আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুই দুইটা গার্লফ্রেন্ড লইয়া পড়ছি আমি ফান্দে !!!

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! -হ্যালো ! -কি কর ? -আমি ? এইতো যমুনা সেতুর উপর দাড়িয়ে আছি । এখনই লাফ দিবো । নূপুর কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো । বোঝার চেষ্টা করছে আমি ঠাট্টা করছি কিনা ? -অপু কি বলছ এসব ? -আশ্চর্য তুমি যেমন প্রশ্ন করবে তেমন করে উত্তর দিবো না ? এই সাত সকালে মানুষ কি করে ? নিশ্চই ঘুমাবে ! তাই না ? নুপুর খানিকটা অভিমানের সুরে বলল -তুমি সবসময় আমার সাথে এমন কেন কর ? -কেমন করি ? যেমন প্রশ্ন করবে তেমন উত্তর দিবো না ? -হ্যা । আমিতো এমন কথাই বলি ? এই প্রশ্নটা যদি নিশি করতো তাহলে কি এমন করে উত্তর দিতে ? কথাটা অবশ্য সত্য ।

আমি নুপুর কে বললাম -দেখো নুপুর আমি তোমাকে আগেই বলেছি যে নিশির সাথে তুমি নিজেকে কমপেয়ার করবা না । ওর অবস্থান আর তোমার অবস্থান এক না । কথাটা বেশ রূঢ় ভাবেই বললাম । কিন্তু পরক্ষনেই মনটা খারাপ হয়ে গেল । মনে হল সকালবেলা করে মেয়েটার মনটা খারাপ না করালেও পারতাম ।

ফোনের ওপাশ থেকে কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না । নূপুর নিশ্চই এখন কাঁদছে । আমার একটু কঠিন কথাতেই মেয়েটার চোখে জল চলে আছে । আমি কণ্ঠ খানিকটা নরম করে বললাম -নূপুর ! কোন সাড়া শব্দ নাই । আবারও ডাক দিলাম ।

-কথা না বললে কিন্তু ফোন রেখে দিবো ? শুনতে পাচ্ছ তুমি ? নূপুর ধরা গলায় বলল -শুনতে পাচ্ছি । -কাঁদছো কেন ? -কাঁদছি না । -অবশ্যই কাঁদছ ? এবার খানিকটা কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম । -আমি কাঁদলে তোমার কি ? আমি কি তোমার কিছু ? একটু খারাপই লাগল নিজের কাছে । বললাম -আচ্ছা ঠিক আছ , সরি ! -সরি বলার দরকার নাই ।

আমি কষ্ট পাই কি পাই না এসব নিয়েতো তোমার কোন মাথা ব্যাথা নাই । আমিতো তোমার জীবনে ইম্পর্টেন্ট কেউ নই । আমি বুঝলাম নূপুর বেশি অভিমান করেছে । আর খানিকটা অবাকও হচ্ছি । আগে মেয়েটা এমনতো করতো না ।

আর এমনটা করার কথাও তো ছিল না । যতই দিন যাচ্ছে নূপুরের আচরন কেমন বদলে যাচ্ছে । আর আমি দিন দিন চিন্তিত হয়ে উঠছি ! -আচ্ছা বল কি করলে তোমার মন ভাল হবে ? এবার আরো একটু ফোঁপানোর আওয়াজ পেলাম । এই মেয়ে গুলো সবসময় এরকম করে ছেলেদের কাছ থেকে জিতে যায় । বললাম -বল কি করলে তোমার মন ভাল হবে ?? -কিছু করতে হবে না ।

-দেখো নূপুর এমন সুযোগ কিন্তু আর আসবে না । নিশি কয়েক দিন ধরে আমার সাথে রাগ করে কথা বলছে না । সুতরাং ও দেখা করতে চাইবে না । পরে কিন্তু দেখা করতে চাইলেও পারবে না । নূপুর কিছুক্ষন ভাবলো ।

আমি খুব ভাল করে জানি ও দেখা করবেই । আমার সাথে দেখা করার সুযোগ কি ও মিস করে ! -আচ্ছা বিকাল বেলা দেখা করি ? আচ্ছা । -অনেক ক্ষন থাকবো কিন্তু । -আচ্ছা বাবা থাকবো । নূপুর বাচ্ছা মেয়েদের মত হেষে উঠল ।

ফোন রাখার পর বাথরুমে ঢুকলাম । আর জগতের সব জটিল ভাবনা বাধরুমে ঢুকলেই আমার মনে পড়ে । আচ্ছা নূপুরের সাথে এভাবে মেশাটা কি ঠিক হচ্ছে?? অনেক বার এই প্রশ্নটা আমি নিজের কাছে করেছি । কিন্তু ভাল করে উত্তর পাইনি । একবার মনে হচ্ছে আমি যা করছি ঠিক করছি ।

নুপুরের সাথে মেলামেশাটা অন্যায় না । আরেকবার মনে হচ্ছে কাজটা মনেহয় ঠিক হচ্ছে না । নিশি যে দিন জানতে পারবে সেদিন যে কি করবে কে জানে ? কিভাবে নিবে এইটাই হল ব্যপার !! নুপুরের ব্যাপরে আমি সব সময় কনফিউজড । মেয়েটা আসলে যে কি চা্য আমি ঠিক বুঝতে পারছি না । প্রথমে কেবলে বলেছিল যে ওর সাথে কেবল যোগাযোগ রাখলেই ও খুশি ।

আর কিছু ও আমার কাছ থেকে চায় না । মেয়েটার ঐদিন কার আকুতি আমিম কিছুতেই ফেলতে পারি নি । কিন্তু দিনদিন ওর আচরন বদলাচ্ছে ! দিনদিন ও এমন একটা ভাব শুরু করেছে যেন আমি ওর বয়ফ্রেন্ড ! অবশ্য নূপুর আমাকে নিজের বয়ফ্রেন্ডই মনে করে । কি অদ্ভুদ ভাবেই না নূপুরের সাথে পরিচয় হয়ে গেল । আমি অন্তত ভাবি নি কোনদিন এমনটা হতে পারে !! তারপরই ওর সাথে যোগাযোগ শুরু ।

বলতে গেলে কেবল ওর আগ্রহেই ওর সাথে মেলামেশা শুরু । নুপুরের সাথে পরিচয় পর্বটা এখান থেকে জানতে পারবেন ঐ দিনের পর থেকে প্রায় প্রতিদিন অফিসের পর নূপুর আমার সাথে দেখা করতে আসতো । প্রথম প্রথম এড়িয়ে যেতে চাইতাম , কিন্তু কেন জানি নিজের কাছেই খারাপ লাগতো । প্রতিদিন অফিস থেকে বের হয়ে দেখতাম মেয়েটা দাড়িয়ে আছে ! সামনে দিয়ে চলে গেলেও ডাক দিত না । কেবল দাড়িয়েই থাকতো ! আর যখন ওর চোখের দিকে চোখ পড়তো কেমন টা অপরাধবোধ কাজ করতো নিজের মধ্য !! কেন কে জানে?? তাই নিজেই ওর সাথে কথা বলা শুরু করলাম ।

দেখতাম আমার সাথে কথা বলার সময় ওর চোখে মুখে কেমন একটা আনন্দের একটা আভা থাকতো । এটা আামর কাছে ভাল লাগতো । আমার একটু কথা বলাতে যদি কেউ আনন্দ পায় তাহলে ক্ষতি কি?? একদিন ওকে কিজ্ঞেস করলাম -আচ্ছা তুমি প্রতি দিন যে এসে দাড়িয়ে থাকো এটা কিভাবে পারো?? ব্যাংকের চাকরি করে এতো জলদি কিভাবে বের হও অফিস থেকে নূপুর হাসলো । বলল -আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি । -সেকি !! কেন ? -আামর চাকরি করার দরকার হয় না ।

চাকরি করতাম কেবল সময় কাটানোর জন্য । আর এখন সময় কাটে ..... নূপুর কথাটা শেষ না করে হাসলো । আমি বললাম -দেখো, তুমি নিশির কথা নিশ্চই জানো !!! আমি .... আামকে শেষ করতে না দিয়ে নুপুর বলল -আমমি সব জানি । আমাকে কিছু বলার দরকার নাই । আমি তোমার কাছে কিছু চাইবো না ।

কখনই কোন আবদার করবো না । কেবল আমার সাথে একটু যোগাযোগ রাখো । তোমার সাথে কথা বললেই আমি খুশি । -খুশি হলেই ভাল । কিন্তু আমি নূপুরে এমনটা করার পেছনে কোন কারন তখনও জানতাম না ।

মানে থিক মত ধরতেই পারছিলাম না । দুনিয়াতে এতো মানুষ থাকতে আমার সাথে কথা বলার ব্যাপারে ওর কেন এতো আগ্রহ?? কারনটা জানতে পারলাম যেদিন ওর বাসায় গেলাম । ঢাকার বেশ অভিজাত এলাকাতেই । বাধরুম থেকেই শুনতে পেলাম মোবাইলে ফোন এসেছে । রিংটোন শুনেই বোঝা যাচ্ছে নিশি ফোন করেছে ।

কিন্তু ওর তো ফোন করার কথা না । গত পরশুদিন নিশির সাথে বেশ ভাল রকমই ঝগড়া হয়েছে । আর ঝগড়া হলেই নিশি আমাকে ফোন দেওয়া বন্ধ করে দেয় । যতক্ষন না আমি অনুনয় বিনয় করে ক্ষমা চাইবো ততক্ষন তার ফোন দেওয়া বন্ধ থাকবে । সেই তুলনায় আজ ওর ফোন আসা টা একটু অন্য রকম ।

তাড়াতাড়ি বাথরুম থেকে বের হয়ে রিসিভ করলাম । ফোন রিসিভ করেও ওপার থেকে কোন সাড়া শব্দ পেলাম না । দুতিন বার হ্যালো বলার পরও কোন উত্তর এল না । আরে কথা যদি নাই বলবি তাহলে ফোন দেওয়ার মানে কি ? আমি খানিকটা অধৈর্য হয়ে বললাম -নিশি কথা না বললে কিন্তু ফোন রেখে দিবো । এ কথায় মনে হল কাজ হল ।

-তুমি অনেক কঠিক হয়ে গেছ ! কি রে ভাই আজ সবাই আমাকে এমন পাষান বলতেছে ! একটু আগে নূপুরও একই কথা বলল এখন নিশিও তাই বলছে ? -আমি এমন কি বললাম ? -আগে ঝগড়া হলে তুমি কত ফোন দিতে আর আজ দুদিন ধরে তুমি আমাকে ফোন দাও না । তুমি আর আমাকে ভালবাসো না । -এসব কেন বলছো ? -তাহলে তুমি কেন ফোন দাও নি ? কেন দাও নি ? -কাল আমি খুব বিজি ছিলাম । সত্যি বলছি । খুব বেশি বিজি ছিলাম ।

কথাটা সত্যি । আমি সত্যি কাল অনেক বিজি ছিলাম । -তা তুমি মিথ্যা বলছো । তুমি আর আমাকে ভালবাসো না । -না সোনাপাখি ।

প্লিজ এমন কথা বল না । আরো অনেক সোনাপাখি মধুসোনা বলতে হল তারপরই ও নিশি একটু শান্ত হল । তারপর বলল -ঠিক আছে তুমি এখন বের হও । আজ সারাদিন তুমি আমার সাথে থাকবে । -সারাদিন ? -কেন ? সারাদিন থাকলে কি সমস্যা ? -না না কোন সমস্যা নাই ।

না মানে বিকেল বেলা আমার একটা এপোয়েন্টমেন্ট ছিল । -ক্যানসেল কর । -কিন্তু ......... -কোন কিন্তু না । ঠিক আছে ? -আচ্ছা । নিশিকে না বলার উপায় নেই ।

কিন্তু নূপুর কে যে কথা দিয়েছিলাম । কি আর করা ? নূপুরকে ম্যানেজ করতে হবে । ও শুনবে ! আর না শুনলে আমার কিছু অবশ্য করার নেই । আমার কাছে নিশি খুব বেশি ইম্পর্টেন্ট । আর নূপুর !! প্রথম প্রথম আমি খুব একটা অবাক হতাম ।

নূপুর আমার প্রতি এমন টান কেন অনুভব করত আমি ঠিক বুঝতাম না । একদিন অফিস থেকে বের হতে হতে বেশ দেরি হয়ে গেছিল । একবার মনে হয়েছিল যে নূপুর হয়তো বাইরে ওয়েট করছে ! বের হয়ে দেখলাম সত্যিই তাই । -এতোক্ষন ওয়েট কেন করছো ? একবার ফোন দিলে হত না ? নূপুর হাসল । -তুমি ব্যস্ত ছিলে ।

তোমাকে বিরক্ত করতে চাই নি । ঐ দিন বেশ রাত পর্যন্তই ছিলাম ওর সাথে । যখন বাসায় যাবার সময় হল নিজ থেকেই ওকে বাসায় পৌছেদিলাম । বেশ অভিজাত এলাকায় ওর ফ্লাট । ও আমাকে প্রায় জোর করেই ওর ফ্লাটে নিয়ে গেল ।

প্রথমে না না করলেও যেতেই হল । আসলে এতো ওর বাসায় যাওয়াটা কেমন শোভন মনে হচ্ছিল না । কিন্তু তবুও গেলাম । পুরো ফ্লাট টা ঘুরে ঘরে দেখছিলাম , ওর বেডরুমে ঢুকেই খানিক টা ধাক্কার মত খেলাম । বাম পাশের প্রায় পুরো দেওয়াল জুরে নূপুরের বড় একটা ছবি ।

নূপুরকে জড়িয়ে একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে । দুজনকেই খুব বেশি খুশি মনে হচ্ছে । একে বারে পারফেক্ট কাপল । আমার ধাক্কা লাগার কারন হল নূপুরের পাশের ছেলেটা দেখতে মোটামুটি আমার মত ! আমার থেকে একটু ফর্সা আর একটু স্বাস্থ্য ভাল । তাছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই ।

প্রথম চান্সে যে কেউ বলবে যে আমি যেন ছবিতে পোজ দিয়ে দাড়িয়েছি । আমি মোটামুতি বুঝতে পারলাম নূপুর কেন আমার প্রতি আমার প্রতি এমন অচরন করছে । নূপুর পাশে এসে কখন এসে দাড়িয়েছে টের পাই নি । হঠাৎ‍ ওর উপস্থিতি টের পেলাম । ও নিজ থেকেই কথা বলা শুরু করল ।

-ও আমার হাজবেন্ড ! দুবছর আগে আমাদের বিয়ে হয়ে ছিল । যদিও পারিবারিক ভাবেই হয়েছিল কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে সুমন আমার জীবনে এমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল ...... -তারপর ? কোথায় উনি ? -নেই । মরে গেছে ? নূপুর কেমন ভাবে কথাটা বলল যেন । আমি আর কিছু বললাম না । আমার মনে হচ্ছিল কথা গুলো ওকে কষ্ট দিচ্ছে ।

-জানো অপু ও যে নেই আমি এইটা মানতেই পারি না । তোমাকে যখন দেখি তখন মনে হয় যে আমার বিশ্বাসটা মিথ্যা না । বলতে বলতেই নূপুর আমাকে জড়িয়ে ধরল । কেমন ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল -আমি তোমার কাছে কোন দিন কিছু চাইবো না । কেবল এই অনুভূতি টুকু কেড়ে নিও না ।

আমার বাঁচার অবলম্বন টুকু নিও না প্লিজ । ঐ দিন আমার মনটা খারাপ হয়েছিল খুব । খুব খারাপ লেগেছিল নূপুরের জন্য । আমার কেবল মনে হচ্ছিল আমার জন্য কেউ যদি একটু ভাল থাকে তাহলে দোষ কোথায় ? নিশি ফোন রাখতে আরো সময় নিল । এখন কি করবো ? একটু আগে নূপুর কে কথা দিয়েছি যে বিকালে ওর সাথে দেখা করবো ।

আর নিশি একটু পরই আমার সাথে দেখা করতে । কি করবো ?? নিশিকে না বলার উপায় নেই । আর নূপুর ! নূপুর নিশ্চই বুঝবে !! একটু মনখারাপ করবে হ্য়তো । কিন্তু কি করা?? নূপুরকে ফোন দিলাম । -বল ! -একটা কথা ছিল ! নূপুর খানিকটা সময় নিল ।

তারপর বলল -নিশি ফোন দিছিল ? -হুম । -বিকেলে দেখা করতে চেয়েছে ? -হুম । -আচ্ছা ! নূপুর চুপ করে থাকল । আমার কেন জানি মনে হল ও এখ কাঁদবে !! হয়তো এরই মধ্যে ওর চোখে পানি চলে এসেছে । -আই এম সরি নূপুর ।

-না না ঠিক আছে । আমি আর বেশি কথা বাড়ালাম না । নূপুরের জন্য খারাপ লাগছিল । কিন্তু নিশির খারাপ লাগাটা আমার কাছে বেশি জরুরী । যদি উপরের লিংকে কাজ না হয় তাহলে এখানে আছে আগের পর্বটা ! বুঝতাছিনা লিংকটা কাজ করছে না কেন?? আগের গল্পটা আমার প্রোফাইলে গিয়ে পড়ে আসতে হবে ।

আগেরটা নাম : মেয়েটা আমার পিছে লাগছে ক্যান ?? আমি তো কিছু বুঝতাছি না !! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।