আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আহ উন্নতি! বাহ উন্নতি!

জানি না কেন লিখি! তবু লিখি মনের খেয়ালে, পরিবর্তন করার মানসে, পরিবর্তিত হওয়ার মানসে। যদিও জানি সব ব্যর্থ হচ্ছে। তবুও আমি আছি সেদিনের সেই আলোকময় প্রত্যুষার আগমনের অপেক্ষায় নারী উন্নয়নে বোধ করি বাংলাদেশের মত এত অগ্রগতি বিশ্বের আর কোন দেশ করতে পারে নি। আমাদের নেতা নেতৃরা গর্ব করে বলে থাকেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী নারী, প্রধান বিরোধীদলীয় নেতৃ একজন নারী, সংসদের স্পীকার একজন নারী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রিও একজন নারী ছিলেন। এত উচু উচু পদে নারীদের আসীন দেখে যারপরনাই খুশি না হয়ে পারছি না।

দেশে ব্যাপক নারী উন্নতি ঘটেছে। বাসের মধ্যে কমপক্ষে নয়টি নারী আসন নির্দ্ধারিত। কর্পোরেট লেভেলের উচু উচু পদে নারীদের অবস্থান। পুলিশে নারী, র‌্যাবে নারী, সেনাবাহিনীতে নারী। কোথায় নেই তারা? তাই বলি পৃথিবীর আর কোন দেশ কি দেখাতে পারবে রাষ্ট্রের এত উচু পদগুলিতে নারীরা আসীন আছে? নারী স্বাধীনতার দেশ আমেরিকায়ও নারীদের এত উন্নতি হয় নি।

তাই এখন থেকে তাদের কাছ থেকে আমরা নারী মুক্তির সবক শুনব না। তাদেরকেই এখন থেকে আমরা সবক শোনাব। তবে আমেরিকান কোন বুদ্ধিমান লোক যদি থেকে থাকেন তাহলে হয়তো পাল্লা দিয়ে বলবেন, কেন- আমাদের প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা, তাকে আপনারা চেনেন না? যিনি কিনা দুনিয়া পরিচালনা করেন, যার হুঙ্কারে তাবৎ সন্ত্রাসীরা প্যান্ট ভিজিয়ে দেয়, সেই ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্টের বউও তো একজন নারী! যা হোক, রসিকতা বাদ দিয়ে এবার কাজের কথা বলি। এই যে নারী উন্নতি ঘটল, নারীরা উচু উচু আসনে আসীন হয়েছেন, সত্যিকার অর্থে নারীর উন্নতি আসলে কতটুকু? নাকি যোগ্যতার বদলে পুরুষদের করুণায় তারা কথিত নারী স্বাধীনতা ভোগ করছে? ভয় পাই পাছে এই সত্য বললে নাকি আবার লোকে আমায় নারী বিদ্বেষী ঠাহর করে বসেন! আমাদের নারী সাংসদগণ সংসদে যে ইতিহাস রচনা করে চলছেন, তাতে আমি লজ্জিত না হয়ে পারছি না। ছিঃ, ছিঃ এ আমি কি বলছি? আমি কি নারী যে আমার লজ্জা পেতে হবে? তবে হ্যাঁ, নারী উন্নতির নাম যদি এই হয় তাহলে একজন পুরুষ হয়ে এই উন্নতির সমর্থন করে লজ্জা পাওয়াই উচিতই বটে! পুুরুষের করুণায় বাসের ভেতর নয়টি আসন পেয়ে তুষ্ট থাকা কোন কৃতিত্ব হতে পারে না।

এটাকে নারীর উন্নতি বলা যায় না। পুরুষের পাশাপাশি নিজেদের তারা নিজেদের তখনি বসাতে পারবে যখন তারা নিজেরা সেই যোগ্যতা অর্জন করবে। সুতরাং সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়ে গালাগালি করে, কবিতা আবৃত্তি করে, অন্যের কুৎস্যা রটিয়ে নিজেদের উন্নয়ন হয়েছে দাবী করা যায় না। কেননা এই সকল গুণ অশিক্ষিত গ্রাম্য ঝগড়াটে মহিলাদেরও আছে। তারা লেখাপড়া জানেন না, আর এরা লেখাপড়া জানা।

পার্থক্য শুধু এই টুকুই। সুতরাং ‘নারী উন্নয়ন’, ‘নারী উন্নয়ন’ করে মুখে ফেনা তুলে লাভ নেই। তাই নারীদের প্রতি নিবেদন: কারো দয়ায় নয়, করুণায় নয়, নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে উন্নয়ন ঘটান। মিছিল মিটিং আর আন্দোলন করে, দাবী দাওয়া করে নারী উন্নয়ন ঘটবে না। যোগ্যতা অর্জন করুন, শৃঙ্খলা মেনে চলুন।

প্রাকৃতিকভাবেই অধিকার ফিরে পাবেন। আর যদি বাসের ভেতর নয়টি আসন পেয়েই ভেবে বসেন যে আমরা কি হনু (!), অহঙ্কারে স্ফীত হয়ে পুরুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন, বাবার বয়সী পুরুষকে শুধুমাত্র পুরুষ হওয়ার কারণে কড়া কথা বলে উঠিয়ে সিট থেকে উঠিয়ে দেন- তাহলে কিন্তু আপনাদের প্রতিষ্ঠা পেল না। মনে রাখবেন এখনো আপনারা করুণার খাতিরেই ঐ নয়টি আসন বরাদ্দ পেয়েছেন। আর মহিলা সাংসদদের অধিকাংশই কিন্তু সংরক্ষিত আসনের এমপি। ভোটে নির্বাচিত নন।

সো খিয়াল কইরা। খামোশ, প্যান্ট যে পড়ছেন- চেইন লাগান! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।