যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়। আপনি আমাকে এক হাজারটা ঋণাত্মক উদাহরণ দেখাতে পারবেন। যদিও পরিবর্তনের জন্য একটি সঠিক উদাহরণই যথেষ্ট।
প্রথমেই গভীর শ্রদ্ধা আক্রান্ত নারী (মানুষ) এবং প্রতিবাদকারী ব্লগার সর্বনাশাকে (আরেকজন দারুন মানুষ)।
আমাদের সংস্কৃতিতে একটি প্রবণতা বিদ্যমান তা হল আক্রান্তকে ছোট করে দেখার। সর্বনাশার প্রতি গভীরতর শ্রদ্ধা তার প্রতিবাদে এবং তার পোষ্টটির ধারাবাহিকতায়। যেটি শেষ পর্যন্ত তার চেতনার প্রতিফলনও বটে। আশাকরি এই চেতনা আমাদের অধিকাংশের চেতনা হয়ে উঠেছে। সর্বনাশার পোষ্টটি ব্লগের আসার প্রথম থেকেই খুব নিবিড়ভাবে দেখছি ( এবং আমি কাজ করছি আমার জায়গা থেকে)।
আক্রান্তকে ছোট করে দেখার মধ্য দিয়ে আমাদের চেতনার গভীর অন্ধকারে তথাকথিত ক্ষমতাশালীদের প্রতি যে দাস মনোভাব সেটারই প্রতিফলন বারবার উদ্ভাসিত হয়। আর এ কারণেই সাধারণ মানুষ তার নিজের ক্ষমতাকে উপলব্ধি করতে পারেনা, বিক্ষিপ্ত হয়। তৈরি হয় মধ্যস্বত্তভোগী আরেকটি দলের যাদের আমরা চিনি তথাকথিত “নেতা”, “নেত্রী”,”মন্ত্রী”, “আমলা”, “সন্ত্রাসী”, “ভিসি”,”কনসালটেন্ট” আরো কত কি নামে। তাদের আমরা পুঁজো করি, দেয়ালে টাঙ্গাই যদিও বারবার ভুল যাই যে কোন কাজই তিনি একা করেননি শতশত নাম না জানা মানুষের রক্তাক্ত ভূমিকা রয়েছে কোন না কোন মহান পরিবর্তনে।
ফলে আমি বারবার উচ্চারণ করতে চাই প্রতিবাদকারীর প্রতি শ্রদ্ধাকে আর প্রান্তিক করে দিতে চাই ছোট করে দেখার প্রবণতাটিকে।
৭৭৮৬টি ফেইসবুক শেয়ার, ২৭০৪৭ বার পঠিত, ৮৪৩টি মন্তব্য , ২৬৭জনের ভালো লাগা, ৫৪ জন ব্লগারের শো-কেসে নেয়া এর সবকিছুকে ছাপিয়ে যে সত্যটা আমাকে বিমোহিত করে তা হল, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্লগারদের, মানুষদের জেগে ওঠা। ইন্ট্যার-এ্যাকটিভ মিডিয়ার এটি একটি বড় শুভ বৈশিষ্ট্য। এই ঘটনা আবারো প্রমাণ করলো ব্লগিং এর কোন প্র্যাকটিসটি আমাদের ধারণ ও লালন করা দরকার।
কিন্তু সেসব গৌণ বিষয় এখনকার প্রেক্ষাপটে। জনমানুষের এই জেগে ওঠা প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানে ঠোকাঠুকির বিষয় নয়, ক্ষমতাবান মন্ত্রী ফোন কল নয়।
মূল বিষয়টি হল সমাজকে মনুষত্ব্যের কাছে দায়বদ্ধ করে তোলা। যেই দায় আমাদের সমাজের ক্ষমতাভোগকারীরা অনেক আগেই ভুলে গেছেন।
ফলে...
১. এটা কেবল আর সামাল দেয়ার মত ঘটনা নয়, (তা সে যেই যত বড় কতৃপক্ষই মনে করুক না কেন), বরং মূল কাজ হল অন্যায়কারীর শাস্তি নিশ্চিত করা (আর এই কাজে সংশ্লিস্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের আন্তরিকতা আর স্বচ্ছতাই তাদের প্রতি জনমানুষের মনোভাব ঠিক করবে)।
২. সকলের পক্ষ থেকে প্রতিবাদকারী এবং আক্রান্ত মানুষটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৩. আলোচনা, গণসংযোগ, আন্দোলন প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার মানদন্ডে আপোষহীন থাকা।
৪. কোন বিশেষ প্রতিষ্ঠান নয় বরং অন্যায়ের প্রতিবাদের প্রতি ফোকাস রাখা (প্রতিষ্ঠান সমূহ যদি অন্যায়কে জায়গা দেয় তাহলে আপনাআপনি সেটি নিজের পতন ডেকে আনবে, বিশেষ কোন চেষ্টা করার দরকার হবে না। )
৫. প্রচলিত রাজনৈতিক চর্চার রং এর দরকার নেই, কেননা আজকের প্রতিষ্ঠিত দল সমূহও ঐতিহাসিকভাবে জনগণের শক্তির উপর নির্ভর করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
৬. বিশেষ নেতার (নারী/পুরুষ উভয়ার্থে) প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন দক্ষ ও সৎ সমন্বয়কারীদের
৭. সত্য প্রতিবাদের চর্চার প্রতি অসীম শ্রদ্ধা
৮. শক্তি জনগণের, আর যে কোন প্রতিষ্ঠান যে সেটার উপর নির্ভরশীল সেটি বারবার মনে রাখা।
৯. ব্লগে, পথে, প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের আন্তরিকতার একমাত্র মানদন্ড স্বচ্ছতা।
১০. লড়াইটা আত্মমর্যাদার, আর অর্জিত হবার আগ পর্যন্ত সমস্ত পরিবর্তনকেই অসম্ভব মনে হয়েছিল, যেমন “৫২, “৬৯, “৭১, “৯০......
এই প্রস্তুতি নিয়েই আমি প্রতিবাদকারীদের সম্মানিত শ্রদ্ধেয় দলে থাকার চেষ্টা করছি।
আপনি কি করছেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।