আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেষ বিদায়ের রকমফের !

আমাদের এই পৃথিবী বড়ই বৈচিত্রময়। এখানে বাস করে কয়েকশ কোটি মানুষ এবং তাদের একত্রিত করে রেখেছে কিছু দেশ বা জাতি গোষ্ঠী। এই পৃথিবীতে আমরা এসেছি কয়েক বছরের জন্য তারপর আবার আমাদের এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে চলে যাওয়ার রীতি কেমন হবে? হ্যা, আমাদের এই পৃথিবীতে দেশ, জাতি ও সমাজ ভেদে মানুষের শেষকৃত্যের রয়েছে নানান নিয়ম। কারো নিয়ম স্বাভাবিক আবার কারো নিয়ম বৈচিত্রময়।

অদ্ভুত সেরপারা - নেপাল ও ভুটান রাজ্য সংলগ্ন তিব্বত সীমান্ত এলাকায় বাস করে এক অদ্ভুত আদিবাসী। যার নাম সোরপা। তাদের সমাজে কারো মৃত্যু ঘটলে এরা এক ধরনের মন্ত্র পাঠ করে। এতে মৃতদেহের ভেতর থেকে আত্না মাথা দিয়ে বেরিয়ে যায় বলে তাদের বিশ্বাস। এরপর লাশটিকে বসানোর মতো করে বেঁধে রেখে তার সামনে বাতি জ্বালানো হয়।

সেই বাতির আলোয় লাশের চারদিকে বসে সবাই খাওয়া-দাওয়া করে। পরে লাশটিকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। আমুদে ফেন্টাসরা - আফ্রিকার ফেন্টাস গোত্রের কারো মৃত্যু হলে নাচ-গান এবং পান উৎসব শুরু হয়। গোত্রের লোকজন মৃত ব্যক্তির ঘরের চারদিকে বিচিত্রভঙ্গিতে নাচ-গান জুড়ে দেয়। সেইসঙ্গে মদ্যপান ও হুঁকো টানার ধুম পড়ে যায়।

নাচগানকারীরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে তাদের পেটপুরে কুকুরের মাংস খাওয়ানো হয়। উফ কি বীভৎস ! - ল্যাটিন আমেরিকার প্যারাগুয়েতে ‘আদ্দেগালু’ উপজাতীয়দের কেউ মারা গেলে তার আত্নীয় স্বজনরা লাশটি কেটে রান্না করে খায়। হাড়গুলো জমা করে কিছুদিন ফেলে রাখে, তারপর একদিন সেগুলো পুড়িয়ে তার ছাইগুলো সযত্নে রেখে দেয়। এরকম করলে প্রেতাত্না কোনো ক্ষতি করতে পারে না বলে তাদের বিশ্বাস। মৃত্যু যখন উৎসবে - পাপুয়া নিউগিনির দু’টি গোত্র ‘ভিটাইয়া’ ও ‘বেলালু’-এর লোকজনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকে।

এক গোত্রে অন্য গোত্রের কাউকে খুন করতে পারলে হত্যাকারী গোত্রের লোকজন আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে। পুরুষরা পাখির পালক মাথায় দিয়ে এবং মেয়েরা মাথায় বনফুল গুঁজে নাচ-গান শুরু করে। অন্যদিকে মৃতের গোত্রের লোকজন নানা ধরনের উপহার সামগ্রী লাশের মাথার চারপাশে জমিয়ে রাখে। এক ব্যক্তি একটি তীরের মাথায় এক গোছা ঘাস বেঁধে সেটা শূন্যে নিক্ষেপ করে। পরে লাশটিকে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

আত্মারাম খাঁচা ছাড়া ! - নিউ মেক্সিকোর ‘পিলে বেলু’ গোত্রের কারো মৃত্যু হলে প্রথমে মদপানের ব্যবস্থা করা হয়। তারপর একজন জ্যোতিষী মৃতের মাথা থেকে এক গোছা চুল কেটে নিয়ে কবর খুঁড়তে যায়। মৃত ব্যক্তির ঘর থেকে কবর পর্যন্ত খাবার ভর্তি থালা পেতে দেয়া হয়। সবাই একসঙ্গে খাওয়া শেষে জ্যোতিষী মৃত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র গ্রামের বাইরে নিয়ে ফেলে আসে। তারপর মৃতের ঘরে জ্যোতিষী ‘ক্রস’ চিহ্ন এঁকে দেয়।

এতে মৃতের আত্না ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে ঘরে ঢুকতে পারে না বলে তাদের বিশ্বাস। এরপর মৃতদেহটিকে সমাহিত করা হয়। মৃতদেহে রসনা তৃপ্তি ! - দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘লুথ’ নামে একটি গোত্র আছে। এ গোত্রের কেউ মারা গেলে প্রথমে তার নাড়ি ভুঁড়ি বের করে সবাই স্যুপ রান্না করে খায়। এরপর মৃতদেহটি পাহাড়ের ওপর কিংবা সুবিধাজনক জায়গায় রেখে তা না শুকানো পর্যন্ত পালা করে পাহারা দেয়।

লাশটি শুকিয়ে অনেকটা শুঁটকির মতো হয়ে গেলে সেটি কেটে কেটে রান্না করে খাওয়া হয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।