আমিতো মরে যাব চলে যাব রেখে যাব স্মৃতি.................... আজ ১৪ জুন মাগুর ছড়া গ্যাস কুপ বিস্ফোরনের ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। বিস্ফোরনে ১৯৯৭ সালে ২৪৫.৮৬ বিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাস পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিষ্ফোরিত এ কুপ দিয়ে ১৫ বছর ধরে বুদ বুদ করে বের হয়ে আসছে গ্যাস। যা প্রতিদিনই পানির সাথে মিশে পাহাড়ি ছড়া হয়ে ক্ষতি করছে জলাশয় পরিবেশের অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে গ্যাস সম্পদ। এদিকে সু-চতুর তেল কোম্পানি অক্সিডেন্টার মাগুর ছড়া গ্যাস কুপ বিস্ফোরনের জন্য বাংলাদেশের কাছ থেকে ক্ষতি পূরণের তথ্য নিয়ে তাদের বীমা কোম্পানির কাছ থেকে সে টাকা আদায় করে নেয়। কিন্তু বাংলাদেশের এ বিশাল ক্ষতির ১০ শতাংশও পূরণ করেনি।
অক্সিডেন্টাল মৌলভীবাজারের পরিবেশকে যেভাবে ক্ষতি করেছে তার শত শত চিহ্ন আজো বিদ্যমান যা সম্বল করে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করলে বাংলাদেশের পক্ষে জয় এনে দেবে নিশ্চিত। যেমনটা সেভরনের বিরুদ্ধে পেট্রো বাংলা আন্তর্জাতিক আদালতে হুইলিং চার্জ মামলায় জয় লাভ করে। এদিকে এ সংক্রান্ত দাবি উত্থাপন করে মাগুর ছড়া গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি বুধবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ কান্তি চৌধুরীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বুধবার স্থানীয় কিছু চা শ্রমিক ও মাগুর ছড়া গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ জাতীয় রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সরজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা যায় ১৯৯৭ সালে যে স্থানে কুপ খনন হয়েছিল সেখানে বিস্ফোরনের সময় চারদিক গর্ত হয়ে যায়। আর সে গর্ত শিশা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার পর গর্তটি পরিপূর্ণ করা হয় পানিতে।
আর সে পানি বের হয়ে যাওয়াও জন্য করা হয় চমৎকার দৃষ্টি নন্দন একটি প্রয়ঃপ্রণালী। যার চারদিক কাটা তারের বেড়া দেওয়া তাই এর ভিতরে কোনো লোক প্রবেশের সুযোগ নেই। গর্তটি ১৫ বছরে পরিণত হয়েছে ঝিলে। এর মধ্যে ফুটেছে বেশ কিছু পদ্ম ফুল। রয়েছে কিছু কছুরিপানা।
পুরো ঝিলের একাধিক সাইটে পানির নিচ থেকে ছোট ছোট বুদ বুদ করে উঠে আসছে গ্যাস। তবে মূল কুপ যেখানে ছিল ঠিক সে স্থানে বুদ বুদের পরিমাণ অনেক বেশি যে প্রেসারে ঝিলের পানি বের হয়ে যায় তাদের তৈরি পয়ঃপ্রণালী দিয়ে। মাগুর ছড়া কুপ থেকে এই প্রয় প্রণালীটি গিয়ে মিশেছে মাগুর ছড়ায় (পাহাড়ি নদী) যার মাধ্যমে পুরো লাউয়াছড়ার ভিতর হয়ে এই গ্যাস মিশ্রিত পানি বের হয়ে পড়ছে নিম্নগামী জলাশয়ে। এ সময় নাম প্রকাশে এক চা শ্রমিক এ প্রতিবেদককে জানায়, এই ঝিলের পাশে কাউকে আসতে দেওয়া হয়না। সব সময় একজন বাগাল (চা বাগানের পাহারাদার) থাকে।
অন্যদিকে সেভরন কোম্পানির সিকিউরিটির টহল। অপর এক চা শ্রমিক জিতু জানায়, মাগুর ছড়ায় (পাহাড়ি ছড়া/নদী) মাছ মারলে সে মাছ ক্ষেতে কোনো স্বাদ পাওয়া যায় না। এ সময় চা শ্রমিকরা জানায় এই ঝিল থেকে বর্ষা খড়া সব মৌসুমে ২৪ ঘন্টাই পানি বের হয়ে যাচ্ছে। বুধবার দুপুরে প্রচন্ড খড়ায়ও ঝিল থেকে পানি বের হয়ে যেতে দেখা যায়। আর প্রচন্ড বেগে পানির নিচ থেকে বুদ বুদ করে কিছু বের হয়ে আসতে দেখা যায়।
এ সময় সঙ্গীয় চা শ্রমিকরা জানান বন্ধ করা গ্যাস কুপের মুখ দিয়ে গ্যাস বের হয়ে আসে আর সে গ্যাসই পানির সাথে বের হয়। এ ব্যাপারে এক সেভরন কর্মকর্তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান মাগুর ছড়া বিষ্ফোরিত এ কুপটি ছিল মূলত পকেট কুপ। সাধারণত গ্যাস উত্তোলন করতে হয় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার মিটার নিচ থেকে। আর মাগুর ছড়ায় ১২০০ মিটার নিচে যেতেই গ্যাস পাওয়া যায় যা বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সে কুপ সিলগালা করে প্রায় ৩/৪ শ’ মিটার দূরে মূল কুপ নির্ণয় করে বর্তমানে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।
যে খান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০/৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মৌলভীবাজার গ্যাস ফিল্ডে সংযুক্ত হয়। তবে এই কুপ দিয়ে গ্যাস বের হওয়ার বিষয়টি যুক্তিহীন বলেও তিনি দাবি করেন।
১৯৯৭ সালের দুর্ঘটনা ও ক্ষতি
১৯৯৭ সালের মধ্য রাত। হঠাৎ প্রচন্ড শব্দ। ঘুম থেকে চমকে উঠেন জেলার কয়েক লাখ মানুষ।
শুরু হয় চারদিকে ছোটাছুটি। সে কথা মনে হলে আজো সে এলাকার মানুষ আতকে উঠেন। আজ সেই ১৪ জুন ভয়াল মাগুরছড়া দিবসটি ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়ে ১৬ বছরে পা রাখলো। ১৯৯৭ সালের এদিন মধ্যরাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ মাগুরছড়া গ্যাস কুপে বিস্ফোরণে মুহূর্তে আগুনের লেলিহান শিখা চারিদিকে ছড়িয়ে নিমিষেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের গাছপালা জীবজন্তুসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা। বিস্ফোরণে চা বাগান, বনাঞ্চল, বিদ্যুৎলাইন, রেলপথ, গ্যাস পাইপলাইন, গ্যাসকূপ, মৌলভীবাজার স্ট্রাক্চার, গ্যাস রিজার্ভ, পরিবেশ, প্রতিবেশ, ভূমিস্থ পানি সম্পদ, রাস্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
বিস্ফোরিত আগুনের তেজস্ক্রিয়তায় গলে যায় রেলপথ, জ্বলে ছারখার হয়ে যায় কোটি কোটি টাকার বনজ সম্পদ। মারা যায় হাজার হাজার বন্যপ্রাণী ও পাখী। বিস্ফোরণে পুড়ে যায় ভূ-গর্ভস্থ উত্তোলনযোগ্য ২৪৫.৮৬ বিসিএফ গ্যাস। তদন্তে প্রমাণিত হয় মার্কিন কোম্পানি অক্সিডেন্টালের খামখেয়ালিপনার কারণে এ দুঘর্টনা ঘটে। যার ক্ষতি নির্ধারণ করা হয় প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা।
কিন্তু এ বিশাল ক্ষতির ১৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও আজও বিস্ফোরণকারী মার্কিন কোম্পানির কাছ থেকে আদায় করা হযনি যথাযথ ক্ষতিপূরণ। উল্টো অক্সিডেন্টালের উত্তরসূরী কোম্পানি ইউনিকল ও সেভরন লাউয়াছড়া ও তার আশপাশ জনবসতির ক্ষতি করে চলছে।
বিস্ফোরণের ১৫ বছরে পুড়ে যাওয়া এলাকায় নতুন করে গাছপালা গজালেও মাগুর ছড়ায় কয়েকটি গাছের পোড়া চিহ্ন আজো কালের সাক্ষী হিসেবে রয়ে গেছে।
বুধবার সরজমিনে আরো দেখা যায় মাগুর ছড়া এলাকায় একটি কাঁঠাল গাছ যার অর্ধাঙ্গ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আর সে অর্ধাঙ্গেই গাছটি ফল দিয়ে চলছে। ঐ এলাকার একজন খাসিয়া গাছটিকে দেখিয়ে বলেন বিস্ফোরণের সময় পুড়ে যাওয়া প্রায় সব গাছই কেটে ফেলা হয়।
২০১১ সালেও ৪টি গাছ ছিল দুটি কেটে ফেলা হয়েছে। খাসিয়া বলেন এ গাছগুলো তাদের সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। এ সময় তিনি আরো জানান, তারা এ গাছের খবর কাউকে বলেন না বললে হয়তো কোনো মহল এই গাছগুলো কেটে মাগুর ছড়া অগ্নিকাণ্ডের শেষ স্মৃতিটুকু মুছে দিতে পারে।
জানা যায়, অক্সিডেন্টাল যত সামান্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে ইউনিকল নামে আরো একটি কোম্পানির কাছে ফিল্ড বিক্রি করে বাংলাদেশ থেকে চলে যায়। কিন্তু সু-চতুর অক্সিডেন্টাল ক্ষতি পূরণের জন্য পেট্টো বাংলার মাধ্যমে ৫শ’ পৃষ্ঠার তদন্ত রির্পোট তৈরি করায়।
যেখানে উল্লেখ্য ছিল মাগুর ছড়া বিস্ফোরনে পরিবেশ জীবযন্তু ও পতিবেশের ক্ষতি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পাশাপাশি গ্যাস পুড়েছে ২৪৫.৮৬ বিলিয়ন ঘন ফুট। এই ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে অক্সিডেন্টাল তাদের বীমা কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ তুলে নেয়। কিন্তু গ্যাস উত্তোলনের চুক্তি অনুযায়ী সম্পন্ন ক্ষতিপূরণ তাদেরই দেওয়ার কথা। তারা কৌশলে স্থানীয় পর্যায়ে কিছু কিছু ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করে কেটে পড়ে। এখানেই শেষ নয় এই কুপ দিয়ে আজও গ্যাস বের হচ্ছে যার কোনো তথ্যও তাদের বর্তমান উত্তরসুরী সেভরনের কাছে নেই।
এছাড়াও ইউনিকল ২য় বারের মতো লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বুক ছিড়ে পাইপ লাইন করে বনের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি করে। পরবর্তীতে ইউনিকলও সেভরন নামে আরো একটি মার্কিন কোম্পানির হাতে গ্যাস কুপগুলো বিক্রি করে এদেশ থেকে কেটে পড়ে। সেভরন পুনরায় নতুন কুপ খনন করা আগে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অনুসন্ধান চালিয়ে সিসমিক জরিপের সময় বনে বম্পিং করে বন তথা এলাকার ব্যাপক ক্ষতি করে। যার জন্য পুনবার তদন্ত কমিটি গঠন করে এলাকাবাসীর ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত হয় সরকার। সে সুবাদে সরকার এ যাত্রায় কিছু কিছু মানুষকে আংশিক ক্ষতিপূরণও নিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী জানান, তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তারা শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৭শ’ পরিবার ক্ষতির তথ্য পান যাদের কিছু কিছু পরিবারকে প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় একই সাথে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু টিউবওয়েল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও সাহায্য করা হয়। বার বার মার্কিন এ তেল কোম্পানির দ্বারা এলাকার ক্ষতি হলেও সরকার তথা এলাকার মানুষ সঠিকভাবে পাচ্ছেননা সে ক্ষতিপূরণ।
এ ব্যাপারে পরিবেশ সংরক্ষক সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, অগ্নিকাণ্ডে এ বনের যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনও পূরণ করার মতো নয়। ঐ সময় বনের যে সকল পশু পাখি মারা গেছে তা আর ফিরিয়ে আনা যায়নি। আগুন লাগার পরে লাউছড়া ও মাগুর ছড়ার পাহাড়ি ছড়াগুলো শুকিয়ে ছিল আজো আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি।
তিনি লাউছড়া বনে ১৫ বছরে কয়েক হাজার বন্য প্রাণী অবমুক্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আমিরুজ্জামান জনান, আন্তরজাতিক আদালতে সেভরনের বিপক্ষে হুইলিং মামলায় পেট্রোবাংলার বিজয়ের সাথে সাথে এখন জরুরী হয়ে পড়েছে ১৯৯৭ সালে সেভরনের উত্তরশুরী অক্সিডেন্টালের উপর গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বশের ক্ষতিপুরন চেয়ে আন্তরজাতিক আদালতে আরো একটি মামলা করা। যার মাধ্যমে আদায় করা যেতে পারে তাদের দ্বারা অপুরণীয় ক্ষতির কিছুটা অংশ। একই সাথে তেল গ্যাস ও পরিবেশ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি জায়েদ আহমদ জানান, অক্সিডেন্টাল বাংলাদেশের সম্পদ নষ্ট করে বীমা কোম্পানির কাছ থেকে যে অর্থ আদায় করেছে তার নায্য দাবিদার বাংলাদেশ তাদের কাছ থেকে তা আদায় করতে প্রথমে নোটিশ ও পরে মামলা করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য বাংলাদেশের গ্যাস উত্তোলনে দেশের পাইপ লাইন ব্যবহার করে টাকা না দেওয়ার জন্য খোড়া যুক্তি দেখিয়ে সেভরন আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে।
কিন্তু আর্ন্তজাতিক আদালত তাদের এই আনকোড়া যুক্তিকে নাকচ করে রায় দেয় পেট্রোবাংলার পক্ষে। কিন্তু সেভরন ও তার উত্তরসুরী ইউনিকল এবং অক্সিডেন্টাল মৌলভীবাজারের পরিবেশকে যেভাবে আকড়ে ধরে ক্ষতি করেছে তার শত শত চিহ্ন আজো বিদ্যমান যা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করলে বাংলাদেশের পক্ষে জয় এনে দেবে নিশ্চিত। এ রায় প্রমাণ করে সেভরন প্রতারনা করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। এদিকে শ্রীমঙ্গল সমশেরনগর বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকিত এ প্রতিবেদককে জানান, মাগুর ছড়া অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি অপূরণীয়। বিস্ফোরণে রাস্তা উড়িয়ে দেওয়ায় দীর্ঘ দিন এ রাস্তা দিয়ে বাস চলাচল হয়নি এ এলাকার মানুষ ১৫ কিলো দূরত্বে জায়গায় চলাচল করেছেন ৭০ কিলোমিটার ঘুরে।
এদিকে মাগুর ছড়া দিবস উপলক্ষে আজও মাগুর ছড়া তেল ও গ্যাস সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।