদের প্রতিটি কথাই মহাবাণী। এজন্য তারা যা বলবেন, ঠিক বা বেঠিক সবই তোকে মানতে হবে। আর না মানলেও তাদের কিছু যায়-আসে না।

কারণ, তোরা হলি জোলা। দাদা জোলা মানে কি? আরে বোকা। তুই তো জোলার মতই প্রশ্ন করেছিস। সেই জোলার গল্পটি তোকে বলি, তাহলে যদি কিছুটা বুঝিস। এক জোলা তার মা’র কাছে চালভাজা খেতে চেয়েছে।

মা-ও গরম গরম ভেজে আনে চাল। ছেলেকে বলে, হাত পাত। চালভাজা দেবো। এ সময় ছেলে দুষ্টুমি করছিল। ঘরের মাঝের খুঁটি ধরে ঘুরছিল।

মা চালভাজা দেয়ার কথা বলতেই ঘরের খুঁটির দু’পাশ দিয়ে দু’হাত বাড়িয়ে দেয়। মা-ও ছেলের হাতে চালভাজা দিয়ে চলে যায়। কিন্তু হাতে চালভাজা নিয়ে ছেলে পড়েছে বেকায়দায়। মাঝখানে খুঁটি, চালভাজা খাবে কি করে? আবার হাত ছেড়ে দিলে চালভাজা মাটিতে পড়ে যাবে। বড় বেকায়দায় পড়েছে জোলা।

মাকে ডাকে। মা-ও এসে অনেক চেষ্টা করে চালভাজাসহ হাত সড়ানোর জন্য। কিন্তু না! পারছে না। বাড়াবাড়ি করলে চাল পড়ে যাবে। তাহলে ছেলে যে শখ করে চালভাজা খেতে চেয়েছে সেই শখই মাটি হয়ে যাবে।

শেষমেশ ডাকা হলো প্রতিবেশীদের বুজক্করদের। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলো ঘরের চালা ভেঙে তারপর মই এনে ছেলেকে উপর দিয়ে বের করতে হবে। তাহলে চালভাজা পড়বে না। হাতেই থাকবে। সবার সিদ্ধান্তে তা-ই করা হলো।

বুঝলি জোলা কি? ছিঃ দাদা। এত কিছুর দরকার কি ছিল? একটা প্লেট এনে চালভাজাগুলো রেখে হাত ছাড়িয়ে নিলেই হতো। বোকার হাড্ডি কোথাকার। দাদা বললেন, এই তো জোলার মানে বুঝে গেছিস্ তুই। ওই জোলার দশাই এখন আমাদের।

বুজক্কররা আমাদের যেভাবে চালাবেন সেভাবেই চলতে হবে। এ কারণেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যখন বলেন, সংবিধানে হাত দেয়ার ক্ষমতা নেই সেটাও বিশ্বাস করি। আবার যখন রাশেদ খান মেনন বলেন, সংবিধান সংশোধন করতে হবেÑ সেটাও মেনে নেই। কারণ আমরা যে জোলা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।