আলো হয়ে ছুঁয়ে দাও আকাশ !! যখন অসুস্থ হই তখন আমার মায়ের কথা ভীষণ মনে পড়ে ! বাসায় অসুস্থ হলে, মা কে কখনও খুজতেঁ হয় না ! চোখ বন্ধ করে থালেও এমন কি ভীষণ জ্বরের ঘোরে, কোনো একটা হাত আমার হাত স্পর্শ করলে অথবা কপালে দিলে জলপট্টি, আমি ঠিক ঠিক বুঝি, এইটা আমার মায়ের হাত ! জানি তো, এইখানে মা নেই, তাই চারপাশে মা কে আর খুজিঁ না ! চোখ বন্ধ করে অথবা খোলা রেখে ! তবে বাচ্চাদের মত ক'দিন ধরে দু-চোখ শুধু একটা বিড়াল খুজঁছে ! ছেলে বেলা থেকেই, আমার ধারনা, বিড়াল কোলে নিলেই আমি সুস্থ হয়ে যাবো ! মাঝে মাঝে ভীষণ খারাপ লাগলে তাই ছুটে যাই সোয়েবের বাসায় ! সোয়েবের বাসায় ২ টা বিড়াল আছে! মামীর বিড়াল প্রীতি দেখলে মনে হবে উনার ২ ছেলে আর ২ বিড়াল মোট চার সন্তান ! মামার-ও বিরক্তি নেই একদম! মাঝে মধ্যে ফিজিক্সের একটা ছাত্র সুরমা থেকে, বিকাল বেলা তার আদরের বিড়াল ছানাটা কোলে করে নিয়ে আসে। অনেকেই ছেলেটাকে বিড়াল পোষে বলে কটুক্তি করে ! বিকাল বেলায়, আমার সাথে দেখা হলেই, ছাত্রটা বিড়াল ছানাটা আমার কাছে দিয়ে যায় ! সেই বিড়াল ছানাটা ঘন্টাভর আমার কাছে থাকে ! অথচ, আমার সাথে তার কোনো পরিচয় ছিলো না ! আমি তার নাম জানি না ! এমন কি, আমি কোনোদিন তাকে বলারও সুযোগ পাই নি যে আমি বিড়াল পছন্দ করি ! মানুষের জীবনে তো চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই ! মানুষের ভাগ্য মানুষকে কোথায় নিয়ে যায়, তা আমরা মানুষেরা আর কতটুকুন-ই বা বুঝতে পারি ! মানুষের আচরনের ব্যাখ্যা আমরা কতটুকুন-ই বা বুঝে ফেলি বা অনুভবের চেষ্টা করি ! গত আট দিন ধরে, আমি প্রথম বর্ষের সেই ছোট্ট ছাত্রটি কে খুজঁছি ! কারন আমি জানি, আমার ছাত্র ছাত্রীদের ভালোবাসায়, আমার আকাশ হয়ে যাবে দ্রুত শরতের নীল ! এই ছাত্রটির কথা ভাবতে ভাবতেই খেয়াল হলো, এই দেশের ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মাঝে একটা ভয় কাজ করে ! আমরা স্টুডেন্ট শব্দটিকে যদি লার্নারস হিসাবে ব্যবহার করতাম, তাহলে, বোধ করি, আমাদের ছাত্র শিক্ষক সম্পর্কটা আরো সহজ হতো ! ওরা আমাদের কে আরো বেশী শ্রদ্ধা করতো, এবং আমরাও তাদের সমস্যাগুলো আরো ভালো বুঝতে পারতাম ! এই সম্পর্ক সহজ হলে, আমাদের শিক্ষার মান-ও বৃদ্ধি পেতো ! যে সম্পর্কে ভয় কাজ করে, সেইখানে জ্ঞান কখনো প্রজ্ঞায় (wisdom) উপনীত হতে পারে না ! আজ প্রায় তিন বছর হলো শিক্ষকতা করছি ! আর এই শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েই মনে হলো সর্বাগ্রেগবেষণা করা দরকার ! বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা করে নিজস্ব গবেষণা প্রতিষ্ঠান থাকা জরুরী, যার কাজ হবে শুধু মানুষ, সমাজ বা দেশ নিয়ে গবেষণা করা নয়, বরং Self Reflection বা স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা, সমস্যা চিহ্নিত করন এবং শিক্ষাপদ্ধতি, উত্তরপত্র নিরীক্ষণ, ফলাফল তৈরি ও বিশ্লেষনে মূখ্য ভূমিকা রাখা তথা নিজস্ব শিক্ষাব্যবস্থার মান উন্নয়ন। কেননা, নিজেকে জানা জরুরী সবার আগে! নিজেকে না জানলে, নিজের চাওয়া , স্বপ্ন এবং সমস্যা না বুঝলে, নিজের চাহিদা অনুযায়ী সেই স্বপ্ন পূরণ করতে না পারলে, তো অন্যের জন্যে কিছু করা সম্ভব নয়! শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি যথাবিহিত, সম্মান নিয়েই বলছি, গবেষণা করা দরকার আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নের জন্যে-ই ! বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম যখন টপ রেংকিং এ দেখি, তখন ভাবি, একটু চেষ্টা করলে তো আমরাও পারি ! নিশ্চই পারবো ! এই দরিদ্র দেশের সরকারের ভুল বের করার চেয়ে, সরকারকে যদি একটু উন্নয়নের পথে একটু যৌক্তিক দিক নির্দেশনা দেয়া যায়, আর সরকার যদি তা মঙ্গলজনক মনে করে, নীতিমালা প্রনয়ন ও বাস্তবায়নের কার্যকরী পদক্ষেপ হাতে নেয় আর কিছু সৎ মানুষকে দিয়ে, সাদা মনের স্বপ্নধারী নাগরিকদের খুজেঁ বের করে! তাহলে, কী আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলো জয় করতে পারবো না ? আমার বিশ্বাস পারবো ! আমরা আমাদের মিডিয়াগুলো কে কত প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে দেখি ! নাচ, গান, কবিতা, বিতর্ক, রচনা , গনিত অলিম্পিয়াড, সুন্দরী প্রতিযোগিতা !! কিন্তু দেখে এবং ভেবে অবাক হই যে, আমাদের মিডিয়াগুলো কতটা সচেতন ভাবেই না আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন পদক্ষেপ বা আইডিয়া গুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে ! অথচ, একটা হতদরিদ্র দেশেরও চেহারা প্রায় সম্পূর্ণ পালতে ফেলা যায়, সেই দেশের মানুষকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুললে ! প্রায় দশ বছর ধরেই দেখছি--স্টারপ্লাস সিরিয়াল, ডরিমন কার্টুন, আচার প্রতিযোগিতা, রান্না-বান্নার অনুষ্ঠান এইসব আমাদের শিশু -নারীদের গিলে খাচ্ছে ! নারীদের পাশাপাশি, পুরুষদের সৌন্দর্য্য চর্চাও বেড়েছে বৈকী! নতুন জেনারেশন কে আমাদের মিডিয়া শিখাচ্ছে কিভাবে পশ্চিমা বিশ্বের মতন সেক্স বেইজড বেড়ে উঠতে হবে ! নতুন জেনারেশনের ফুড , ড্রেস, চুলের স্টাইল, হেয়ার জেল, বডি স্প্রে ! সব কিছুতে ব্যক্তিত্বের জায়গাটি ‘সেক্স’ দখল করে নিচ্ছে কত অবলীলায় ! আর আমরাও তা কত অবলীলায় হজম করছি ! আমার নিজের টেলিভিশন নেই ! কখনো আমার কোথাও গিয়ে একটু যদি টেলিভিশন দেখার ফুসরৎ হয়-ও, আমি টেলিভিশনে চ্যানেল বদলাতে বদলাতে ক্লান্ত হয়ে যাই! টেলিভিশন মিডিয়ার বিজ্ঞাপন দেখলে মনে হয়, এরা আসলে বিজ্ঞাপনের ফাকেঁ ফাকেইঁ অনুষ্ঠান দেখায় ! বছরের পর বছর নাটকের কাহিনি চলতে থাকে দেখে অবাক হই না, তবে কোন নাটক কি বলতে চায় সেইটাই ভুলে যাই! ভুলে যাই চরিত্র বা কাহিনি-ও! মানুষ তো ! বয়স-ও বাড়ছে ! আমার-ই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সিনিয়র দের কি ভয়াবহ অবস্থা হচ্ছে, তা নিশ্চই ভেবে দেখার বিষয়! সিরিয়াল শুনলেই আমার এক স্যারের কথা মনে পড়ে যায়! এক সিরিয়ালে নাকী এক মহিলা আড়াই বছর ধরেই প্রেগ্নন্যান্ট দেখাচ্ছে !! আসলেই, মানুষের ধৈর্য্যের-ও একটা সীমা আছে! বাসায় যদি বাবা, মা বা ভাইবোনের সাথে যদি কখনো টিভি দেখতে বসিও, কিছু বিজ্ঞাপন দেখলে, মাথা ন্যুয়ে আসে! লজ্জা পাই না, তবে আমাদের মানবিক সেন্স কে আমরা কোন বোধে কাজে লাগাচ্ছি এই মিডিয়া দিয়ে, সেই লজ্জায় মাথা ন্যুয়ে যায়, কখনো কখনো রিমোট রেখে উঠে চলে আসি ! তাই বলে এইটা ভাবার কোন কারন নেই যে, আমি বলছি, মিডিয়া ভালো কিছু-ই করছে না! আমি বলতে চাইছি, মিডিয়া আরো ভালো কি কি করে করতে পারতো! করতে পারে ! আমাদের একটা বিষয়, খুব স্পষ্ট জেনে রাখা দরকার, আর তা হলো, Criticism এর মানে এই না যে, যে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হলো তা খুব খারাপ ! খুব সহজ একটা সংগা আছে উইকিপিডিয়াতে, Criticism is the practice of judging the merits and faults of something or someone in an intelligible (or articulate) way. (http://en.wikipedia.org/wiki/Criticism). অর্থাৎ ভালো -মন্দ দুটো দিক-ই যাচাই করা। বিদেশে পড়াশোনা করতে গেলে, কিছু রেফারেন্স প্রয়োজন হয়, প্রফেসর বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের। আমি দেখেছি, সেখানে, একজন ছাত্রের সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতার উপড়েও স্কোরিং করা হয়, অর্থাৎ এইটাও মানুষের একটা গুণ হিসেবে বিবেচ্য ! আমাদের দেশে এখনও বিষয়টি নিয়ে কেউ গবেষনা করেছেন কিনা আমি সেই বিষয়ে অজ্ঞাত ! তবে, বোধ করি, তা করার সময় এসেছে ! কেননা এই গুণটা দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ ও বর্তমান উন্নয়নের জন্য খুব-ই গুরুত্বপূর্ণ একটা নিয়ামক হতে পারে ! এই Information Technology (The use of information in technological ways ) এর যুগে, আমাদের আমাদের তাই সমস্যা ও সম্ভাবনা দুটোকেই গুরুত্ব দিতে হবে ! এই প্রযুক্তির সুবিধা যেমন আছে, খুব দ্রুত কাজ করার, তথ্য সংগ্রহ, সরবরাহ, ব্যবহার এবং সঞ্চয় করার, ঠিক তেমনি মূদ্রার অপর পিঠের মতন আছে কিছু ভয়ংকর দিক-ও ! তাই মনে রাখতে হবে, মিডিয়া এবং টেকনলজি দুটো-ই আসলে হাতিয়ার (Tools), এদের নিয়ন্ত্রনে আপনার নিজেকে, নিজের সন্তান কে অথবা সমাজকে ছেড়ে দেয়া হবে ভীষণ ভুল ! মানুষ তার প্রয়োজনে প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, এবং সেই প্রয়োজন যেনো কল্যানমুখী হয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা বিবেচনা করার জন্য বিধাতা আমাদের কে সাধারন জ্ঞাণ, বিবেক, বুদ্ধি এবং চিন্তা করার ক্ষমতা দিয়েছেন ! একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে, শিক্ষিত, সু-চিন্তা সম্পন্ন মানুষ হিসেবে, আমাদের কে সেই জ্ঞাণ কাজে লাগাতে হবে, দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে! আচার প্রতিযোগিতার মতন কী এমন কোনো প্রতিযোগিতা যোগ করা যায় না, যা দিয়ে নতুন প্রজন্মের মাঝে, গবেষণামূলক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা যাবে ?! সুন্দরী প্রতিযোগিতার মতন এমন আরো কিছু প্রতিযোগিতা কি আয়োজন করা যায় না, যেখানে দেশের জন্য ভবিষ্যত যোগ্য নেতৃত্ব খুজেঁ পাওয়া যাবে ! আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে যেখানে এক বিশাল অংশ নারী, তাদের সুন্দরী হয়ে উঠার প্রতিযোগিতায় তুলনামূলক কম নামিয়ে মেধার প্রতিযোগিতায় কি আমরা বেশী আগ্রহী করে তুলতে পারি না?! তাহলে মানুষের মনের সৌন্দর্য্য বলে যে একটা গোপন বিষয় ছিলো, এবং তার যে নিয়মিত চর্চা করা প্রয়োজন এবং উপকারী সেই দিকটা মিডিয়াতে প্রকাশ পেতো ! তৃতীয় প্রজন্ম বা 3rd Generation নামে আমরা এমন কি কোনো প্রতিযোগিতা চালু করতে পারি না, যেখানে আমরা খুজেঁ পাবো যোগ্য মানুষ, গড়ে তুলবো যোগ্য নেতৃত্ব ! এমন সব প্রতিযোগিতা কেনো শুরু হয় না মিডিয়াতে, যেখানে, মাথায় জেল বা কোমড়ের নিচে জিন্স পড়া শিখানো হবে না তরুন প্রজন্মকে ! বরং কে হবে কোটিপতির মত, কিছু আয়োজন আমাদের প্রতি রাউন্ডে কিছু নতুন মুখের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে; 3rd Generation Leader, 3rd Generation Economist, 3rd Generation Politician, 3rd Generation Anthropologist, 3rd generation Social Worker, 3rd Generation Engineer, 3rd generation Social Scientist, 3rd Generation Business Tycoon, 3rd Generation Music Composer, 3rd Generation Idea Idle, 3rd Generation Thinker ইত্যাদি ! আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে মিডিয়ায় কয়টা অনুষ্ঠান হয়,আমি গুনে দেখিনি ! তবে এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা, সাফল্য, গবেষণার বিষয়বস্তু, গবেষনার সীমাবদ্ধতা, গবেষনায় দেশে-বিদেশে সাফল্য, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক, ছাত্রদের স্বচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম, উদ্যোগ, ভবিষ্যত পরিকল্পনা এইসব নতুন প্রজম্ন কে অনেক বেশী উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারতো ! বিশ্ববিদ্যালয় মানেই মারামারি, রাজনীতি- এই যে ভীতিকর ইমেইজ তার বাইরেও নতুন প্রন্মকে জানানোর আছে অনেক কিছু !! মিডিয়ার শক্তিশালী চোখে নিশ্চই ভিটামিন ‘এ’ –এর অভাব নেই ! গাছের আম ভালো না প্যাকেটের আম ভালো, সেইটা প্রচার এবং প্রসার যত সহজ হয়েছে, ফর্মালিন দেয়া মাছ খেলে কি ক্ষতি হতে পারে বা ফর্মালিন কারা মিশায়, কেনো মাছে দেয়, আম, কলা, লিচু, কাঠালঁ পাকাতে কি ধরনের বিষাক্ত এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, সেই বিষয়ে মিডিয়া আমাদের কি দিতে পারে সেইটা ভাবার সময় এসেছে ! এই সমস্ত কাজের জন্য কতজন কি কি রোগে ভুগছেন, মারা যাচ্ছেন ক্যান্সারে তা নিয়ে কি শিখছি, দেখছি বা দেখানো হচ্ছে? একটা মুভ্যি যেখানে ২-৩ ঘন্টায় দেখানো হয়, সে তুলনায়, দরকারী অনুষ্ঠান কত মিনিট চলে, তা ভাবতে হবে ! মিডিয়া কি তবে শুধু-ই বিনোদন, ভারী ভারী আলোচনা অথবা বিজ্ঞাপন ?! মিডিয়ার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব কী তবে আজ প্রশ্নের সম্মুখীন ?! পদার্থবিদ্যায় ‘কাজ’ এর একটা সুন্দর উদাহরন পরেছিলাম ক্লাস নাইন এ! কেউ যদি সারাদিন একটা বিশাল পাথর ঠেলিয়ে একবিন্দুও সরাতে না পারে, তাহলে সেইটা পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায়, কোনো কাজ হিসেবে গন্য হবে না! যদিও লোকটি সারা দিন পাথর সরানোর জন্য সময় এবং শ্রম দুটো-ই দিয়েছে! সয়াবিন তেলের মূল্য ১৪০ টাকা লিটার গতকাল কিনেছি! পাচঁ কেজি চাল কিনেছি ১৮০ টাকায় ! সিলেটে চা উৎপাদিত হয়, তবুও চা-পাতা, পাউডার দুধ আর চিনি একসাথে কিনতে ভয় লাগে! দামের কারনে পকেট ফাকাঁ হতে দেখে, নিজের অজান্তেই নিজেকে প্রশ্ন করে বসি, চা খাওয়ার নামে বিলাসিতা করছি না তো !?! অথচ, চা আমাদের ভাতের চেয়েও প্রিয়! একবেলা ভাত না খেলেও আমাদের চা খেতে হয়, এইটা রসিকতা নয়, গোপন সত্য সিলেটবাসীদের জীবনের! সেই যে কোন এক রোযায় সয়াবিনের মূল্য বাড়ল আর কমেনি ! বাকী সব পন্যের কথা নাই বা বলি ! শুধু এই পণ্যের দাম বাড়লো, ওই পন্যের কমে গেলো—এইসব খবর শুনলে মনে হয়, কাচাঁ বাজারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এইসব খবর প্রচারে আমাদের কি লাভ?! কেন বেড়েছে? কি করলে কমানো যাবে? কি কি পদক্ষেপ নিলে আমাদের মতন আর হাজারো মানুষ ডাল দিয়ে দুইমোঠ সাদা ভাত খেতে পারবে, থালার কিনারে রাখা সবুজ কাচাঁমরিচের রুপ দেখে দেখে, সেইটা কেনো মিডিয়া দেখায় না ?! তাহলে কি আমাদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এই সব বিষয়ে পড়াশুনা হয় না? গবেষণা হয় না? নাকী মিডিয়ার সাথে আমাদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বৈরাগ্য আছে?! আমাদের ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মতন এইখানেও কী কোনো দূরত্ব রয়েছে যার জন্য আমরা মিডিয়াকে উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে শিথিল থাকতে দেখছি?! বোধ করি, যদি তাই হয় , তাহলে এইখানেও গবেষণা ছাড়া মুক্তি নেই ! কি জানি ?! আমি এত ভাবার কে?! আমি তো জ্ঞানের জাহাজ নই! মূর্খ এক মানুষ ! আমেরিকার পিএইচডি নেই ! আমার তো স্ট্রং লবিং নেই ! বড় বড় পত্রিকায় পরিচিত কেউ নেই ! মাহফুজ আনাম অথবা মতিউর রহমান, তাদের আমি দূর থেকে দেখেছি ! কখনো কথা হয় নি ! আমার ভাই বা বন্ধু কেউ টিভি চ্যানেলেও কাজ করে না ! আমি খুব সাধারন একজন ! এখনও মানুষ হতে পেরেছি কি না জানি না ! মনুষ্য জীবনের কিছু বিষয় ভাবায় বলেই ভাবি ! এমন সুখ-স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন কোনোটাই দেখি না যে আমার লিখা পড়ে সব পত্র-পত্রিকা, টিভি চ্যানেল ছুটে আসবে !! আমাকে নিয়ে রাজনীতি হবে! সমালোচনার ঝড় বইবে!! আমি রাজনীতি ভয় পাই ! ভয় পাই মানুষের একতরফা গঠনমূলক দৃষ্টিশূণ্য সমালোচনাও ! তাই প্রাণ খুলে লিখি আবার কী এক অজানা ভয়ে লিখা ছাপানোর আগে, কাওকে যেনো কোনভাবে আঘাত না করি, এই ভেবে, আমার নিজের লিখা কে নিজেই এডিট করে পাঠক নন্দিত করার অপচেষ্টাও করি ! আর ভীষণভাবে স্বপ্ন দেখি, একদিন সবাই প্রাণখুলে লিখতে পারবে! লেখকের চিন্তা বা কলমে কোনো টেক্স বসানো হবে না ! আমার ভবিষ্যত প্রজন্ম যেনো সত্যিকারের লেখক হতে পারে !! এই ভাবনার কোনো মূল্য নেই জানি ! এইভাবে, মূল্যহীন ভাবনা জমিয়ে জমিয়ে, একদিন আমরা উন্মাদ হয়ে যাবো জানি, ভেজাল আর বিষাক্ত ক্যামিকেল একদিন আমাদের মতন মানুষের কিডনি, লিভার নষ্ট করে দিবে তাও জানি ! দুঃখ করি না তবু ! মানুষ হয়ে জন্মেছি, না হয় কয়দিন আগেই মরলাম ! দেশ-মিডিয়া-মানুষ, স্বাধীন দেশে সবাই স্বাধীন, সেই সুখে একদিন অন্যদের মতন দেশ ছেড়ে দিবো ! যে দিন বাংলাদেশে পিএইচডি করলে লোকজন মুচকি হাসবে না, সেইদিন হয়তঃ ফিরত আসব! ততোদিনে, আমার মেধা-শ্রম বিদেশে বিক্রি হয়ে যাবে, যে সময়টায় দেশের জন্য ভাবতাম, তা না হয় বিশ্বের মানুষের (?!) জন্য-ই ভাববো ! পৃথিবীর সব মানুষ তো এক-ই ! হ্যাঁ, ঠিক তাই তো !! শাবিপ্রবিতে পড়ানো আর আমেরিকার নামীদামী কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর মাঝে কি তবে কোনো তফাৎ আছে? থাকা কী উচিৎ ?! আমি জানি না !? মানব বিজ্ঞানে আমার এই প্রশ্নের উত্তর নেই ! আমি ছাত্রজীবন থেকে এই প্রশ্নের উত্তর খুজঁছি...!! জন লেননের 'Imagine there is no heaven' গানটা যদি সত্যি হয়,আর দেশে দেশে যদি কোনো তফাৎ না থাকে, তাহলে তো আর মানুষে- মানুষেও তফাৎ থাকার কথা না ! আমি অসুস্থ হলে, তাহলে আমার মায়ের জন্য কেনো আমার মন কাদেঁ? দেশ আর মা তো এক-ই শিখেছি !! মিডিয়া-ই তো আমাকে শিখিয়েছে !! আমার শিক্ষা-ই তো আমাকে শিখিয়েছে! তাহলে স—ব-ই কী তবে ভুল? স—ব বই এ কি তবে ভুল লিখা ?! যদি ভুল নাই হয়, তাহলে সত্যিটা আসলে কী? সেই সত্যটা ভালবাসতেই বা আমাদের সমস্যা কোথায়? আমি সেই সত্য ভালোবাসতে চাই! আমি জানি সত্য সব সময়-ই কঠিন! তবুও মাথা উচুঁ করে বাচুকঁ এই দেশের মানুষ, অন্ততঃ বাচতেঁ শিখুক অতীতের গৌরবময় ইতিহাসের মতন ! আমাদের মিডিয়াগুলো কি এই পথচলায় আমাদের পাশে এগিয়ে আসতে পারে না ?!! ১০/০৬/২০১২
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।