আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিন ঠেকাতে মরিয়া আমেরিকা: এশিয়ায় যুদ্ধ জাহাজের সংখ্যা আরও বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আসছে বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের যুদ্ধ জাহাজের সংখ্যা আরও বাড়াবে এবং এই অঞ্চলে বিমানবাহী ছয়টি রণতরী মোতায়েন করবে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেট্টা শনিবার সিঙ্গাপুরে নিরাপত্তা-বিষয়ক এক সম্মেলনে এশিয়া অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কৌশল সম্পর্কে তাদের এ পরিকল্পনার কথা জানান। আগামী আট বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বেশিরভাগ সামরিক নৌবহর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিয়ন প্যানেট্টা। সিঙ্গাপুরে এক আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বৈঠক তিনি একথা জানান। পেনেট্টা এশিয়া অঞ্চলে নয় দিনের সরকারি সফরে রয়েছেন।

তিনি এরপর ভারত ও ভিয়েতনাম সফরে যাবেন। লিয়ন পেনেট্টা বলেন, ‘২০২০ সালের মধ্যে আমাদের ৬০ ভাগ নৌবহর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন করবো; তবে এটা শুধু এশিয়া অঞ্চলে মার্কিন উপস্থিতি বাড়ানোর কৌশলের জন্য। চীনকে দমন করার ইচ্ছা আমাদের নেই। ’ বৃহস্পতিবার ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল ‘টাইম নাউ’-এর এক খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর ঘাঁটি গাঁড়ছে। তবে এ খবরের বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার দিক দিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শনিবার ওই বৈঠকে পেনেট্টা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলের শক্তি কমানো হবে। এজন্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ছয়টি বিমানবাহী জাহাজ, বেশিরভাগ ক্রুজার, ডেসট্রয়ার, কমব্যাট শিপ ও সাবমেরিন মোতায়েন করা হবে। এছাড়া এশিয়া অঞ্চলের মিত্র দেশগুলোর সাথে সামরিক প্রশিক্ষণের মহড়া বাড়ানো হবে। এসব দেশে প্রশিক্ষণের জন্য যেসব সেনা মোতায়েন আছে তার সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলেও জানান মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলের সামরিক শক্তি বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট সমস্যা কিংবা সামরিক ব্যয়সঙ্কোচন কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইতিমধ্যে প্রতিরক্ষা বিভাগ পাঁচ বছরের বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছে। ’ তবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবহর মোতায়েনের এই খবরে আঞ্চলিক শক্তি চীন বিরূপ মনোভাব দেখিয়েছে। চীন মনে করে, দেশটিকে ঘিরে ফেলার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে সামরিক উপস্থিত বৃদ্ধি করছে। অবশ্য এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভুল বুঝবেন না।

আমরা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে আমাদের সামরিক শক্তির একটা ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছি মাত্র। ’ দীর্ঘদিন ধরে চীন সাগরে মার্কিন মিত্রদেশ, বিশেষ করে ফিলিপাইনসহ বেশ কয়েকটি দেশের সাথে এ অঞ্চলের দ্বীপগুলো নিয়ে চীনের দ্বন্দ্ব চলছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহর মোতায়েনের ঘোষণা বেইজিংয়ের জন্য যেমন বিরক্তিকর, তেমনি এটিকে তাদের প্রতিপক্ষদের উসকানি দেয়ার শামিল হিসেবে মনে করছে চীন। গত জানুয়ারিতে চীনের সরকারি গণমাধ্যমে বলা হয়, এশিয়া অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি শান্তি ও উন্নয়ন বিঘ্নিত করবে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রচেষ্টাকে ‘শক্তি প্রদর্শন’ আখ্যা দিয়ে বলে, ‘তাদের কুমতলব আছে।

’ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিয়ন পেনেট্টাও স্বীকার করেছেন, ‘আমাদের সামরিক শক্তি বাড়ানোর খবরটা চীনের জন্য বিরক্তির বিষয়। তবে আমি আগামী বছর বেইজিং সফর করবো। আশা করি, তারা আমাদের ভুল বুঝবে না। ’ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।