সর্বত্রই দূর্নীতি এবং মানবিক মুল্যবোধের চুড়ান্ত অবক্ষয় আমাদের ধংশ করে দিচ্ছে......
অবশেষে ডলার সঙ্কটের কারণ খুঁজতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানি-রফতানির নামে কৌশলে ডলার পাচার করা হচ্ছে। এমন আশঙ্কা নিয়ে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে পাচারকারীদের চিহ্নিত করতে মাঠে নেমেছে। এসব বিষয় নিয়ে সব তফসিলি ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, পাচার হওয়ায় ক্যাশ ডলার, বিসি সেলিং এবং ইন্টারব্যাংক ডলারের দর আকাশচুম্বী হচ্ছে। কার্ব মার্কেটে প্রতিটি ডলারের দর ৮৪ থেকে ৮৫ টাকা, বিসি সেলিং ডলার ৮৩ থেকে ৮৪ টাকা এবং আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলার ৮২ থেকে ৮২ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, 'ডলার পাচারের খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। তবে কি পরিমাণ রফতানি মূল্য বিদেশে রয়েছে, কোন কোন ব্যাংক রফতানি মূল্য দেশে ফেরত আনছে না এবং কত বছর ধরে বকেয়া রয়েছে তা জানার জন্য সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী রফতানি মূল্য চার মাস বা ৪০ দিনের মধ্যে দেশে আনতে হয়।
কিন্তু কিছু কিছু ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা ফেরত আনছে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকগুলো যাতে রফতানি মূল্য দেশে ফেরত আনে সে জন্য ব্যাংকগুলোর নির্বাহীদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ডলার পাচারের ফলেই বাজারে ডলারের সঙ্কট। এর জন্য দায়ী অবৈধভাবে গড়ে ওঠা মানি চেঞ্জারগুলো। এতে যেমন দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারও মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি জেনেও কিছু করতে পারছে না।
আবার আশঙ্কা করা হচ্ছে, ব্যাংকিং চ্যানেলেও ডলার পাচার করা হচ্ছে। কারণ আমদানিকারকরা কম মূল্যে পণ্য আমদানি করে যদি বেশি মূল্য দেখায় (ওভার ইনভয়েসিং), সে ক্ষেত্রে ডলার পাচার করা হয়। আবার রফতানিকারকরা বেশি মূল্যের পণ্য কম মূল্যে (আন্ডার ইনভয়েসিং) দেখাতে পারেন। এতেও ডলার পাচার করা হতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করলেও নিজেদের কোনো দোষ নেই বলে তিনি জানান। কারণ বিষয়টি দেখার দায়িত্ব কাস্টমসের। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো হাত নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিলার ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিনই ডলার দিচ্ছে। তারপরও ডলারের অভাব রয়েছে কেন এবং ডলারের দাম কেন বাড়ছে তার হিসাব মেলাতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম বেঁধে দেওয়ায় ডলারের সঙ্কট রয়েছে এমন ব্যাংকগুলো তৃতীয় মুদ্রার মাধ্যমে ডলার কিনছে। এতে ডলার কিনতে তুলনামূলক বেশি টাকা খরচ হচ্ছে ব্যাংকগুলোর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকেই দেখা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে যেখানে প্রতি ডলারের দর ছিল ৭৯ টাকা ৪১ পয়সা, তা চলতি জুন মাসের শেষে এসে হয়েছে ৮০ টাকা ৭৫ পয়সা। আর চলতি জুলাই মাসের শুরুতেই তা আরও বেড়ে হয়েছে ৮১ টাকা ১৫ পয়সা। গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ডিসেম্বরের শেষে এসে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে গেছে।
আর ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জুন মাসের শেষে এসে ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হয়েছে প্রায় সাড়ে চার শতাংশ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।