আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের যত সংস্কার কুসংস্কার

সাদা-সিধে একজন মানুষ ঘর থেকে বেরুনোর সময় দরজায় ছোট একটা হোঁচট খেলেন। মা কিন্তু সাথে সাথেই আপনাকে বেরুতে দিবেন না আর। 'বাধা পড়ছে। একটু বইসা যাও। ' এমন কেউ কি আছেন এই কথাটা শোনেন নাই? কেন একটু বইসা যাওয়া? আমাদের প্রতিদিনের জীবনের হাজারটা কুসংস্কারের এটা একটা।

এই এক ঘর থেকে বের হওয়া নিয়েই যে কত কুসংস্কার! একটু বাধা পড়লে না জানি কি বিপদ হবে, তাই একটু বসে যেতে হবে। পিছন ডাকলে পথে অমঙ্গল হবে। তাই ঘর থেকে বেরুনোর আগে কখনোই পিছু ডাকা যাবে না। বাসী মুখে বেরুনো যাবে না ঘর থেকে, বাসী মুখে কাউকে বিদায়ও দেয়া যাবে না। বেরুনোর পথে ঝাড়ু থাকাটা অমঙ্গল।

কেউ ঘর ঝাড়ু দিতে থাকলেও সেটা খারাপ। মোট কথা ঝাড়ু থাকাই যাবে না। ঝাড়ু নিয়ে আরো কিছু মনে পড়ল। দুইজন একইসাথে একই ঘর ঝাড়ু দিলে নাকি সংসারে অশান্তি হয়। দুই ঝাড়ু এক জায়গায় গলাগলি করে রাখলেও ঝগড়া হয়।

ঝগড়ার কথায় মনে পড়ল, দুইজনের ছেঁড়া চুল এক জায়গায় রাখলেও ঝগড়া হবে। ছেঁড়া চুল এখানে সেখানে ফেললেও না জানি কি হয়! তাই চুল সব এক জায়গায় জড়ো করে পরে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়। রান্না করতে গেলে ঘোমটা দিতে হবে। ভাত বাড়ার সময়েও ঘোমটা দিয়ে ডান হাতে বাড়তে হবে। রান্না করার সময় কাঠি বা চামচ দিয়ে পাতিলে বাড়ি দেয়া যাবে না।

কুলার বাতাস গায়ে লাগা যাবে না। ঘরের জিনিসপত্র হাত থেকে ঝনাঝন পড়া মানে হল আজ বাড়িতে মেহমান আসবে। ডান হাত চুলকালে নাকি হাতে টাকা আসে, আর বাম হাত চুলকালে টাকা বেরিয়ে যায়। ডান পায়ের পাতা চুলকালে বেড়াতে যায়, বাম পায়ের পাতা চুলকালেও কি যেন হয়, ভুলে গেছি। বাম চোখের পাতার রগ লাফালে খারাপ সংবাদ আসে।

শরীরে তিল নিয়ে আছে বহু কুসংস্কার। পায়ের পাতায় তিল থাকলে বিদেশ যাত্রা আছে। ডান হাতে তিল থাকলে সে হল খাদক, আর বাম হাতে তিল থাকলে ব্যাটা ঘুষখোর। ঠোঁটে তিল থাকলে সুসংবাদ, প্রেম করে বিয়ে করবেন আপনি। যেসব ছেলের নাক ঘামে তাদের বউ অনেক ভালবাসবে।

মেয়েদের ক্ষেত্রেও, নাক ঘামলে স্বামীর আদর পাওয়া যায়। তাই মেক আপ নষ্ট হলেও খবরটা খুব সুখেরই মেয়েদের জন্য। গালে টোল পড়া ছেলেদের দেখতে সুন্দর হলেও এটা অতি দু:সংবাদ। বউ তাড়াতাড়ি মরে যাবে। গালে হাত দিতে নেই।

তাহলে বউ/জামাই এর অমঙ্গল। বিয়ের পরে নতুন বউকে চল্লিশ দিন ঘোমটা দিয়ে থাকতে হবে, কুবাতাস লাগে নইলে। যেসব মেয়ে স্বামীকে ভালবাসে, স্বামীর ক্ষতি না চায় তাদের উচিৎ অবশ্যই অবশ্যই বিয়ের পরে দুই হাতে চুড়ি আর নাকে নাকফুল পরা। ছোটবেলায় কখনো জোড়া কলা, জোড়া কাঁঠালের কোষ খেতে পারতাম না। তাহলে নাকি জমজ বাচ্চা হয়।

গর্ভবতী মায়েদের রাতের বেলায় ঘরের বাইরে যেতে নেই, বাতাস লাগবে। বাচ্চা হলে চল্লিশ দিন ঘরের বাইরে বের করা যাবে না, সাথে লোহা আর আগুন রাখতে হবে। কপালে নয়তো পায়ের তলায় ছোট্ট একটা কাজলের টিপ দিয়ে দিতে হবে। নইলে কুনজর লাগবে। আরো কত কত যে আছে! লিখতে লিখতে টায়ার্ড হয়ে গেলাম।

মনেও পড়ছে না এই মূহুর্তে। মনে পড়লে আবার লিখবো। আর যদি আপনারাও কিছু মনে করিয়ে দেন তো পোস্টে এ্যাড করে দিবো। আজ আসি (যাইতে নাই, তাই আসলাম ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।