আমি এবং উপসারগীয় যুদ্ধ সমসাময়িক।
আমার বেড়ে ওঠা বাবা-চাচা এবং ভাইয়ের মুখে সাদ্দাম-বুশের যুদ্ধের গল্প শুনতে শুনতে। মনে আছে, ভাই আমাকে একটা খেলনা কিনে দিয়েছিলেন। খেলনাটিতে মুষ্টিযুদ্ধে লিপ্ত সাদ্দাম এবং বুশ। আমার দায়িত্ব ছিল বাস্তব যুদ্ধে পরাজিত সাদ্দামকে মুষ্টিযুদ্ধে জিতিয়ে দেওয়া।
এবং আমি অতি সফলতার সাথে তা করেছি।
খেলায় মুষ্টিযুদ্ধ খেলতে খেলতে কখন যে জীবনের ময়দানে পাড়ার ছেলেদের সাথে যুদ্ধ শুরু করেছিলাম মনে নেই। তবে মনে বাড়িতে বার বার বিচার এবং মায়ের হাতের অনাদরি মার খাওয়া। বা মার খেয়ে বেঁহুশ হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কথা আজো ভুলিনি। ভোলা সম্ভব নয়।
আমার একরোখা স্বভাব এবং গোর্য়াতূমির কারণ ছেলেবেলার দুই বিশ্বনেতার মুষ্টিযুদ্ধ।
কাল ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছিল, আমার ছয় বছরের ভাতিজীকে নিয়ে। আমার অতি আদরের মেয়ে(যাকে আমি মা বলে সম্বোধন করি)। ছোট কাকুর নামে পাগল এই মেয়েটিকে আমি গত বার বাড়িতে গিয়ে একটা খেলনা বাস কিনে দিয়েছিলাম। স্বক্ষমতা থাকলে কয়েকটা কিনে দিতাম।
কিন্তু আমার কিনে দেওয়া সেই বাসটি আর অক্ষত নেই। হরতালের সময় পিকেটারদের ইটের আঘাতে জর্জরিত ছোট বাসটি!!!!
প্রতিনিয়ত টিভি পর্দায় হরতালের পিকেটিং দেখে আমার ভাতিজীটিও একজন দূর্দান্ত পিকেটার হয়ে উঠেছে। ইট-সুরকি দিয়ে ভেঙ্গে চলেছে নিজের খেলনা, বাবার মোটর সাইকেল এমনকি মায়ের হাঁড়ি-পাতিল। তার লাঠির আঘাতের হাত থেকে মুক্তি পায়নি আমার বসার জন্য নির্মিত বাঁশের মাচাটিও।
ভাঙ্গা-ভাঙ্গির কারণ জিজ্ঞাসা করলেই বলে ‘আজ অরতাল, ফিকেটিং করচি।
’
ছেলেবেলায় মুষ্টিযুদ্ধ খেলে আমি আজ নষ্ট ছেলেতে পরিণত হয়েছি। খুব সহজেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে বা বিপক্ষ মতের উপর আঘাত করার সাহস আমার হয়েছে মুষ্টিযুদ্ধ খেলে। কিন্তু হরতাল-হরতাল এবং পিকেটিং করা আমার এই ভাতিজীর ভবিষ্যত কী??
ও কি আমার মত নষ্ট হবে, নাকি আরো বড় কিছু??
কিংবা আমার সন্তান সে কি নিয়ে খেলবে, আর কি হবে বড় হয়ে???
যারা আজ এই ছোট শিশুটির হাতে লাঠি, ইট-সুরকি তুলে দিচ্ছে, তারা কি জানে ওর হাতে আপনাদের তুলে ইটের আঘাতে একদিন আপনাদের প্রসাদ ভেঙ্গে পড়বে। ঠিক যেভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে অনেক ভালোবাসার স্মৃতি ঐ খেলনা বাসটি।
তাই বলছি, এখনো সময় থাকতে সাবধান হোন।
সামনে সুনামী আসছে, সুনামীর ঢেউতে আপনারা ভেসে যাবেন।
সংগৃহিত ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।