ফারুক সাইফুল নজরুল টিপু রনিদের চাপের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সবুজ চত্বরে গেছি ২০০৩-এর শীতে। রাজশাহীতে পড়ে সবাই, আমি যশোরে।
ট্রেনে যশোর থেকে রাজশাহী যাই ফারুকের সাথে। রাতে ঠাঁই মতিহারে। কাজলা থেকে পাখির মাংস দিয়ে ভাত খেয়ে বিশাল এক ঘুম! সকালে গোসল সেরে আর্ট ফ্যাকাল্টিতে যাই।
রাতে কারো সাথেই দেখা হয়নি। ফারুক বলেছে, সকালে সবাইকে পাওয়া যাবে ক্যাম্পাসে।
বেলা ১১টা বাজে। উসকো-খুসকো চুলে নজরুলের আবির্ভাব। দৌড়ে এসেই কাকা বলে বুকের সাথে লেপ্টে নেয় আমাকে।
কিছু সময় পর সাইফুলের আগমন। সে এক রাজসিক ব্যাপার। কাকা কখন এলি ? বলি, রাতে। কিন্তু তোর এ কী অবস্থা ? জিন্স প্যান্ট আর জ্যাকেট জুড়ে ধুলো ময়লা।
জানায়, রাতে রাস্তায় ছিলাম।
' ব্যাপার কী ? জানতে পারি সবকিছুই। মোদ্দাকথা, রাতে সেসহ কয়েকজন সাহেববাজারে হাউজি খেলেছে। হাউজি জেতে হাজার দেড়েক টাকা। মাথা আর ঠিক ছিল না। রাতে বাংলা খেয়ে চিতপটাং রাস্তায়, ঘুম ভেঙেছে সকালে।
তারপর সোজা ক্যাম্পাসে। যাহোক, সকালে নাশতা সারতে সারতে বিকেল হয়ে গেলো।
সবাই আমরা সাহেববাজারে। বন্ধুরা বিভিন্ন জায়গা ঘুরছি। টুকটাক খাবারও খেয়েছি।
রাত তখন আড়াইটা হবে। কাজলায় পৌছেছি। নজরুল জিজ্ঞাসা করলো, কাকা ভাত খাবা নাকি বট-পরোটা?
ভাত তো খেয়েই থাকি-ভাবি; আজ নতুন এই খাবারটাই খাবো। জানাই আকাঙ্ক্ষার কথা। সবাই বসে যাই হোটেলে।
খাবার আসতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। সেই ফাকে নানা গল্প। আর আমি ভাবছি খাবারের কথা। নতুন আইটেম। বট-পরোটা।
ভাবছি, বটের পাতার ওপর তৈরি বিশেষ কায়দার পরোটা হবে হয়তো। মন আনচান করছে। কখন দেবে খাবারটা। আহ তর আর সইছে না। কীভাবে খেতে হবে, কীভাবে খায় লোকে এসব ভাবনায় আমি মশগুল।
আর খিদে তো লেগেছে লাগামছাড়া।
অবশেষে এলো আমার বহু প্রতীক্ষিত ক্ষণ, সামনে খাবার। বিস্ময়ে চোখ আমার কপালে উঠেছে! ও মা এযে সাধারণ পরোটা, সাথে গরুর ভুড়ি ভাজা।
ফারুককে শুধোই, কী ব্যাপার বট-পরোটা কই?
তুই জানিস না? রাজশাহীতে ভুড়িভাজাই হচ্ছে বট, আর সাথে তো পরোটাই আছে।
লোকে চালাক ভাবে আমায়, ভাবে সোনা-আসলে কত বড় সাইজের বোকা এই আমি সারাজীবন ইমিটেশন হয়েই রইলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।