চোখে যা দেখি, কানে যা শুনি, তা নিয়ে কথা বলবোই ! অবিরাম বর্ষন আর পাহাড়ী ঢল যে শুধু মানুষের বাসভূমি ভাসিয়ে নিয়ে যায় তা নয়। জীবজন্তুর জীবনেও এই পাহাড়ী ঢল জমদূতের মতো তাড়া করে। ক্ষুধার্ত অজগরটির জীবনেও তাই হয়েছিল। প্রবল বর্ষণের কারণে সৃষ্ট পাহাড়ী ঢলের তোড়ে জীবন বাঁচাতে ছুঁটে এসেছিল জনারণ্যে। সাপ দেখলে মানুষ ভয় পায় তাই সাপকে মেরে ফেলতে উদ্যত হয়-এমনটাই ঘটে।
কিন্তু সিলেটের খাদিমপাড়া ইউনিয়নের খাদিমপাড়া গ্রামে ঠিক এর বিপরীতটাই হলো। ১৭ জুন, রাত আড়াইটা। পাহাড়ী ঢল ঝর ঝর করে নেমে আসছে। খাদিমপাড়া গ্রামের আব্দুল শুকুর ও তার অপর দুই সহযোগী হাতেম গাজী ও জসরুল আহমেদ রাতে নিজ মাছের খামারে পাহারা দিচ্ছেন। এমন সময় ক্ষুধার্ত সাপটি মাছের খামারেই আশ্রয় নেয়।
তারপর সাপটি শুরু করে মাছ ভক্ষণ। আব্দুল শুকুর তখন অজানা আশংকায় ছুটে যান ৩ কিলোমিটার দূরে তার বাড়িতে। নিয়ে আসেন বস্তা। নিরাপদে বস্তায় আটক করে খাঁচায় বন্দি করা হয় ৮ ফুট লম্বা দূর্লভ প্রজাতির এই অজগর সাপটিকে। এই বুঝি আর নিস্তার নেই সাপটির।
কিন্তু না, যেন অকৃত্রিম স্নেহ আর আদর আপ্যায়নই পেল সাপটি। শাহপরান গ্রীণ ভিউ নার্সারী মালিক আবু বকর লিলুর তত্ত্বাবধানে সাপটিকে একদিন রাখা হয়। এর আগে রাতেই বিষয়টি জানানো হয় আইপ্যাক সাইট ফেসিলিটেটর অর্জুন দাসকে। তিনি সাথে সাথেই বিষয়টি সিলেট বন বিভাগকে অবগত করেন। অবগত করা হয় খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বিলালকে ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আনোয়ার হোসেন আনু মিয়াকে।
পরে গতকাল সোমবার বিকেলে সাপটিকে ছেড়ে দেয়া হয় তার চিরচেনা বনাঞ্চলে। স্থানীয় খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃৃৃন্দ ও জনসাধারণের উপস্থিতিতে সাপটিকে অবমুক্ত করা হয় খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে। এ বিষয়ে সিএনআরএস-আইপ্যাক প্রকল্পের সাইট কো- অর্ডিনেটর সমীর চন্দ্র সমাদ্দার জানান, পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র রক্ষায় সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কারণেই নিরীহ এ প্রাণীটি রক্ষা পেয়েছে। তিনি জানান, প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সাপটি লোকালয়ে চলে আসে এবং বনাঞ্চলে খাদ্য সংকটের কারণে এটি বেশ ক্ষুধার্ত ছিল।
সূত্র ; সিলেটের ডাক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।