আমরা হেরে যাইনি। এশিয়া কাপ না জিতলেও তোমরা আমাদের হৃদয় জয় করেছ। আমরা গর্বিত ১৯৯০ সালের নির্বাচনে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় অং সাং সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বিজয়ী হয়। মিয়ানমারের এই নির্বাচনে এনএলডি ৪৮৫টি আসনের মধ্যে ৩৯২টি আসন পেলেও জান্তা সরকার সুচির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে। এতে করে মিয়ানমারজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে অসন্তোষ আর বিক্ষোভ।
২১টি এথনিক গ্রুপ মিলে তৈরি হয় 'ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স অব বর্মা' যা ড্যাব নামে পরিচিতি পায়। ড্যাব ঘোষণা করে, সামরিক সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র ছিনিয়ে আনতে তারা সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করবে। রোহিঙ্গাদের দুটি সংগঠন অল বর্মা মুসলিম ইউনিয়ন এবং আরাকান রোহিঙ্গা ইসলামিক ফ্রন্টও যৌথ বিবৃতিতে জানায়, তারাও সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে শামিল হবে।
সামরিক একনায়করা যা করে, এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। জনরোষকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় পর্যবসিত করতে আক্রমণ শুরু হয় রোহিঙ্গাদের ওপর।
উস্কে দেওয়া হয় স্থানীয় রাখাইনদের। একই সঙ্গে চলে সামরিক অভিযান। নির্যাতন মাত্রা ছাড়া করে রোহিঙ্গাদের আরেকবার ঠেলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের দিকে। বড় আকারের রোহিঙ্গা শরণার্থী আগমনের দ্বিতীয় পর্যায় ঘটে এ সময়। ১৯৯১ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ সরকার জানায়, পূর্ববর্তী ছয় মাসে অন্তত দুই লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
এ সময় থাইল্যান্ড এবং বিশেষ করে মালয়েশিয়াতেও ব্যাপকসংখ্যক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করে। আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাজি হয়। ১৯৯২ সালের ২৮ এপ্রিল মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সব বহিরাগত উদ্বাস্তুকে ফেরত নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও মিয়ানমারের অসহযোগিতায় সেটি শেষপর্যন্ত সম্ভব হয়নি।
ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশও আবার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।