আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্কুল-কলেজের মেয়েদের প্রতি কিছু কথা ।

কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :) ( এই পোষ্টের বিষয়বস্তুতে তথাকথিত শিক্ষকনামধারী লম্পট জানোয়াররুপী কিছু মানুষ , এদের দ্বারা বিশেষকরে স্কুল কলেজের ছাত্রীদের যৌন হয়রানী / নির্যাতন , এই বিষয়ে সেইসব ছাত্রীদের অনিশ্চিত – অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত ও সেসব ইস্যুর প্রতিকার এবং প্রতিরোধে তাদের সত্যিকার প্রতিক্রিয়া কি হওয়া উচিৎ তার উপরে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি । শ্রদ্ধেয় সকল মহামতি শিক্ষকদের প্রতি নো অফেন্স প্লীজ । অন্যান্য সকল প্রকার রেইপ কেস / রেপিস্ট / শাস্তি / কারণ / প্রতিকার কিংবা প্রতিরোধ এই পোষ্টের আলোচ্য বিষয় নয় । তাই সেসব বিষয় নিয়ে মন্তব্যের ঘরে অযথা তর্ক না করার বিনীত অনুরোধ করছি । সেসব বিষয়ে আমার রেইপ বিরোধী অন্যান্য পোষ্টে আরও আলোচনা করেছি ।

) পরিমলের মত তথাকথিত শিক্ষক নামধারী লম্পট পাভার্ট প্রতিটি স্কুল কলেজেই দুই একটা করে আছে । মাগো বলে মেয়েদের পিঠে হাত বুলানো , নাম দেখার নাম করে নেইম প্লেট ধরে টান দেওয়া , বেঞ্চের কোনায় বসে পড়া ধরতে গিয়ে গায়ে গা ঘষা লাগানো এই ধরনের অতি সাধারণ (!) বিষয়গুলো হোক ছেলে কিংবা মেয়ে , নিজেদের ক্লাসে যারা দেখেন নি / শুনেন নি তারা অসম্ভব ভাগ্যবান ( যদিও ব্যাপারটা আমার কাছে অসম্ভব বলেই মনে হয় , আর নিজেদের স্কুল – কলেজের নাম বাঁচানোর নামে বিষয়টি চেপে যাওয়া মাত্র ) এবং তারা কোন স্কুল কলেজে পড়েছেন তার নাম জানতে খুব ইচ্ছা করে । যাই হোক , ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এই ধরনের ছাত্রী যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলি স্কুল পর্যায়েই বেশি হয়ে থাকে । এরকম হাজার হাজার ঘটনার মধ্যে যখন চরম নির্যাতনমূলক কোন ঘটনা নিউজে আসে , আমরা তখন মানববন্ধন করি , প্রতিবাদী হই । সমাজের বিত্তশালী আর শক্তিশালী নরপশু পালনকারী বিভিন্ন মহলের চাপে সব স্তিমিত হয়ে যায় ।

আমরা ভুলে যাই । তবে এই ধরনের ঘটনাগুলি সংগঠিত হওয়ার পিছনে যে শুধুমাত্র এই ঘৃণ্য নরপশুগুলোরই একমাত্র ভূমিকা আছে তা নয় । কিছুটা প্রচ্ছন্ন ভূমিকা কিন্তু ভিক্টিমেরও আছে । আসলে এটাকে তাদের ঠিক দোষ / ভূমিকা বলব না । এটা তাদের ঐ সময়গুলোতে কি করা উচিৎ আর কি না করা উচিৎ সে সম্পর্কে অজ্ঞতাই বলব ।

আর সে বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদেরকে ধারনা না দেওয়ার ক্ষেত্রে দোষগুলো আমাদের উপরও বর্তায় । বাকিটা না পড়ে আমাকে ভুল বুঝবেন না । প্রয়োজনে আমার ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হন বিভাগ থেকে আমার সম্পর্কে এই বিষয়ে আমার অবস্থান সম্পর্কে কিছুটা ধারনা নিয়ে আসলে খুশি হব । ১) এখন , শুরুতেই বলেছিলাম ‘’ মাগো বলে মেয়েদের পিঠে হাত বুলানো , নাম দেখার নাম করে নেইম প্লেট ধরে টান দেওয়া , বেঞ্চের কোনায় বসে পড়া ধরতে গিয়ে গায়ে গা ঘষা লাগানো এই ধরনের অতি সাধারণ (!) বিষয়গুলো ......... ‘’ বিষয়গুলো কি আসলেই সাধারণ ? এই আপাতদৃষ্টিতে অতি সাধারণ ছোট ছোট বিষয়গুলোর ক্রমাগত সাফল্যই কিন্তু ওইসব শিক্ষকনামধারী জানোয়ারগুলোর মনে সাহস যোগায় রেইপের মত বড় ধরনের ক্রাইম করার ব্যাপারে । প্রধানত দুই ধরনের মেয়েরা এই ঘটনাগুলির ভিক্টিম হয় ক) ভোলাভালা অতি সাধারণ খ ) যারা নিজেদের ওভারস্মার্ট মনে করে ( যদিও তারা তা নয় ) এখন এদের মধ্যে যারা আবার আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা বেশি সুন্দরী তারাই মূলত বেশী এই ধরনের বিষয়গুলির ভিক্টিম হয় ।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে মেয়েদের মধ্যে এই দুইটা ধরনই থাকে । কিন্তু আরও দুর্ভাগ্যের ব্যাপার যে তারা সবাই এই বিষয়গুলোতে তাদের অপরিণামদর্শী চিন্তা ভাবনা ও কি করা উচিৎ না বুঝে ওঠার ফলে দিনের পর দিন ক্রমাগত নির্যাতিত হতে থাকে । আর তাদের মধ্যে যাদের কপাল খারাপ তারা এক পর্যায়ে রেইপের শিকার হয় । স্কুল কলেজের মেয়েদেরকে বলিঃ এই ধরনের বিষয়গুলো শুরুতেই প্রতিবাদ করো , শক্ত গলায় । যে এরকম করছে সেই শিক্ষককে সরাসরি বলো যেন দ্বিতীয়বার তোমার সাথে আর এমন না করে , এগুলো তোমার পছন্দ না ।

ক্লাসে সবার সামনে বলো । উঁচু স্বরে । যেন সবাই শুনতে পায় । ভয় পেয়ো না । তুমি যদি ভালো লেখো তোমার নাম্বার কেটে নেওয়া কিংবা কম নাম্বার দেওয়া , ফেইল করানোর ক্ষমতা তার বাপ দাদারও নেই ।

প্রয়োজনে পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করে দেখবা । যদি তাতেও কাজ না হয় , কয়েকজন মিলে প্রতিবাদ করো । অভিভাবককে জানাও এবং প্রধান শিক্ষককে জানাও । লজ্জা পেও না । লজ্জাবতী হয়ে নির্যাতিত হওয়ার কোন মানেই হয় না ।

সেই সত্যযুগও এখন নাই , সত্য মানুষও নাই আর এমন লজ্জাবতী হওয়ারও কোন অর্থ হয় না । আর যদি দেখো তাতেও কোন সমাধান হচ্ছে না , প্রয়োজনে স্কুল পরিবর্তন করে ফেলো । আর স্কুল কলেজে কিভাবে কিভাবে অভিযোগপত্র লিখতে হয় তা নিশ্চয়ই শিখায় । বন্ধু-বান্ধবদের স্বাক্ষর সহ সরাসরি চিঠি / মেইল করো ঊর্ধ্বতন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে । একটু খুঁজলেই তাদের ঠিকানা পাওয়া কোন ব্যাপার না ।

ফেসবুক / ব্লগ ব্যাবহার করো ? ঐ স্কুল / কলেজের নাম , শিক্ষকের নামসহ বিষয়গুলি লেখো । মানুষকে জানাও । ২) আর স্কুল কলেজের মেয়েরা তোমরা যারা নিজেদের ওভারস্মার্ট মনে করো তাদের বলিঃ তুমি যদি ক্লাস নাইনে পড়ো , ইন্টারে পড়া একটা মেয়ে / ছেলে নিশ্চয়ই তোমার চেয়ে দ্বিগুণ চালাক / স্মার্ট ! একই কথা কলেজের মেয়েদের জন্যও । সেখানে স্কুলের টিচার হিসেবে যে / যারা আসে তারা নিশ্চয়ই তোমাদের চেয়ে অনেক অনেকগুণ স্মার্ট আর চালাক ! আর সে যদি লম্পট হয় তাহলে সে তোমার চেয়ে কতগুণ বেশী চালাক তা তুমি কল্পনাও করতে পারবা না । সেখানে নিজেকে ওভারস্মার্ট ভাবা একধরনের চরম বোকামি ।

সুতরাং , ওভারস্মার্টনেস দেখাতে গিয়ে স্কুল /কলেজ শেষে একা স্কুলের কোথাও কোন টিচারের সাথে দেখা না করাই ভালো । যে কোন প্রয়োজনেই হোক না কেন গার্জিয়ান ব্যাতিত কোন টিচারের বাসায় যেও না । স্কুল চলাকালীন সময়েও কিংবা স্কুল শেষে কখনোই কোন ল্যাব / শ্রেণীকক্ষে একা টিচারের সাথে স্পেশাল ক্লাস , কোচিং কিংবা বাড়তি পড়ালেখার অজুহাতে থেকে যেও না । ৩) যারা টিচারদের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যাও তাদের বলিঃ প্রাইভেট শুরু হওয়ার ঘণ্টা খানেক আগে গিয়ে বসে থেকো না । আর শেষ হবার পরও থেকে যেও না ।

সবচে’ বড় কথা একা থেকো না । আর যখন যেই টিউটরের বাসায় যাচ্ছ তা যেন অবশ্যই অবশ্যই বাসায় জানিয়ে যেও । এখানেও স্পেশাল টিউশনের নামে থেকে যেও না । মনে রেখো , মাগনা টিচাররা বেশী পড়ায় না , আর যারা পড়ায় তারা সবাইকেই পড়ায় । তোমাকে একা যে পড়াতে চায় , তার উদ্দেশ্য ভিন্ন কিছু ।

আর সেটা কখনোই ভালো কিছু নয় । ৪) আজকালকার ছেলেপেলের ভিতরে একটা ট্রেন্ডজ মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়েছে । যাকে তাকে ফ্রেন্ড বানিয়ে নিজেদের স্মার্ট হিসেবে প্রমাণ করতে ব্যাস্ত থাকে । হোক সে তার ১০ বছরের জুনিয়র কিংবা ৩০ বছরের সিনিয়র ! সবকিছুরই একটা মাত্রা আছে , সীমানা আছে । তোমার সমবয়সী বন্ধু আর তোমার চেয়ে ৩০ বছরের বড় বন্ধু এক বিষয় নয় ।

বন্ধু মানেই ঢলাঢলি নয় , চিপা চাপায় নির্জন বাসায় একটা দেখা করা / সময় কাটানো নয় । স্কুল কলেজের মেয়েরা , তোমার চেয়ে বয়সে বড় কাউকে বন্ধু বানানোর আগে ভালো করে ভাবো । কিছু কিছু সম্পর্কের সীমানা থাকা ভালো । তোমাদের কি এতই বন্ধুর অভাব যে শিক্ষককে বন্ধু বানাতে হয় !!! আমি বুঝিনা ! অনেকে ভালো রেজাল্ট হবে , পড়ালেখা ভালো হবে এইসব বলে এই মতের পক্ষে যুক্তি দেখায় । আমি বলি , কচু ! আমরা কি পড়ালেখা করি নি ? ভালো রেজাল্ট করি নি ! ভালো রেজাল্ট করতে হলে শিক্ষকের সাথে বন্ধুত্ব করতে হয় না ।

শিক্ষক আর ছাত্র – ছাত্রীদের সম্পর্ক গুরু-শিষ্যের একটি মধুর সম্পর্ক , যেখানে থাকে সম্মান ও স্নেহ । তথাকথিত বন্ধু নামে খাচ্রামি নয় । ৫) যেসব মেয়েদের বাসায় টিউটর এসে পড়ায় , তাদের বলিঃ টিচার এলে দরজা ভিড়িয়ে পড়তে হবে , এতে কনসেন্ট্রেশন হবে , এসব অর্থহীন ও হাস্যকর যুক্তি ঝেড়ে ফেলো । এতে সেই টিচারের মনে যদি কু-মতলব থাকে তা আরও আস্কারা পায় । আমার জানা মতে এই ধরনের শিক্ষক নামধারী লম্পটরা ভালো পড়ালেখা করতে হলে কমিউনিকেশন ভালো থাকতে হবে , বন্ধু হতে হবে ......... ব্লা ব্লা ব্লা এইসব বলে প্রথমে ছাত্রীদের সাথে ফ্রি হওয়ার চেষ্টা করে ।

সুতরাং , দরজা লাগিয়ে পড়ার টেন্ডেন্সি বাদ দেও । গার্জিয়ান বাসায় না থাকলে টিচার আল্যাও করো না । অন্যদিন আসতে বলো । টিউটরদের সাথে অযথা ও অপ্রয়োজনীয় ফালতু ঘনঘন টেক্সটিং , ফেসবুকিং নামের এহ্লাদি বর্জন করাই ভালো । আর যদি দেখো টিচার পড়াশুনা ব্যাতিত অন্য কোন বিষয়ে বেশী আগ্রহী , সেই টিচারকে প্রথমে সেসব বিষয়ে সতর্ক করো ।

ফলাফল না পেলে তোমার গার্জিয়ানকে জানাও । এই পোস্টটি কেন এভাবে লিখলাম তার সম্পর্কে কিছুটা ধারনা হয়তো পাবেন এই লিঙ্কের নিউজটি থেকে । বিভিন্ন সময়ে এরকম আরও অনেক নিউজ দেখেছি । আরেক পরিমল হিসাবে জন্ম নিল পান্না, একাধিক ছাত্রীকে জোর করে আপত্তিকর ভিডিও , নিউজটি ভালো করে পড়ার পরে এই ক্ষেত্রে ''জোড় করে '' শব্দটি নিয়ে আমার যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে । আর যারা তারপরেও বুঝতে পারেন নি , তাদের এইসব বিষয়ে সময় না নষ্ট করাই বোধয় শ্রেয় ।

আর পোষ্টের লেখাগুলি যদি শেয়ার করার মত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় , আশাকরি শেয়ার করবেন । ছবিসুত্রঃ ইন্টারনেট ।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।