মাত্রাতিরিক্ত রকমের জ্ঞেয়ানী জনেরা আমার ব্লগের উটকো অতিথি বলে বিবেচিত হবে।
পোষ্ট আপডেট করা হয়েছে। ......
যাত্রাবাড়ী এলাকায় ভয়াভহ আগুন লেগেছে এই বিষয়ে জানেন কি কেউ?
আগুনের শিখা প্রায় ২০০ ফুট উপরে দেখা যাচ্ছে।
মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছে একটি সিএনজি পাম্প।
আরো একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার জন্য প্রস্তুত হও ঢাকাবাসী।
এই ঘটনা কয়জন জানেন হাত তোলেন।
আগুন লাগা ঢাকাবাসীর কাছে আজ খুবই সাধারান একটি ঘটনা, তাই না? আগুন কি লাগার জিনিস না, লাগব না তো কি করব ছাইরা দিব। আর ভালো মতন লাইগা গেলে ফায়ার ব্রিগেড আছে না; চিন্তা কিসের। পাঁচ ঘন্টা পরে হইলেও আইসা নিভায় দিব; ততক্ষণ আগুনের ভিতর কেং মাইরা পইরা থাকো।
আর যদি মইরা যাও তাইলে কর্তিপক্ষ কোনক্রমেই দায়ী নয়।
গত ১৩ ই মে, ২০১২ রাত আনুমানিক ০১টার কিছু পরে যাত্রাবাড়ী উড়াল সড়কের পাইলিং এর কাজ করতে যেয়ে ভূগর্ভস্থ গ্যাস লাইনে গুতা দেয় বেলহাসা কোম্পানির গুনধর কামলাগন। এর ফলশ্রুতিতে বিশাল বিস্ফোরণ, আমাদের জন্য (যারা কাছাকাছি ছিলাম) মনোরঞ্জনের একটি ব্যবস্থা। কিছু মানুষের হুদাই চিল্লুমচিল্লু; আর সর্বোপরি আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাসের সুনিশ্চিত অপচয়। শালার ভাত রান্না করার জন্য গ্যাস পাই না আর উনারা এই ভাবে ফায়ার ক্রেকার্স বানাইয়া বিনুদুনের ব্যবস্থা করে।
আপনারা মনে করতে পারেন আমি খামোখাই চিল্লাচিল্লি করতেছি।
কিন্তু ভাই একটা বার ভালো করে মনে করার চেষ্টা করেন তো এইটা কি প্রথম দুর্ঘটনা? না, এইটাই প্রথম নয়। মাস খানেক আগেও ঠিক একই রকম ঘটনা এরা ঘটায়। তখন আমাদের এলাকার গ্যাস সংযোগ পুরো একদিন বিচ্ছিন্ন ছিল। অপ্রস্তুত এলাকাবাসী সকালে ঘুম থেকে জেগেই দেখে গ্যাস নাই, মানে সকালের নাস্তা অনিশ্চিত, বাচ্চার খাবার, স্বামীর দুপুরের খাবার, অসুস্থ রোগীর খাবার, দিন মজুর মানুষ গুলোর জন্য সস্তা হোটেল গুলোর আয়োজন সব কিছু যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। সকাল বেলা দোকান গুলোতে পাউরুটি শেষ ৭টা না বাজতেই, আর হোটেলে নাস্তা আনতে যেয়ে যা দেখলাম তা অবিশ্বাস্য বল্লেও ভুল হবে, কারন ৫টাকার পরটার দাম ২০টাকা, ১০টাকার ভাজি ৩৫টাকা।
একজন নির্মাণ শ্রমিককে দেখলাম হোটেলে খাবারের দাম দেখে পাশের টং দোকান থেকে ২টাকা দামের ৩টি বিস্কুট খেয়ে কাজে রওনা দিতে।
এখন আসেন আসল কথায়; বাংলাদেশ সরকারের কোন সংস্থা এই ফ্লাই ওভারের কাজ সমন্বয় করছে তা আমার খুব জানতে ইচ্ছা করছে। কারন কিছু লোকের কাছে শুনছি সমন্বয় হীনতাই নাকি এই দুর্ঘটনার কারন।
দুই দিন পরপর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন গায়েব, কারন যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার পাইলিংএ কাটা পরছে। পরপর দুইবার গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ, করন যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার পাইলিং এর সময় গুতা মারছে।
এখন আমি একটি প্রশ্ন করি আপনাদের কাছে; সমন্বয়হীনতা না কি আমি এইসব জানি না আমার কথা হচ্ছে একটি কোম্পানি কাজ করতে নামার আগে রাস্তার নীচে কি আছে, কোথায় আছে তাই যদি না জানে তাহলে তাদের কাজ করার যোগ্যতা কতটুকু? কাজ শুরু করার আগে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সম্ভ্যাব্যতা যাচাই এবং যেহেতু এইটা ঢাকা শহর তাই এইখানে ঢাকা ওয়াসা, তিতাস, বিটিসিএল, অপটিক ফাইবার, ডেসা, ডেসকো আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যাদের সাথে কোঅপারেশন এর মাধ্যমে কাজ করার কথা তাদের সাথে কতটুকু যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছে এই বিদেশী নির্মান প্রতিষ্ঠান?
আমারও তাই মনে হয়; কারন এখন সরকারের ভাবমূর্তি তেমন একটা ভালো না। আবার তার উপর যদি জনগণ খবর পায় যে একটি অদক্ষ কোম্পানির কাছে কাজ দিয়ে তাদের ঘটানো দুর্ঘটনার ফল আমাদের জাতীয় সম্পদের অপচয় করার মাধ্যমে দিতে হচ্ছে তাহলে জনগণ আবার ফুসে উঠবে।
সেই রাতে পুরা ঢাকাবাসী দেখেছে সেই আগুনের তেজ। যাত্রাবাড়ীর ঘটনা মিরপুর এমন কি উত্তরা থেকেও মানুষ টের পেয়েছে।
এত পরিমান গ্যাস নিরগত হয়েছে যে মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যে সামান্য বৃষ্টির সাথে ভারী বজ্রপাত শুরু হয়ে গিয়েছিল।
এবার একটু চিন্তা করুন কি পরিমান গ্যাস নিরগত হলে পরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এখন অনেকে হয়ত বলবেন ভারী বজ্রপাতের ঘটানা একটি কাকতালীয় ব্যপার। আসলেই কি তাই? সেই দিন যে সকল মানুষ গুলো যাত্রাবাড়ী বা ঐ এলাকার আশে পাশে ছিল শুধুমাত্র তারাই জানে কি পরিমান বজ্রপাত হয়েছিল। তিতাসের মেইন লাইনে বিস্ফোরণের ফলে অতি উচ্চ চাপে গ্যাস বেড়িয়ে যেতে থাকে আমাদের বায়ুমণ্ডলে। তখন আকাশে হালকা মেঘ ছিল সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনাও ছিল।
কিন্তু সেই দুর্ঘটনার ফলে নির্গত গ্যাস অতি দ্রুত উপরে উঠে যেতে থাকে ফলে খুব তাড়াতাড়ি মেঘ ভারী হয়ে উঠে এবং বিকট শব্দে বজ্রপাত হতে থাকে। সেই বজ্রপাতের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় এক ঘন্টা। এবার বুঝুন কি পরিমান গ্যাস ঐ দিন আমাদের অপচয় হয়েছে। এর ভর্তুকি কি সরকার আদায় করবে ঐ কোম্পানির কাছ থেকে??? ৭০ (সত্তর) কোটি টাকার গ্যাস পুড়ল শুধুমাত্র অযোগ্যতা এবং সমন্বয়হীনতার কারনে।
এখন আসেন দেখি কোন বাপের পুতেরা আছেন এই উড়াল সড়ক বানানোর পিছনে।
আমাদের একজন সহ ব্লগার আমার এই পোষ্টে মন্ত্যবের ঘরে এদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে আমাদের সহায়তা করেছেন। তার নাম হচ্ছে ওবায়েদুল আকবর; তার ভাষ্য এইখানে হুবহু তুলে ধরা হলঃ বেলহাসা হইল অরিয়ন গ্রুপের চাইল্ড কোম্পানি আর অরিয়ন গ্রুপ হইল ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা মাইরা দেওয়া সেই বিশেষ কোম্পানি যার মালিকের জামাই বিএনপি সরকারের তৎকালীন হুইপ বেটা( নামও মনে আসতেছেনা) এর কাছ থিকা শূল্কমূক্তভাবে আমদানীকৃত গাড়িসমেত সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হইয়া চান্চল্যের সৃষ্টি করছিল, যার মালিক সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাড়া খাইয়া কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দুবাই, হংকং আর মালয়েশিয়ায় পাচার কইরা আবার এই সরকারের আমলে ভূত হইয়া সওয়ার হইছে জাতির মাথার উপর। তেনারা এখন বিপিএলের দল খুলনা রয়েলসের মালিক। দশ বছর ধইরা যারা যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারের পিলারটাও গাথতে পারলনা। আরো যে কত চুরি করছে তার হিসাব নাই।
বাংলাদেশের দুইটা খাইষ্টা কোম্পানীর একটা এই অরিয়ন যাদের টাকা বাংলাদেশের দুই বৃহৎ দলের কোষাগারেই যায় যার সমমানের তুলনীয় হবার ক্ষমতা আছে কেবল শাহ আলমের বসুন্ধরার। তাদের সবচেয়ে ফ্রেস ইনভেস্টমেন্ট হইল কোহিনুর কেমিকেলস যার তিব্বত ব্র্যান্ড খুব জনপ্রিয়।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বাংলাদেশ হচ্ছে একটি গিনিপিগ তাই এইটারে অপারেশন টেবিলে ফালাইয়া যার যেমনে ইচ্ছা কাটা ছিড়া কইরা কাম শিখতেছে।
জাতিও মিডিয়া গুলার ভাব দেখতাছি খালি, কেউ খবরটারে ফলাও করে প্রকাশ করল না বরং কাভার নামক কাভারিং কইরা দিল। আল্লাহ্ই জানে কে কত খাইসে।
আল্লাহ্ হয় আমাগো বাঁচা, আর তা না হইলে এক্কে বারে মাইরা ফেল; আমাগো না এই দেশের নীতি নির্ধারক নামক উর্বর মস্তিষ্ক সম্পন্ন গাধা গুলারে।
এখন দেখেন প্রথম আলুর কারবার, ঘটনা হইল গত ১২ তারিখ দিবাগত রাত মানে ১৩ তারিখ বলা চলে। আর আমাদের প্রথম আলু সেইটা কাভার করল আজ ১৫ তারিখ; আর কাভার করার নমুনাটা দেখেন। ভালো করে লক্ষ করে দেখুন, প্রথম আলু এই খবরটা কাভার করেছে পত্রিকার সাত নাম্বার পাতায়।
এমন ভাবে লিখেছে মনে হয় যেন কাজ করতে যেয়ে, গ্যাস লাইন, ওয়াসার লাইন, সুয়ারেজ লাইন, টেলিফোন লাইন, অপটিক ফাইবার ইন্টারনেট, বিদ্যুত সংযোগ এইসবের ক্ষতি সাধন করা খুবই সাধারন ব্যপার।
দয়া করে প্রতিবাদী হতে শিখুন, নিজের অধিকার নিজে আদায় করে নিন।
সবাইকে ধন্যবাদ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।