এসো নীপবনে
এক দেশে ছিল এক রাজা- বৃদ্ধ, অথচ ভীমরতিগ্রস্থ এবং অত্যাচারী। সুন্দরী মেয়ে দেখলেই তিনি বয়না তোলেন। ছলে হোক বলে হোক, বিয়ে করে ফেলেন।
ঐ রাজার রাজধানীতে বাস করতেন এক স্কুল শিক্ষক। বৃদ্ধ এবং অভাবী।
কিন্তু তার মেয়েটি ছিল অত্যন্ত সুন্দরী। তাকে দেখলে সবারই মনে হতো রাজ পরিবারেই তার জম্ম হওয়া উচিত ছিল। তার বয়সও ছিল বিয়ের উপযুক্ত- ষোলো। মেয়েটি লেখাপড়া করত, খেলাধূলা করত। খুব ভালই কাটত তার দিন।
একদিন কোন এক রাহুর দোষে সে পড়ে গেল রাজার চোখে। রাজা তর্জনী উচিয়ে বললেন- 'ঐ মেয়ে আমার চাই। ' সুতরাং ডাকা হলো বৃদ্ধ স্কুল মাস্টারকে।
রাজা প্রস্তাব দিলেন- 'আপনার মেয়েকে আমি বিয়ে করব। '
'হুজুর'- স্কুল মাস্টার বললেন, 'তা কিভাবে হয়? আমার মেয়ের সবে মাত্র ষোলো।
আর আপনি...'
'আমি কি? চুপ করুন! আমি রাজা- এটাই বড় কথা। আপনার মেয়ে আমার কাছে সুখেই থাকবে। সে রাজরাণী হবে। '
'হুজুর, আপনি আমাকে অন্য যে কোন কঠোর আদেশ করুন। আমি তা মনবো।
এমনকি আপনার রাজ্য ছেড়ে চলে যেতেও রাজি আছি। '
'বুড়ো আমি তোমাকে দুটো সুযোগ দিচ্ছিঃ হয় তুমি আমার সাথে তোমার মেয়েকে বিয়ে দিবে, না হয় তুমি আমাকে তোমার মেয়ের সাথে বিয়ে দেবে। '
বুঝতেই পারছেন রাজা কি বুঝাতে চাচ্ছেন।
'হুজুর, আপনি দয়ালু, আমাকে অন্তত একটি সুযোগ দিন। '
রাজার দয়া হলো, তিনি বললেন- 'ঠিক আছে, তোমাকে একটা সুযোগ দেয়া হবে।
আগামীকাল সগরতীরে আমার বাগানবাড়িতে তোমার মেয়েকে নিয়ে আসবে। লটারী হবে। '
বৃদ্ধ মাস্টার বিষন্ন মনে বাড়ি ফিরলেন। মেয়েকে সব ঘটনা খুলে বললেন।
পরদিন দুই পক্ষ যথাস্থানে এসে হাজির।
রাজা মেয়েটিকে বললেন, 'আমি এই কালো কাপড়ের থলির মধ্যে দুটো পাথর রাখব- একটি কালো এবং একটি সাদা। তুমি চোখ বন্ধ ক'রে এর মধ্য থেকে একটি পাথর তুলবে। পাথর যদি সাদা হয়, তাহলে তুমি মুক্ত। আর যদি পাথর কালো তোলো, তাহলে তোমার সাথে আমার বিয়ে হবে। '
মেয়েটি ঘেমে উঠল।
এদিকে রাজা করলেন কি, তিনি একটু দূরে গিয়ে দুটো পাথর তুললেন তাদের উভয়ই কালো। সে যেন পাথর হয়ে গেল। তাহলে কোনো রেহাই নেই তার?
রাজা, থলিটি নিয়ে মেয়েটির দিকে এগিয়ে গেলেন। সে একটি পাথর তুলে নিল। কিন্তু মুঠি খুলল না।
মুঠি খুলে আর কি হবে। সে তো জানে যে সে কালো পাথরই তুলেছে। তার মাথায় কোনো বুদ্ধিই খেলছিল না।
কিন্তু শুলে অবাক হবেন, মেয়েটি জিতে গিয়ে ছিল। বিয়ে করতে হয়নি রাজাকে।
বলুন তো কিভাবে?
আরেকটু ভাবুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।