আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেঘ বলেছে যাব যাব (শায়ান চৌধুরী অর্ণব)

যদিও তুমি ধ্রুবতারা তবুও আমি দিশেহারা পুরাই বস পাব্লিক। উপহার দিলেন পঞ্চম এ্যালবাম। বহুদিন আশায় ছিলাম আর ভাবতেছিলাম প্রিয় লোকটা এত অকৃতজ্ঞ ক্যান! এত আলতু ফালতু পোলাপাইন রবী সাহেবের গান রে ত্যানাত্যানা বানায় ফেলল আর অর্নব যার বাড়ি ছিল ছোট বেলা থেকেই শান্তি নিকেতনে, যে কিনা নিজে রবীসাহেবের পিয়ানো পাহারা দিত, এখন পর্যন্ত নিজে কোন রবীগিতি নিয়ে এ্যালবাম বের করলনা!!! হঠাত একদিন খবর পেলাম রবী গুনগুনে নাকি কি একটা বের করছে, এরপরে জানলাম, রবীন্দ্রসংগীত। যদিও অর্নবের ফিচারিং এ শাহানার একটা এ্যালবাম আছে, তারপরেও এইটা অর্নবের একক। অবশ্য দুইটা গান দুই মখিলা গাইছে।

শ্রাবন্তী আলী এবং ওয়ার্দা। তার মধ্যে শ্রাবন্তী আলীর টা ভালই খারাপ হইছে, আর ওয়ার্দা'র টা ভালই ভাল হইছে (নিজস্ব অভিমত) রবীন্দ্রসঙ্গীতের জন্য কোন লেখালেখি দরকার হয়নাই, সবই গুগল মামা দিয়া দিছে শুধু এই এ্যালবামে একটা ব্যাবসায়ীক মৌলিক গান আছে সেইটার লিরিক্স নিজে লিখতে হইছে। রুপার জলে নদীর স্রোতে, সোনার থালায় সকাল আসে। ইলশে গুড়ি কাচের চুড়ি, আকাষ জোড়া ইচ্ছে ঘুড়ি। বুকের ভেতর বহু দুরের পথ।

আমার রবী আমার সাথে, হাত ঘরেছি রোদ্র সাথে। এক মুহুর্ত আর একা নয়, নতুন ভোরে প্রতিদিনের জয়। কাঁশের বনে, রোদের গানে, ঐ দিগন্ত দীপ্তি মাখা। চোখের তারায়, রবীর কিরন, হাতের মুঠোয় নিজের জীবন। আমার দিন ফুরালো ব্যাকুল বাদলসাঁঝে গহন মেঘের নিবিড় ধারার মাঝে॥ বনের ছায়ায় জলছলছল সুরে হৃদয় আমার কানায় কানায় পূরে।

খনে খনে ওই গুরুগুরু তালে তালে গগনে গগনে গভীর মৃদঙ বাজে॥ কোন্‌ দূরের মানুষ যেন এল আজ কাছে, তিমির-আড়ালে নীরবে দাঁড়ায়ে আছে। বুকে দোলে তার বিরহব্যথার মালা গোপন-মিলন-অমৃতগন্ধ-ঢালা। মনে হয় তার চরণের ধ্বনি জানি-- হার মানি তার অজানা জনের সাজে॥ আধেক ঘুমে নয়ন চুমে স্বপন দিয়ে যায়। শ্রান্ত ভালে যূথীর মালে পরশে মৃদু বায়॥ বনের ছায়া মনের সাথি, বাসনা নাহি কিছু– পথের ধারে আসন পাতি, না চাহি ফিরে পিছু– বেণুর পাতা মিশায় গাথা নীরব ভাবনায়॥ মেঘের খেলা গগনতটে অলস লিপি-লিখা, সুদূর কোন্‌ স্মরণপটে জাগিল মরীচিকা। চৈত্রদিনে তপ্ত বেলা তৃণ-আঁচল পেতে শূন্যতলে গন্ধ-ভেলা ভাসায় বাতাসেতে– কপোত ডাকে মধূকশাখে বিজন বেদনায়॥ গানের সুরের আসনখানি পাতি পথের ধারে।

ওগো পথিক, তুমি এসে বসবে বারে বারে ॥ ঐ যে তোমার ভোরের পাখি নিত্য করে ডাকাডাকি, অরুণ-আলোর খেয়ায় যখন এস ঘাটের পারে, মোর প্রভাতীর গানখানিতে দাঁড়াও আমার দ্বারে ॥ আজ সকালে মেঘের ছায়া লুটিয়ে পড়ে বনে, জল ভরেছে ঐ গগনের নীল নয়নের কোণে। আজকে এলে নতুন বেশে তালের বনে মাঠের শেষে, অমনি চলে যেয়ো নাকো গোপনসঞ্চারে। দাঁড়িয়ো আমার মেঘলা গানের বাদল-অন্ধকারে ॥ ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান– তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান– আমার আপনহারা প্রাণ আমার বাঁধন-ছেঁড়া প্রাণ॥ তোমার অশোকে কিংশুকে অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে, তোমার ঝাউয়ের দোলে মর্মরিয়া ওঠে আমার দু:খরাতের গান॥ পূর্ণিমাসন্ধ্যায় তোমার রজনীগন্ধায় রূপসাগরের পারের পানে উদাসী মন ধায়। তোমার প্রজাপতির পাখা আমার আকাশ-চাওয়া মুগ্ধ চোখের রঙিন-স্বপন-মাখা। তোমার চাঁদের আলোয় মিলায় আমার দুঃখসুখের সকল অবসান॥ রাখো রাখো রে জীবনে জীবনবল্লভে, প্রাণমনে ধরি রাখো নিবিড় আনন্দবন্ধনে॥ আলো জ্বালো হৃদয়দীপে অতিনিভৃত অন্তরমাঝে, আকুলিয়া দাও প্রাণ গন্ধচন্দনে॥ মেঘ বলেছে ‘যাব যাব’, রাত বলেছে ‘যাই’, সাগর বলে ‘কূল মিলেছে–আমি তো আর নাই’॥ দুঃখ বলে ‘রইনু চুপে তাঁহার পায়ের চিহ্নরূপে’, আমি বলে ‘মিলাই আমি আর কিছু না চাই’॥ ভুবন বলে ‘তোমার তরে আছে বরণমালা’, গগন বলে ‘তোমার তরে লক্ষ প্রদীপ জ্বালা’।

প্রেম বলে যে ‘যুগে যুগে তোমার লাগি আছি জেগে’, মরণ বলে ‘আমি তোমার জীবনতরী বাই’॥ কোথা হতে বাজে প্রেমবেদনা রে ! ধীরে ধীরে বুঝি অন্ধকারঘন হৃদয়-অঙ্গনে আসে সখা মম॥ সকল দৈন্য তব দূর করো ওরে, জাগো সুখে ওরে প্রাণ। সকল প্রদীপ তব জ্বালো রে, জ্বালো রে– ডাকো আকুল স্বরে ‘এসো হে প্রিয়তম’॥ ধ্বনিল আহ্বান মধুর গম্ভীর প্রভাত-অম্বর-মাঝে, দিকে দিগন্তরে ভুবনমন্দিরে শান্তিসঙ্গীত বাজে॥ হেরো গো অন্তরে অরূপসুন্দরে, নিখিল সংসারে পরমবন্ধুরে, এসো আনন্দিত মিলন-অঙ্গনে শোভন মঙ্গল সাজে॥ কলুষ কল্মষ বিরোধ বিদ্বেষ হউক নির্মল, হউক নি:শেষ– চিত্তে হোক যত বিঘ্ন অপগত নিত্য কল্যাণকাজে। স্বর তরঙ্গিয়া গাও বিহঙ্গম, পূর্বপশ্চিমবন্ধুসঙ্গম– মৈত্রিবন্ধনপুণ্যমন্ত্র-পবিত্র বিশ্বসমাজে॥ প্রচণ্ড গর্জনে আসিল একি দুর্দিন– দারুণ ঘনঘটা, অবিরল অশনিতর্জন॥ ঘন ঘন দামিনী-ভুজঙ্গ-ক্ষত যামিনী, অম্বর করিছে অন্ধনয়নে অশ্রু-বরিষন॥ ছাড়ো রে শঙ্কা, জাগো ভীরু অলস, আনন্দে জাগাও অন্তরে শকতি। অকুন্ঠ আঁখি মেলে হেরো প্রশান্ত বিরাজিত মহাভয়-মহাসনে অপরূপ মৃত্যুঞ্জয়রূপে ভয়হরণ॥ শাঙনগগনে ঘোর ঘনঘটা, নিশীথযামিনী রে। কুঞ্জপথে, সখি, কৈসে যাওব অবলা কামিনী রে।

উন্মদ পবনে যমুনা তর্জিত, ঘন ঘন গর্জিত মেহ। দমকত বিদ্যুত, পথতরু লুন্ঠিত, থরহর কম্পিত দেহ ঘন ঘন রিম্ঝিম্ রিম্ঝিম্ রিম্ঝিম্ বরখত নীরদপুঞ্জ। শাল-পিয়ালে তাল-তমালে নিবিড়তিমিরময় কুঞ্জ। কহ রে সজনী, এ দুরুযোগে কুঞ্জে নিরদয় কান দারুণ বাঁশী কাহ বজায়ত সকরুণ রাধা নাম। মোতিম হারে বেশ বনা দে, সীঁথি লগা দে ভালে।

উরহি বিলুন্ঠিত লোল চিকুর মম বাঁধহ চম্পকমালে। গহন রয়নমে ন যাও, বালা, নওলকিশোরক পাশ। গরজে ঘন ঘন, বহু ডর পাওব, কহে ভানু তব দাস॥ আমি কান পেতে রই ও আমার আপন হৃদয়গহন-দ্বারে বারে বারে কোন্ গোপনবাসীর কান্নাহাসির গোপন কথা শুনিবারে– বারে বারে॥ ভ্রমর সেথা হয় বিবাগী নিভৃত নীল পদ্ম লাগি রে, কোন্ রাতের পাখি গায় একাকী সঙ্গীবিহীন অন্ধকারে বারে বারে॥ কে সে মোর কেই বা জানে, কিছু তার দেখি আভা। কিছু পাই অনুমানে, কিছু তার বুঝি না বা। মাঝে মাঝে তার বারতা আমার ভাষায় পায় কি কথা রে, ও সে আমায় জানি পাঠায় বাণী গানের তানে লুকিয়ে তারে বারে বারে॥ আনুশেহ আনাদিল (এখন বোধহয় ফুল ছড়ানোর পালা) একটা মন খারাপের মনে---- রোদ হয়ে যাও (কৃষ্ণকলি ইসলাম) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।