নীল পাগলের দেশ থেকে জীবনভর মানুষকে সংগীতের জাদুতে মুগ্ধ করে চলে গেলেন গজল সম্রাট মেহেদী হাসান।
তার ছেলে আরিফ হাসান পাকিস্তানের টেলিভিশনকে জানান, দীর্ঘ রোগভোগের পর বুধবার করাচীর একটি হাসপাতালে মারা যান ভারতীয় উপমহাদেশের প্রবাদপ্রতীম এই গায়ক। আগামী ১৮ জুলাই তার বয়স হওয়ার কথা ছিল ৮৫ বছর।
আরিফ জানান, গত প্রায় এক যুগ ধরেই ফুসফুসের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন মেহেদী হাসান। বিভিন্ন সময়ে তাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালেও ভর্তি থাকতে হয়েছে।
তিনি মূত্রনালীর সমস্যাতেও ভুগছিলেন।
১৯২৭ সালে ভারতের রাজস্থানের লুনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মেহেদী হাসান। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তার পরিবার চলে যায় পাকিস্তানে। সেখানে নিদারুণ দারিদ্র্যের মধ্যে কাজ নেন এক মোটর মেরামতের দোকানে। এর মধ্যেও তার মিষ্টি কণ্ঠের রাজস্থানী পল্লীগীতি অন্যদের নজর কাড়তে শুরু করে।
কাজের ফাঁকে ঠুমরির তালিম চালিয়ে যেতে থাকেন এই শিল্পী।
এরই মধ্যে ১৯৫৭ সালে পাকিস্তান রেডিওতে অডিশনের সুযোগ পান মেহেদী হাসান। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। রেডিওতে কর্মজীবন শুরু করা এই শিল্পী ধীরে ধীরে পরিণত হন জীবন্ত কিংবদন্তীতে। ‘আব কি বিচরে’, ‘ম্যায় হোস ম্যায় থা তো ফির’, ‘জিন্দেগী ম্যায় তো সাভি’সহ তার কণ্ঠের বহু গজল তাকে এনে দেয় ‘সম্রাটের’ যশ।
বাংলাদেশেও সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে মেহেদী হাসানের ভক্ত অনুরাগীর সংখ্যা প্রচুর। বাংলায় তার গাওয় ‘ঢাকো যত না নয়ন দুহাতে’, ‘হারানো দিনের কথা’, ‘তুমি যে আমার’ গানগুলো বহুদিন মনে রাখবে এ দেশের সংগীতরসিকরা।
পাকিস্তানের চলচ্চিত্রের বহু গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। উর্দুর পাশাপাশি গেয়েছেন ফার্সি ভাষাতে। উর্দু কবিতার প্রতি তার প্রেম ছিল আজীবন।
পাকিস্তান সরকারের তমঘা-ই-ইমতিয়াজ ও হিলাল-ই-ইমতিয়াজ খেতাব ছাড়াও নেপাল সরকারের কাছ থেকে গোরখা দক্ষিণা বহু খেতাব পেয়েছেন মেহেদী হাসান। সংগীতে অবদানের জন্য পেয়েছেন বহু সম্মাননা ও পুরস্কার।
সুত্র: বিডিনিউজ২৪ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।