দেশের অন্যতম কীর্তিমান ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘কলম’-এর সম্পাদক কবি সাজজাদ হোসাইন খানের ৬২তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৪৮ সনের ১৬ মে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বি-বাড়িয়া জেলা সদরের ঘাটুরা গ্রামে। সফিকুল হোসেন খান ও আয়েশা খাতুন দম্পতি সন্তান সাজজাদ হোসাইন খান স্বাধীনতা উত্তর এদেশের ছড়াসাহিত্য ও শিশুসাহিত্যে রেখেছেন অনবদ্য অবদান। তার ছড়াগ্রন্থের মধ্যে রাজার কথা প্রজার কথা, নীল সবুজের হাট, স্বৈরাচারের ঐরাবত, মেঘের খামে চুমকি দানা, জোসনামাখা চাঁদ, ভাঙা চাঁদের রাঙা পাথর ও তারার গগন উল্লেখযোগ্য।
তার শিশুতোষ গদ্যগ্রন্থ ‘সোনালী শাহজাদা’ একটি অন্যতম জনপ্রিয় গ্রন্থ। এছাড়াও তিনি লিখেছেন দুই কাননের পাখি, নীল সাগরে ভূতের বাড়ি ও লেংড়া জীনের বাগানবাড়ি’র মতো উল্লেখযোগ্য শিশু-কিশোর সাহিত্য। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে তার সম্পাদনায় প্রকাশ হয় সাহিত্য সংকলন ‘বিদ্রোহী বাংলা’। সাজজাদ হোসাইন খান বাংলা একাডেমী ও জাতীয় প্রেসকাবের সদস্য, বাংলা সাহিত্য পরিষদ ও ইতিহাস পরিষদের (ঢাবি) জীবন সদস্য এবং ঢাকা শিশু-কিশোর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য।
জনাব খান পারাবার সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৫) জাকারিয়া শাহ স্মৃতি পুরস্কার (২০০২), কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার (২০০৭), লেখা প্রকাশ সাহিত্য পুরস্কার (২০০৮), রকীবুল ইসলাম ছড়াপদক (২০০৮), শব্দশীলন একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার (২০১০)-এ ভূষিত হন।
জাগুন
আগুন শুধু আগুন
পুড়ছে বাড়ি
পুড়ছে হাঁড়ি
পুড়ছে মনের ফাগুন।
আগুন শুধু আগুন
পুড়ছে আয়ু
পুড়ছে বায়ু
ঘুম থেকে সব জাগুন।
ছড়া
ছড়া হল ছন্দের
ঝংকারে
টুপটাপ বৃষ্টি
জড়া যেন শব্দের
দোলনায়
অনুপম সৃষ্টি।
ছড়া অই সাগরের
সৈকতে
জহরত পান্না
ছড়া আজ সবহারা
বুক ফাটা কান্না।
ঘাম
সৃষ্টি গুলো বৃষ্টি হয়ে নামুক
অনাচারের পাগলা ঘোড়া
চলতে পথে হোকনা খোঁড়া
অথবা সে হেঁচকা টানে থামুক।
আমরা যারা বেকার মানুষ
উড়াই কেবল কথার ফানুস
গতর তাদের তিক্ত জ্বরে ঘামুক।
ছড়া
ছড়া হোক যুদ্ধের চকচকে তরবার
দেশটারে গড়বার
সত্যরে ধরবার
সাহসের সাথে শুধু মন দিয়ে লড়বার।
ছড়া হোক যুদ্ধের ক্ষুরধার তরবার
মোগলের দরবার
তাজি ঘোড়া চড়বার
শহীদের হাত ধরে বারে বারে মরবার।
বাঙাল
কাশিমবাজার কুঠি
ধরলো চুলের ঝুটি
জোসনা রোদের
খাসজমিনে
বন্ধ ছোটাছুটি।
বোয়াল মাছের গালে
শক্ত সুতার জালে
মস্ত দীঘির
বিশাল ঢেউয়ে
বমাল ধরা পুঁটি।
হস্তিনাপুর কুঠি
খামছে ধরে ঝুটি
সময় গেলে
উড়াল হাওয়ায়
টানবে কাছে টুৃটি।
ঘষেটি-মীর-শেটে
উঠান কেটে কেটে
সেই উঠানে
রোপণ করে
তিক্ত বিষের ঘুটি।
মাছ-মাংস ভাতের বদল
খাবার এখন রুটি
ভাটির দেশের বাঙালেরা
শক্ত করো মুঠি।
ঘোড়াদের আন্ডা
সাজজাদ হোসাইন খান
এটা দেবো ওটা দেবো
চন্দন ফোঁটা দেবো
বাঁশ দেবো শক্ত
এতটুকু, ঝরবে না রক্ত।
চাল দেবো তাল দেবো
নৌকার পাল দেবো
খাল দেবো বক্র
সাথে আরো, বিভীষণ চক্র।
উনি যান তিনি যান
আনন্দে খানখান
ঘটি ঘটি দুগ্ধ
চর্ব ও চূষ্যে, আহা কি যে মুগ্ধ!
এটা চাই ওটা চাই
ট্রানজিট-ভিটা চাই
গ্যাস চাই পাইপে
মিয়া সাব, দাও লিখে টাইপে।
লেখালেখি শেষ করে
পদতলে পেশ করে
আসে ফিরে খুশিতে
যদিওবা, ভাঙে নাক ঘুষিতে।
তিনি খান উনি খান কোক্কোলা ঠান্ডা
জনগণ হাতে পেলো ঘোড়াদের আন্ডা।
পাদুকা ও পয়জার
নাসিকা ও চান্দি তাক করো
পাখওয়ালা পয়জারে ফাঁক করো।
কাইভ আর মির্জারা হাঁকছে
ঐ যেনো সারমেয় ডাকছে।
সিকিমের দর্জিরা বংগে
মিরনের সার্ট দেখি অংগে।
ওরা কারা বেগানার চক্র
নিশানের রঙ করে বক্র। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।