আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রঙ, রাত আর স্বপ্নের রুপকল্প সংক্রান্ত

ক্লান্ত, বিষণ্ণ, উদ্ভ্রান্ত বিষাদগ্রস্থ ভায়োলিনের মতো বেজে ওঠে রাতের নিরবতা! মোহাবিষ্ট সুরের কোলে জেগে থাকে আঁশটে সত্যের কথকতা... আর ঠিক তার পরপরই আকাশে রোদের মত কোত্থেকে যেনো জ্বলে ওঠে সহস্র নীল, সবুজ এবং নাম না জানা আরো কিছু রঙের ফানুস! জ্বলতে জ্বলতে আকাশটা হয়ে ওঠে বিভৎস সুন্দর জলছবি এক। দৃষ্টি পথে ধেয়ে আসে ক্ষুদ্ধ শালিকের দল, ধারালো নখরের আঁচড়ে দৃষ্টিটুকু চুরি করে নিয়ে যেতে চায়! ছোট্ট শালিকগুলোর হিংস্রতা দেখে অবাক হই। ওদিকে অরক্ষিত মস্তিকে আক্রমণ করেছে গাদাগাদা লাল মাংসপিন্ডে ঢাকা মানব ভ্রূণের দল... এখনো অপরিপক্ক, ফিটাস, প্লাসেন্টেরন ছিঁড়ে তারা ক্যানো বেরোলো... নাকি আমাদের অমানবিক অসারতার বলি হলো ওরা? তা হবে হয়ত, কিন্তু তারা মস্তিস্ক পিপাসায় ক্যানো ভুগছে সেটা নিয়ে একটা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করতে গিয়ে দেখি আমি অনুভূতি শুণ্য। মন্দ লাগে না! এরপর দৃশ্যপট পালটে যায়। অজস্র আলোর সুড়ঙ্গ বেয়ে আমি পড়তে থাকি।

অবসম্ভাবী পতন রোধ করা সম্ভব নয় জেনে আমি অনন্তকাল আর এখনকার ভেতর সময়ের পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করতে থাকি। কিছুকাল পরে সেটাও কার্য্যত অসম্ভব মনে হয়। আমি তখন অতীত সুখস্মৃতি গুলো কল্পনা করতে চাই... কিন্তু আমার অনুভূতি তো কাজ করছে না! অনন্তকালের কাছাকাছি কোন একটা সময় শেষে আলোক-পতন সমাপ্ত হলে পতন ক্লান্তি রোধকল্পে নিজ থেকেই চোখ বুঁজে আসতে চায়, যদিও শরীরে নেই পতন-পরবর্তী কোন ব্যাথা-বিচ্যুতি! কিন্তু কেউ একজন এগিয়ে আসছে দেখে চোখ মেলে তাকাই। লাঠি ভর দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এক থুত্থুরে বুড়ো আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। তাকে দেখে অনেকটা বহুকাল আগে স্বপ্নে দেখা লম্বা সবুজ শিরস্ত্রাণ পরিহিত কাল্পনিক ঈশ্বর বলে ভ্রম হয়! অদৃশ্য থেকে কেউ বলে ওঠে- পড় তোমার প্রতিপালকের নামে! এরপর নিজেকে আবিস্কার করি অর্ধচেতন, গিলোটিনে বাঁধা অবস্থায় অধমুখে নত! বিশালাকার নীল মঞ্চে প্রস্তুত বিচারের বেদী! আমার সারা গায়ে শেকল পেঁচানো, সহস্র প্রহারে রুধিরাক্ত শরীর।

জাজমেন্ট ডে বলে তবে সত্যিই কিছু আছে বলে মনে হতে থাকে। লাল আলখেল্লায় সজ্জিত জল্লাদ চালিয়ে দেয় ব্লেড, অথচ আমার উপর ঝরে পড়ে অজস্র বৃষ্টি মাখা মেঘ আর সবুজাভ গোলাপের দল। অদৃশ্য সত্ত্বাটি নারীকন্ঠে বদলে যায়। বলে ওঠেঃ আর কত মৃত্যু নেবে? নিজসৃষ্ট ক্লান্ত ত্রিমাত্রিকতায় আর কতবার ধর্ষিত হবে? মৃত্যুই যদি এত আকাংখিত হবে তবে ক্যানো সেদিন হারিয়ে গিয়েছিলে মানবিক বোধের আড়ালে? ক্যানো বুকপকেটে সযত্নে সাজিয়ে রেখেছো ঘুমপরীদের রক্তাক্ত পালক? সমাধীর এই নীল প্রান্তরে ক্যানো এলে তুমি? যাও, যাও মুক্ত তুমি! তোমাকে বরণ করে নিলো এই সবুজ আকাশ আর নীল ঘাসের দল, তোমাকে বরণ করে নিলো শিশিরকন্যারা। কিন্তু আমি ক্যানো যেনো সালফারের কটুগন্ধই পেতে থাকি, আমার কাছে সবুজ আকাশটাকে একখন্ড সিলিকন কাঁচ মনে হয়... তারপর সত্যি টুকরো টুকরো হয়ে ধ্বসে পড়ে মাথার ওপর।

এসিড বৃষ্টির মতো পুরিয়ে দিয়ে যায় পথ, বৃক্ষরাজী আর অদ্ভুত ফুল, পাখি সজ্জিত তথাকথিত সমাধি শহর। ধ্বংসস্তুপে দিকভ্রান্ত একা আমি দাঁড়িয়ে থাকি, সম্পুর্ণ একা।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।