আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাম ক, চেনস না ওজারে' যৌন নির্যাতিত কিশোরীর জিন-ভূত ছাড়াল পুলিশ!

Student : B.Sc in EEE "নাম ক, তুই আইছিস ক্যান, চেনস না ওজারে। নাম ক, তোর সাথে আর কে আছে, বুঝবি মজা, নাম ক। " জিন বা ভূত ছাড়ানোর নামে যৌন নির্যাতীত হয়ে মানসিকভারসম্য হারানো ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে পিটিয়ে পিটিয়ে, কখনও আঙ্গুলের ডগায় লোহা চেপে ধরে, কখনও লাথি মেরে দূরে ছিটকে ফেলে এ কথাগুলো বলছিল এক ওজা। অন্য কোথাও নয়, খোদ রাজধানীর কদমতলী থানায় গত বৃহস্পতিবার রাতে এ বর্বর ঘটনা ঘটেছে। পরে অচেতন অবস্থায় থানা থেকে ওই কিশোরীকে ঢাকা মেডিকেলে এনে ওসিসিতে ভর্তি করেন তার স্বজনরা।

হাসপাতালে কিশোরীর বড়বোন আকলিমা জানান, ওই কশোরী এখন কিছুই বলছে না। অসংখ্য প্রশ্নের জবাবে বলছে, কাকা শরবত খাওয়ানোর পর লাইট নিভিযে দেয়'। আকলিমা জানায়, নির্যাতীত কিশোরী কদমতলী এলাকার ইস্মাত নামের একটি সুপার গ্লু প্রস্তুত কারখানার শ্রমিক। গত ২৫ দিন আগে কারখানা থেকে ফিরে কিশোরী অস্বাভাবিক আচরন করতে থাকে। সে কারও সাথে কথা বরতে চায় না, কি হয়েছে তাও খুলে বলে না।

কিশোরীর কাছ থেকে গত ১৫ দিনে পাওয়া ভাষ্য অনুয়ায়ী আকলিমা জানান, কারখানার আবু তালেব নামের এক শ্রমিককে কিশোরী চাচা বলে ডাকত। ২৫ দিন আগে কারখানা ছুটির পর তালেব ও তার সহকর্মী মকবুল হোসেন ওই কিশোরীকে বাসায় ডেকে শরবত খেতে দেয়। এরপর কিশোরী অচেতন হয়ে পড়তে থাকলে বাসার লাইট বন্ধ করে পাষবিক নির্যাতন চালানো হয় তার উপর। একপর্যায়ে কিশোরীর জ্ঞান ফিরলে তাকে তারা বাসায় পাঠিয়ে দেয়। বাসায় ফিরেই সে অস্বাভাবিক আচরন করতে থাকে।

পরে তাকে গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয়। সেখানেও তার অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে ঢাকায় এনে গত বৃহস্পতিবার ওই শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে কিশোরীকে নিয়ে থানায় আসেন তারা। কিন্তু কারখানার মালিক মীর হোসেন এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় ভূতে ধরার নাটক সাজায় পুলিশ। এরপর থানায় ওঝা ডেকে চলে ভূত ছাড়ানোর প্রক্রিয়া। একপর্যায়ে এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে ওই দুই শ্রমিককে থানায় দরে আনা হয়।

কিন্তু এরপরেও পুলিশ মামলা না নিয়ে গতকাল ওই দুই নির্যাতনকারীকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। রহস্যজনক কারণে ওই দু'শ্রমিককে রিমান্ডেরও আবেদন জানায়নি পুলিশ। অন্যদিকে কিশোরীর পরিবারের অভিযোগের পরেও মামলা নেয়নি পুলিশ। শুধু তাই নয়, ওই কিশোরীকে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা না করে রাতে থানায় ওজার কাছে রেখে যেতে বলা হয়। কিন্তু স্থানীয়দের পরামর্শে স্বজনরা পুলিশের কাছ থেকে ওই কিশোরীকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন।

ওই দুই শ্রমিককে গ্রেফতারের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আউয়াল জানান, 'কিশোরীকে ভূতে ধরেছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তাকে নির্যাতন করা হয়নি। ' হাতে লোহা চেপে ধরা হয়েছিল কেন_এ প্রশ্নের জবাবে এসআই জানান, 'ভূত ছাড়াতেতো লোহা লাগেই। ' এসআই জানান, 'ওদের কালকে (বৃহস্পতিবার) ধরে এনেছিলাম। আদালতে ফিফটিফোরে চালান করে দিয়েছি।

ওদের জামিন হয়েছে সম্ভবত। ' প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা : কিশোরীকে কদমতলী থানায় আনার পরেই শুরু হয় চারপাশ থেকে অসংখ্য প্রশ্ন, কিন্তু কিশোরীর মুখে কোন উত্তর নেই। কিশোরীকে জিনে বা ভূতে ধরেছে এমন বিশ্বাস থেকে কদমতলী থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক এবং এসআই এক ওজাকে ডেকে আনেন। এরপর কিশোরীর উপর চলে ওজার নির্যাতন। কখনও কিশোরীর আঙ্গুলের ডগা লোহা দিয়ে চেপে ধরা হয়।

আবার কখনও পিটাতে পিটাতে পড়া হয় মন্ত্র। কখনও কিশোরীকে লাথি মারা হয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।