সাংবাদিক ইলিয়াছ রিপন মা শব্দটি খুবই ছোট, কিন্তু মধুরতম। মায়ের চেয়ে মধুর ডাক পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। পৃথিবীতে সবচেয়ে গভীরতম সম্পর্ক মা। এই ছোট শব্দটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় স্নেহ মমতা আর গভীর ভালবাসার কথা। আমাদের জীবনের গভীর সংকটকালে যাকে প্রথম স্মরণ করি তিনি হচ্ছেন পরম মমতাময়ী মা।
তাই মাযের চেয়ে বড় কিছু পৃথিবীতে নাই। জন্মের পর শিশুর প্রথম ভাষা- মা। মা উচ্চারণের সাথে সাথে হৃদয়ে যে আবেগ ও অনুভূতি সৃষ্টি হয়, তাতে অনাবিল সুখের প্রশান্তি নেমে আসে। মা শিশুর সার্বজনীন ভাষা। আমরা মায়ের কাছেই প্রথম কথা বলা শিখি।
মা প্রথম কথা বলা শেখান বলেই মায়ের ভাষা হয় মাতৃভাষা। সন্তানের প্রতি মায়ের ভালবাসা সহজাত গুণ। এই ভালোবাসার কারণেই সুন্দর সৃষ্টির ধারা প্রবাহমান। মা হচ্ছেন মমতা-নিরাপত্তা-অস্তিত্ব¡, নিশ্চয়তা ও আশ্রয়। মা সন্তানের অভিভাবক, পরিচালক, ফিলোসফার, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও বড় বন্ধু।
সন্তানের প্রতি মায়ের এই তীব্র মমতার ব্যাখ্যায় বিজ্ঞান বলে, মায়ের দুধে এক প্রকার রাসায়নিক যৌগিক পদার্থ আছে-যা সন্তানের দেহে প্রবেশ করলে মা ও সন্তানের মধ্যে চুম্বক প্রীতি ও সৌহাদ্যেরে নিবিড় বন্ধন সৃষ্টি হয়। মায়ের দেহে নিউট্রোপেট্রিক রাসায়নিক পদার্থ থাকায় মায়ের মনের মাঝে সন্তানের জন্য মমতা জন্ম নেয়, মায়ের ভালোবাসার ক্ষমতা বিজ্ঞানের মাপকাঠিতে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। পৃথিবীতে আসার আগে সন্তান মায়ের গর্ভে তিলে তিলে বড় হয়। মায়ের দেহ থেকেই খাদ্য গ্রহণ করে। মাকে শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানানোর নির্দিষ্ট কোন দিন নাই।
মায়ের প্রতি ভালবাসা প্রতিটি মহুর্তের। জন্মের পর শিশুর প্রথম ভাষা- মা। মা উচ্চারণের সাথে সাথে হৃদয়ে যে আবেগ ও অনুভূতি সৃষ্টি হয়, তাতে অনাবিল সুখের প্রশান্তি নেমে আসে। পরিবারের সুখ - সুবিধার প্রতি দৃষ্টি রাখতে যেয়ে, প্রতিদিন নিজের আরাম নষ্ট করে, নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে, সন্তানদের পৃথিবীতে চলার যোগ্য তৈরী করে দেন যিনি, তিনি মা। সেই নমস্যা ‘মা’ কে বছরে একটি দিনও যদি আনন্দ দিতে পারি, জানাতে পারি বিশেষভাবে তোমার তুলনা তুমিই ‘মা’, সেটাই কম কিসে? হয়তো বিশ্বের মা ভক্ত মানুষগুলো দিবসটির তাৎপর্য খুজে পায় বলেই এ দিবস নিয়ে এত আয়োজন।
বর্তমানে প্রচলিত মা দিবসের সূচনা হয় ১৯০৮ সালে। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ার এক স্কুল শিক্ষিকা এ্যানা জারবিস সেখানকার পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা দেখে দারুন মর্মাহত হন। মায়ের প্রতি সন্তানদের অযতœ, অবহেলা দেখে তিনি ভীষন চিন্তিত হয়ে পড়েন। তখন তিনি ভাবলেন মায়ের জন্য একটি বিশেষ দিবস পালন সন্তানদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা যায় কিনা। কিন্তু তাঁর সেই ভাবনা বাস্তবায়নের পূর্বেই ১৯০৫ সালের ৯ মে তিনি পরলোকগমন করেন।
তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর মেয়ে এ্যানা এম জারবিস মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। মা হারানোর অনুভুতি তিনি তীব্রভাবে অনুভব করেন। শেষ পর্যন্ত মায়ের শেষ ইচ্ছা মা দিবস পালনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য উঠেপড়ে লাগেন। অবশেষে ১৯০৮ সালের এ দিনে এ্যানা এম জারবিস তাঁর মা এ্যানা জারবিস ফিলাডেলফিয়ার যে গির্জায় গিয়ে উপাসনা করতেন সেখানে সব মাকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মা দিবসের যাত্রা শুরু করেন।
আসুন আজ এ দিবসে, মায়ের কাছে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে বলি, মাকে তোমাকে অনেক ভালবাসি।
লেখক ঃ সাংবাদিক, মীরসরাই প্রতিনিধি- দৈনিক ভোরের ডাক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।