একলা মানুষ মাতৃ গর্ভে একলা মানুষ চিতায় একলা পুরুষ কর্তব্যে একলা পুরুষ পিতায় আর, মধ্যে খানে বাকিটা সময় একলা না থাকার অভিনয়
১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইঙ্গ-মার্কিন চাপে জাতিসংঘে ভোট গ্রহণ হয় তাতে ৩৩টি রাষ্ট্র পক্ষে, ১৩টি রাষ্ট্র বিরুদ্ধে এবং ১০টি ভোট দানে বিরত থাকে৷ প্রস্তাব অনুযায়ী মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ হয়েও ইহুদিরা পেল ভূমির ৫৭% আর ফিলিস্তিনিরা পেল ৪৩% তবে প্রস্তাবিত ইহুদি রাষ্ট্রটির উত্তর-পশ্চিম সীমানা ছিল অনির্ধারিত ফলে ভবিষ্যতে ইহুদিরা সীমানা বাড়াতে পারে৷
জাতিসংঘের মাধ্যমে পাস হয়ে যায় একটি অবৈধ ও অযৌক্তিক প্রস্তাব৷ এরপরই ১৯৪৮ সালের ১২ মে রাত ১২টা এক মিনিটে ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণা করলো ইহুদিরা৷ ১০ মিনিটের ভেতর যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দিল, অতঃপর সোভিয়েত ইউনিয়ন-বৃটেন ।
নাটকের সুত্রপাতঃ
ভূমধ্যসাগরের পূর্বে ১০,৪২৯ বর্গমাইলব্যাপী ফিলিস্তিন দেশটি ছিল অটোমান খেলাফতের অধীন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যারা ছিল বৃটেন বিরোধী জোটে৷ তখন যুদ্ধ জয়ে ফিলিস্তিনের সহযোগিতা পাওয়ার আশায় ১৯১৭ সালে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড বেলফোর যুদ্ধে জয়ী হলে এই ভূমিতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হবে বলে আশ্বাস দেন৷ যা ইতিহাসে বেলফোর ঘোষণা হিসেবে পরিচিত৷ যেহেতু আরবরা ছিল ইহুদিদের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি, সেহেতু ঘোষণাটি তাদের অনুকূল বলেই তারা ধরে নেয়৷
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বৃটেনের প্রয়োজনে দুর্লভ বোমা তৈরীর উপকরণ কৃত্রিম ফসফরাস তৈরী করতে সক্ষম হ্য় ইহুদি বিজ্ঞানী ড. হেইস বাইজম্যান৷ ফলে আনন্দিত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলেন কি ধরনের পুরস্কার তিনি চান৷ উত্তর ছিল অর্থ নয় আমার স্বজাতির জন্য এক টুকরো ভূমি আর তা হবে ফিলিস্তিন৷ ফলে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডটি ইহুদিদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয় বৃটেন৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ জয়ের পর বৃটেন স্বাধীনতা দেয়ার অঙ্গীকারে ১৯১৮ সাল থেকে ৩০ বছর দেশটিকে নিজেদের অধীন রাখে৷ মূলত এই সময়টিই ফিলিস্তিনকে আরব শূন্য করার জন্য ভালোভাবে কাজে লাগায় ইহুদি বলয় দ্বারা প্রভাবিত ইঙ্গ-মার্কিন শক্তি৷
বৃটিশরা একদিকে ইহুদিদের জন্য খুলে দেয় ফিলিস্তিনের দরজা, অন্যদিকে বৃটিশ বাহিনীর সহযোগিতায় ইহুদিরা ফিলিস্তিনদের বিতাড়িত করে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার জন্য গড়ে তোলে অনেক প্রশিক্ষিত গোপন সন্ত্রাসী সংগঠন৷ তার মধ্যে তিনটি প্রধান সংগঠন ছিল হাগানাহ, ইরগুন ও স্ট্যার্ন গ্যাং যারা হত্যা, সন্ত্রাস, ধর্ষণ আর ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টির মাধ্যমে নিরীহ ফিলিস্তিনদের বাধ্য করে নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে চলে যেতে৷
সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর গণহত্যার কথা যখন আন্তর্জাতিক ভাবে প্রচারিত হচ্ছিল তখন পরিস্থিতিকে নিজেদের অনুকূলে আনার জন্য গুপ্ত সংগঠন হাগানাহ বেছে নেয় আত্মহনন পন্থা৷ ১৯৪০ সালে এসএস প্যাটৃয়া নামক একটি জাহাজকে হাইফা বন্দরে তারা উড়িয়ে দিয়ে ২৭৬ জন ইহুদিকে হত্যা করে৷ ১৯৪২ সালে আরেকটি জাহাজকে উড়িয়ে ৭৬৯ জন ইহুদিকে হত্যা করে৷ উভয় জাহাজে করে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে আসছিল আর বৃটিশরা সামরিক কৌশলগত কারণে জাহাজ দুটিকে ফিলিস্তিনের বন্দরে ভিড়তে দিচ্ছিল না৷ হাগানাহ এভাবে ইহুদিদের হত্যা করে তার দায় ফিলিস্তিনদের উপর চাপিয়ে দিয়ে বিশ্ব জনমতকে নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টা করলো৷ পাশাপাশি ইহুদিদের বসতি স্থাপন ও আরবদের উচ্ছেদ করণ চালাতে থাকে খুব দ্রুত৷
প্যালেস্টাইনের ভূমিতে ইহুদি রাস্ট প্রতিষ্ঠার পেছনে প্রধান যে কারণ ও উদ্দেশ্য গুল কাজ করেছে তা নিন্ম রুপঃ
১। ইহুদিদের বিশ্বাস, বংশ পরম্পরায় প্যালেস্টাইন ভূমির একক অধিকারী তারা। তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ তালমূদ ও তাওরাতের বিভিন্ন উক্তি ও উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তারা প্রমাণ করতে চায় যে, এ ভূমির বৈধ ও একমাত্র উত্তরাধিকারী ইহুদি জাতি বা বনী ইসরাইল।
২।
প্যালেস্টাইন তথা জেরুজালেম ও মসজিদ আল আকসা এর অপরিসীম ধর্মীয় গুরুত্ব এবং ক্রুসেড।
৩। ইউরোপিয় দ্বারা ইহুদি নিধন ও ধারাবাহিক ভাবে তাদের ইউরোপ হতে প্যালেস্টাইনে নির্বাসন।
৪। মধ্য প্রাচ্যে ও বিশ্বে পশ্চিমা আধিপত্য বিস্তারের প্রয়োজনে একটি দায়মুক্ত সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন।
৫। মুসলিম বিশ্বের অনৈক্য ও নেতাদের ভুল সিদ্ধান্ত।
পয়েন্টগুলো আলোকে বিস্তারিতঃ
ইহুদিঃ
হিব্রু: ইয়াহুদীম মূলত একটি জাতি বা ধর্মীয় জনগোষ্ঠী যারা বনী-ইস্রায়েল জাতির অন্তর্গত এবং জাতিগতভাবে ইহুদি ধর্মের অনুসারী। ইব্রাহীমের পুত্র ইসহাক, তার পুত্র ইয়াকুব ওরফে ইসরাইল(ইস্রাঈল বা ইস্রায়েল) এর বংশধর গণ বনী-ইসরায়েল নামে পরিচিত। ইয়াকুবের বারো পুত্রের নামে বনী-ইসরায়েলের বারোটি গোষ্ঠীর জন্ম হয় যার মধ্যে ইয়াহুদা'র ছেলেমেয়েরা ইহুদি নামে পরিচিত।
এই ধর্মের মূল ধর্মগ্রন্থ হিসেবে ওল্ড টেস্টামেন্ট-এর প্রথম পাঁচটি বইকে গণ্য করা হয়: জেনেসিস, এক্সোডাস, লেভিটিকাস, নাম্বার্স, এবং ডিউটেরোনমি। এই পাঁচটি বইকে একত্রে "তোরাহ"ও (Torah) বলা হয়ে থাকে। ইহুদি ধর্মবিশ্বাসমতে, ঈশ্বর এক, আর তাঁকে জেহোবা (Jehovah, YHWH) নামে আখ্যায়িত করা হয়। মোসেয হলেন ঈশ্বরের একজন বাণীবাহক। ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্মের মতোই ইহুদিগণ পূর্বতন সকল বাণী বাহককে বিশ্বাস করেন, এবং মনে করেন মোসেযই সর্বশেষ বাণীবাহক।
ইহুদিগণ যিশুকে ঈশ্বরের বাণীবাহক হিসেবে অস্বীকার করলেও, খ্রিস্টান গণ ইহুদিদের সবগুলো ধর্মগ্রন্থ (ওল্ড টেস্টামেন্ট)-কে নিজেদের ধর্মগ্রন্থ হিসেবে মান্য করে থাকেন।
ইহুদিদের বিশ্বাস, বংশ পরম্পরায় প্যালেস্টাইন ভূমির একক অধিকারী তারা। তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ তালমূদ ও তাওরাতের বিভিন্ন উক্তি ও উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তারা প্রমাণ করতে চায় যে, এ ভূমির বৈধ ও একমাত্র উত্তরাধিকারী ইহুদি জাতি বা বনী ইসরাইলীগণ। বর্তমান তাওরাতকে মুসলমানগণ মনে করে পুরোপুরি মনগড়া একটি গ্রন্থ হিশেবে।
যেমন,
"প্রভু ইবরাহিমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তুমি তোমার মাতৃভূমি, পরিবার ও পিতৃগৃহ ত্যাগ কর, গমন কর এমন ভূমিতে, যা আমি তোমাকে প্রদর্শন করছি।
ইবরাহিম তার প্রভুর নির্দেশ পালন করলেন…সুতরাং, তারা গমন করলেন কানআন ভূমিতে…প্রভু ইব্রাহিমের সম্মুখে উপস্থিত-প্রতিভাত হয়ে বললেন, আমি তোমার বংশধরদের জন্য এ ভূমি দান করলাম। "
তাওরাতের উপর স্থানে পাওয়া যায়,
"ইবরাহীম কানআনে আবাস স্থাপন করলেন, প্রভু তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন : চোখ তোল, এবং অবস্থান করছ যেখানে, তার উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিমে দৃষ্টি দাও ; কারণ, যে ভূমি তোমার দৃষ্টিগোচর হচ্ছে, তার সবটুকু তোমার ও তোমার বংশধরদের জন্য চিরকালীন বন্দোবস্ত দিলাম।
অন্যত্র এসেছে,
"প্রভু ইবরাহিমের সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেন, বললেন : মিশরের নদী হতে বড় নদী "ফুরাত-নদী" সবটুকু ভূমি তোমাকে, তোমার বংশকে দান করলাম। "
ইহুদিরা তাওরাতের এসব উক্তি ও উদ্ধৃতি উল্লেখ করে প্যালেস্টাইন ভূমি কেড়ে নেওয়ার পক্ষে যুক্তি পেশ করে।
পক্ষান্তরে, ইসলাম ও মুসলমানদের বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভিন্ন,
নির্দিষ্ট কোন বংশ বা জনগোষ্ঠীর জন্য কোন ভূমির একক অধিকার ইসলাম বা মুসলমান কখনো বিশ্বাস করে না।
ইসলাম মৌলিকভাবে কোন জনগোষ্ঠীর ধর্ম নয় ; বরং, তা সুনির্দিষ্ট বিশ্বাস ও মতাদর্শকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
পৃথিবীতে যুগ যুগ ধরে আগমন করেছেন যত নবী ও রাসূল, মুসলমানদের বিশ্বাস_তারা নির্দিষ্ট কোন বংশের প্রতাপ বিস্তারের জন্য আগমন করেন নি, আগমন করেছেন বরং, তাওহীদ ও ইমানের বিশ্বাস মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য।
গোষ্ঠীগত পরিচয়, ভৌগোলিক পরিচিতি_ইত্যাদি ইসলামের নিকট কখনো বিবেচ্য নয়।
বিকৃত তাওরাত ও তালমূদে ইহুদিরা ধর্ম ও মানুষের বিশ্বাসকে যেভাবে চিত্রিত করেছে, তা ইসলামের সাথে মৌলিক প্রভেদ চোখে খুব সহজেই।
সকল নবী_যারা পৃথিবীতে ইমান ও ইসলামের দাওয়াত নিয়ে আগমন করেছেন, তাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ইসলামে বাধ্যতামূলক, তাকে মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে রুকুনের, তাদের যে কোন একজনকে অস্বীকার করা (যাদের মাঝে বনী ইসরাইলী নবীগণও অন্তর্ভুক্ত) কুফুর।
এ ভিত্তিতে মুসলমানগণ বিশ্বাস করেন যে, ইহুদিরা তাওরাতকে বিকৃত করেছে, মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের নবীদের, হত্যা করেছে তাদের কয়েকজনকে, অনুসরণ করেনি তাদের নির্দেশিত পথের। সুতরাং, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ বিচার করলে, যে কোন সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী মাত্রই মানতে বাধ্য হবেন যে, ইহুদিগণ ধর্মীয় উত্তরাধিকারের দাবি তোলে প্যালেস্টাইনে বর্ণবাদী দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য যে খুন আর রক্তের উন্মত্ত খেলা আরম্ভ করেছে, তার পিছনে ধর্মের কোন সমর্থন নেই।
কোরআনে এসেছে ইবরাহীম ইহুদি কিংবা খ্রিস্টান ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পিতা।
- বিস্তারিতঃ ইবরাহিম(আঃ)এর জীবনী।
প্যালেস্টাইন এর সংক্ষিপ্ত প্রাচীন ইতিহাসঃ
খৃষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দঃ
ফিলিস্তিনের বাসিন্দা গণের মধ্যে আমাদের জানা মতে, সবচেয়ে প্রাচীনতম ছিলেন কেনানের অধিবাসীগণ।
তারা নগরায়িত হয়ে গিয়েছিলেন এবং নগর রাষ্ট্রে বসবাস করতেন। যার অন্যতম ছিল ‘জেরিকো’। তারা এক ভাষারও উদ্ভাবন করেছিল। রাজপথ গুলোর মধ্যস্থলে অবস্থিত ফিলিস্তিন তিন মহাদেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করত, তাকে মিসর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া ও এশিয়া মাইনর হতে আগত ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রভাবের মিলনকেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছিল। তা ঐ এলাকার প্রধান শক্তিবর্গের স্বাভাবিক যুদ্ধক্ষেত্রেও পরিণত হয়েছিল।
এবং আশেপাশের সাম্রাজ্যগুলোর আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্রও ছিলো। আর তার প্রারম্ভ মিসরের মাধ্যমে খৃষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দে।
খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দঃ
মিসরীয় রাষ্ট্রীয় আধিপত্যবাদ ও কেনানী স্বায়ত্ব শাসনবাদ সর্বদা অ্যামরাইট, হিট্টাইট এবং হুরিয়ান বহিরাগত হানাদার গোষ্ঠীদের হুমকির মাঝে বিরাজ করছিল। তবে এ সমস্ত হানাদারদের মিসরীয়রা পরাজিত করেছিল এবং কেনানীয়দের দ্বারা আত্মীয়ভূক্ত করা হয়েছিল। এদের সংখ্যা সে সময় হয়ত বা দুই লাখের মত ছিল।
খৃষ্টপূর্ব চৌদ্দ শত্কঃ
মিসরীয় শক্তি দুর্বল হতে শুরু করল। নতুন হানাদার গোষ্ঠী যারা এক শ্রেণীর মেসোপটেমিয়া উপজাতি "ফিলিস্ত" দের আগমন ঘটে । যাদের নামে পরে এদেশের নামকরণ করা হয়েছিল। এরা ইন্দো-ই্উরোপীয় গোত্রের ইজীয়ানজন গোষ্ঠী।
খৃস্টপূর্ব তের শতাব্দীঃ
হযরত ইয়াকুবের (আঃ) নাম ছিল ইসরাইল।
বনি ইসরাইল হযরত ইয়াকুবেরই বংশধর। খৃস্টপূর্ব তের শতাব্দী যাবত তারা সেখানে ক্ষমতাধর ছিলেন। মিশরে ফেরাউনের রাজত্বকালে এবং হযরত মূসার (আঃ) আগমনের পূর্বে ইসরাইলীদের জনসংখ্যা খবই বৃদ্ধি পায়। মিশরে হযরত ইয়াকুবের (আঃ) আগমনের প্রায় চারশ’ তিরিশ (৪৩০) বছর পর হযরত মূসা (আঃ) বনি ইসরাইলকে মিশর থেকে প্রতিশ্রুতি ভূ-খন্ডে স্থানান্তরের জন্য পরিচালনা শুরু করেন। এ পরিক্রমা ঘটনাবহুল চল্লিশ বছর যাবত অব্যাহত থাকে।
এ সময়ই হযরত মূসা (আঃ) যখন চল্লিশ দিনের জন্য তাঁর গোত্র ছেড়ে দশ অধ্যায়বিশিষ্ট খোদায়ী নির্দেশনামা আনতে অদৃশ্য হয়ে যান তখন বনি ইসরাইল পুনরায় মূর্তি পূজায় আত্মনিয়োগ করে। আর এই নাফরমানীর কারণেই চল্লিশ বছর ধরে এ সমপ্রদায় মরুভূমিতে লক্ষ্যহীনভাবে পথ হারিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
হযরত মূসা (আঃ) এই দীর্ঘ সময় ধরেও স্বীয় বিভ্রান্ত সমপ্রদায়কে হেদায়েত দান থেকে বিরত হননি। কিন্তু বনী ইসরাইল বার বার বিদ্রোহ ও সীমালংঘন করা অব্যাহত রাখে। হযরত মূসা (আঃ)- এর ওফাতের পর ইউশা বনী ইসরাইলীকে জর্দান থেকে দেখিয়ে নেয়ার ব্যাপারে হযরত মুসার স'লাভিষিক্ত হন।
তখন থেকে এ সমপ্রদায় যে কোন নতুন শহরে উপনীত হতো সেখানেই লুটতরাজ ও গণহত্যা চালাতো। ফলে জেরুজালেমের বাদশাহ আরো পাঁচটি শহরের বাদশাহর সাথে মৈত্রী স্থাপন করে একযোগে ইউশা ও বনী ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে নামে। কিন্তু এরা সবাই পরাজিত হলে বনী ইসরাইল এদের ফাঁসীকাষ্ঠে ঝোলায়। তবে ফিলিস্তিনী জাতি আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখে এবং শেষ পর্যন্ত বনি ইসরাইলকে পরাজিত করে।
খৃস্টপূর্ব এক হাজার শতাব্দিঃ
হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মের প্রায় এক হাজার বছর আগে হযরত দাউদ (আঃ) ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে জেরুজালেমকে মুক্ত করতে সক্ষম হন এবং সেখানে বায়তুল মুকাদ্দাস তথা আল্লাহর ঘর নির্মাণ করেন।
হযরত দাউদ (আঃ)-এর পুত্র হযরত সুলায়মান (আঃ) বায়তুল মুকাদ্দাসের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করেন। মক্কা শরীফে হযরত ইবরাহীম (আঃ) কর্তৃক কা’বা শরীফ নির্মাণের প্রায় এগারো শ’ (১১০০) বছর পর এবং হযরত ঈসা (আঃ)-এর জন্মের নয়শ’ সত্তর (৯৭০) বছর আগে বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মিত হয়। কা’বা ঘরের নির্মাতা হযরত ইবরাহিমের চৌদ্দতম অধঃস-ন পুরুষ হচ্ছেন হযরত দাউদ (আঃ) । অন্যদিকে মেথিউর বাইবেল অনুসারে হযরত ঈসার (আঃ) -এর সাথে হযরত দাউদের সম্পর্কে আটাশ পুরুষের। আর এভাবেই তৌহিদপন্থীদের প্রথম হারাম শরীফ হয়ে দাঁড়ায় মক্কা (কা’বা) এবং মসজিদুল আকসা (আল কুদস) পরিণত হয় দ্বিতীয় হারামে।
হযরত মুসা (আঃ)-এর ভেলাটি হচ্ছে মুসলমানদের রেওয়ায়েত অনুসারে সেই ছোট গোলাকার ভেলা যাতে হযরত মুসার মা নবজাত মুসাকে রেখে নীলনদে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে হযরত মুসা (আঃ) এই ভেলার ভেতর তাঁর নির্দেশাবলী ও ওহীর লিপিকা বোর্ডগুলো, বর্ম ও নব্যুয়তের নিদর্শনাদি রাখেন। এতে হাত দেয়ার অনুমতি কারো ছিল না। হযরত দাউদের সময় এ ভেলাটির বাইরের দিক ও ভেতরের দিকটিকে সোনার প্রলেপ দিয়ে অলঙ্ককৃত করা হয় এবং একে যায়ন পাহাড়ে নিয়ে আসেন। এরপর একে কেন্দ্র করে একটি কোরআন গাহ তৈরী করা হয়।
এ ভেলাটি কিছুকাল বিজয়ী ফিলিস্তিনদের হাতে আসে। অতঃপর পুনরায় তা বনি ইসরাইলের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। হযরত সুলায়মানের (আঃ)-এর সময় পর্যন্ত এটি যায়ন পাহাড়েই ছিল। কিন্তু বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মাণের পর ভেলাটিকে কুদস শরীফে স্থানান্তর করা হয়। হযরত সুলায়মান (আঃ) চল্লিশ বছর বাদশাহী করেন এবং বায়তুল মুকাদ্দাসে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করেন।
কিন্তু তাঁর ইনে-কালের পর
দাউদ (আঃ) এর পুত্র সুলাইমান (আঃ) এর অধীনে ইসরায়েলি শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজমান ছিল। তবে তার মৃত্যুতে (খৃষ্টপূর্ব ৯২২ সালে) এ রাজ্য উত্তরে ইসরায়েলি ও দক্ষিণে জুডা নামে দু’ভাগে বিভাজিত হয়েছিল।
এবং বনি ইসরাইল আবারো জুলুম-অত্যাচার ও লুটতরাজ শুরু করে।
খৃষ্টপূর্ব ৭২১-৭২২ সা্ল
যখন আশেপাশের রাষ্ট্রগুলো সীমানা বন্ধনে মনোযোগ দিল তখন বিভাজিত বনি ইসরায়েল তাদের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখতে পারল না। অ্যাসিরীয়ার(আশুরী সমপ্রদায়) কাছে ইসরায়েলিরা অবনত হল।
খৃষ্টপূর্ব ৫৮৬ সাল
জুডা বিজিত হল ব্যাবিলনিয়ার দ্বারা। ওরা জেরুজালেম ধ্বংস করেছিল এবং জীবিত ইয়াহুদিদের নির্বাসিত করেছিল। বখত-ই নাসের জেরুসালেম প্রবেশ করত: মন্দির ইত্যাদি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছিল। রাজকীয় প্রাসাদ ও বাকী রাজন্যবর্গের ঘরবাড়ী ভেঙে চূড়ে মিসমার করে দিয়েছিল। বাকী জনগণকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে ব্যাবিলনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
আর ওরা ওদের নির্বাসন যাত্রায় শুধু ক্রন্দনরত ছিল।
খৃষ্টপূর্ব ৫৩৯ সাল
পারস্যে(ইরান) বাদশাহ সাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। তিনি একের পর এক রাজ্য বিজয় শুরু করেন। এ বিষয়টি ইয়াহুদী সমপ্রদায় ও এদের নেতাদের উল্লসিত করে তুলে। শেষ পর্যন্ত সাইরাস ব্যাবিলনকেও দখল করে নিয়ে ইয়াহুদী সমপ্রদায় ও বনি ইসরাইলকে মুক্ত করে দেন এবং এদের ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমে প্রত্যাবর্তন করান ।
সাইরাস সকল ধর্ম ও সমপ্রদায়ের সাথে সদাচারণ করতেন এবং তারই নির্দেশে আল্লাহর ঘর (আল্ কুদস) পুনরায় নির্মিত হয়। জেরুজালেমের শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৃতীয় দারিউস বাদশার সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
খৃষ্টপূর্ব ৩২৩ সালে
আলেকজান্ডার মিশর, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, ফানিকিয়া ও ইরানের উপর আগ্রাসন শুরু করেন। এতে পুনরায় এসব দেশে দেদার ধংসযজ্ঞ , গণহত্যা ও লুটতরাজ নেমে আসে। ইরান তথা পারস্যের সকল ধনভান্ডার লুট হয়ে যায়।
ইরানের খুশাইয়ারবাদশা কর্তৃক এথেন্স ধ্বংস হওয়ার প্রতিশোধ হিসাবে আলেকজান্ডার তখতে জামাশদ তথা পারসেপোলিসকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করেন এবং স্বীয় অধিনায়কদের বিজিত শহর ও দেশগুলোর শাসক হিসাবে নিয়োগ করেন।
আলেকজান্ডারের পর তার উত্তরসূরিরা ফিলিস্তিনের উপর আধিপত্য বিস্তার করে।
খৃষ্টপূর্ব ১৩২-৩৫ সাল
ইয়াহুদীরা বিদ্রোহ করেছিল; অনেক ইয়াহুদী মেরে ফেলা হয়েছিল। অনেককে দাস হিসেবে বিক্রয় করে দেয়া হয়েছিল এবং বাকীদের জেরুসালেম যাবার অনুমতি দেয়া হত না। জুডীয়াকে নতুন নামকরণ করে সিরিয়া প্যালেস্টাইন রাখা হয়েছিল।
খৃষ্টপূর্ব ৬৩ সন
থেকে সেখানে রোমকদের আধিপত্য শুরু হয় ওরা আর্মেনিয়া ,এশিয়ার কিছু অংশ ও আফ্রিকায় আগ্রাসন চালানোর পর সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের উপর চড়াও হয়। এদের হাতে বারো হাজার ইয়াহুদী নিহত ও বহু শহর ধ্বংস হয়।
খৃষ্টপূর্ব ৩৭-৪ সাল
রাজা হীরডের রাজত্বকালে ইসা আলাইহিস সালাম জন্ম গ্রহণ করেন। হযরত ঈসা (আঃ) তাঁর ও তাঁর পরিবারবর্গের জন্মস্থান ছেড়ে সাহাবীদের (হাওয়ারী) নিয়ে জেরুজালেমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন এবং উনার অভীষ্ট লক্ষ্য প্রচারের কাজ শুরু করেন। এ বিষয়টি ইয়হুদী মোল্লাদের হিংসা-বিদ্বেষকে প্রজ্বলিত করে।
এরা আল্লাহর নবীকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ইব্রাহীম ও মুসার (আঃ) বিশুদ্ধ শিক্ষার দিকে জনগণের প্রতি উনার আহবানের প্রচেষ্টা কে তদানিন্তন সরকারী কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রদ্রোহী বিবেচনা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ইয়াহুদী পরিষদের ফতোয়ায় ও চক্রানে- ইয়াহুদী ভূ-খন্ডের রোমীয় শাসক হযরত ঈসাকে (আঃ) ফাঁসীকাষ্ঠে ও ক্রুশে বিদ্ধ করে হত্যা করে। (অবশ্য এ শাসক হযরত ঈসার একজন ভক্ত অনুরাগী ছিল। ) তবে কুরআন মজিদ হযরত ঈসার ক্রুশবিদ্ধ এ বিষয়ে আছে, ‘‘আল্লাহ তাঁকে নিজের দিকে উপরে উঠিয়ে নেন।
মসিহকে ওরা হত্যাও করতে পারেনি এবং ফাঁসিতেও ঝুলাতে সক্ষম হয়নি। বরং ওদের কাছে ওই রকমই প্রতিভাত হয়েছিল। ’’ যাহোক হযরত ঈসা মসিহ চিরন্তন হয়ে গেলেন এবং প্রচুর অনুসারী জন্ম নিলো। হযরত ঈসার বিশেষ অনুরাগী রোমক শাসক এ ঘটনার পর থেকে ইয়াহুদীদের প্রতি কঠোর আচরণ শুরু করে। ফলে একের পর এক ইয়াহুদী বিদ্রোহ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে।
খৃষ্টাব্দ ৭০
রোম সম্রাটের পুত্র টাইটাস আশি হাজার সৈন্য নিয়ে জেরুজালেম অবরোধ করে। ইয়াহুদীদের কয়েক মাসের প্রতিরোধ সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তারা রোমকদের হাতে ভেঙ্গে পড়ে।
জেরুজালেমে ধ্বংসাবশেষের উপর আইলা নামক এক নতুন নগরীর গোড়াপত্তন করা হয়েছিল এবং ইয়াহুদীরা পুনরায় আশ্রয়হীন ও শরণার্থীতে পরিণত হয়।
খৃস্টাব্দ ৩০৬-৩৩৭
হযরত ঈসা মসিহের অন্তর্ধানের প্রায় তিন’শ বছর পর রোম সম্রাট কনস্টান্টিন খৃস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন এবং এ ধর্মকে সরকারী ধর্ম হিসাব ঘোষণা দেন। ফলে জেরুজালেম আবারো বিশেষ গুরুত্ব লাভ করে।
যেহেতু বেথেলহামকে (বায়তুল লাহাম) হযরত ঈসার জন্মস্থান এবং তাঁর কথিত মাজারের কেন্দ্র বলে ধরা হয় সেহেতু এরপর থেকে জেরুজালেম খৃস্টানদের কেন্দ্রীয় শহর বলে গণ্য হতে থাকে। সেখানে বহু গীর্জা নির্মিত হয়। ১৩৫ খৃস্টাব্দ থেকে পাঁচশো বছর সময় পর্যন্ত বায়তুল মুকাদ্দাসে আঙ্গুলে গোনা কতিপয় ইয়াহুদী মাত্র বসবাস করতো।
৬০৪ খৃস্টাব্দ থেকে ৬৩০ খৃস্টাব্দ
পারস্যের সাসানী বাদশাহ দ্বিতীয় খসরুর রাজত্বকালে ইরান ও রোম সম্রাটের মাঝে ৬০৪ খৃস্টাব্দ থেকে ৬৩০ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত লড়াই চলে। এতে ইরানী সৈন্যরা রোমকদের পরাজিত করে।
ইরানীদের সহায়ক ইয়াহুদী গোষ্ঠীর পথ নির্দেশ মুতাবেক ইরান জেরুজালেম (ফিলিস্তিন) দখল করে নেয়। কিন্তু সম্রাট খসরু পারভিজের মৃত্যুর পর খৃস্টানরা পুনরায় ফিলিস্তিন দখল করে নেয়।
খৃষ্টাব্দ ৬৩৮
রাসূলে খোদার ইন্তেকালের পর প্রথম খলিফার সময় সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রোমকদের শত্রুতা দমনের জন্যে সৈন্য পাঠানো হয়। কিন্তু প্রথম খলিফার ইনে-কালের ফলে মুসলমানদের বিজয়াভিযান বাঁধা প্রাপ্ত। দ্বিতীয় খলিফার সময় সিরিয়া ও বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের হস্তগত হয়।
রোমক সৈন্যরা মুসলমানদের হাতে পরাজয় বরণ করে। বায়তুল মুকাদ্দাসের বাসিন্দারা মুসলমানদের হাতে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখে। মুসলিমদের দয়া অনুকম্পা ও উদারতা সুনাম সম্বন্ধে অবগত থাকায় স্বল্পকালের অবরোধের পর জেরুজালেমের জনগণ ওদের নগরী সমর্পণ করে দিয়েছিল। শর্ত ওরা শুধু একটাই দিয়েছিল, যা ছিল যে ওদের আত্মসমপর্ণের শর্তাবলী খলিফা হযরত ওমর ফারুকের সঙ্গে সরাসরি সন্ধি করা হবে। দ্বিতীয় খলিফা সাদাসিদে পোশাক গায়ে হাতে উটের রশি ধরে শহরে (জেরুজালেম) প্রবেশ করলে শহরবাসী বিস্ময় অভিভূত হয়ে পড়ে।
তারা সানন্দে খলিফার সাথে শান্তি চুক্তি সম্পাদন করে। খলিফা হযরত ওমর(রাঃ) নাগরিকদের সাথে খুবই নরম ও সদয় ব্যবহার করেন। ওই বছর (১৫ হিজরী) থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিন মুসলমানদের হাতেই ছিল। সন্ধি চুক্তি মুতাবেক খৃস্টানরা তাদের ধর্মীয় আচরণে স্বাধীনতা লাভ করে। পরবর্তীতে এ শহরের বাসিন্দারা বেশীর ভাগই ছিলেন আরব মুসলমান।
আরবীয়দের বিজয়ের মাধ্যমে শুরু হয়ে গেল ১৩০০ বছরের মুসলিম উপস্থিতি। এবং এলাকাটি ফিলিস্তিন বলে পরিচিত হতে লাগলো।
(চলবে...)
The History of Palestine ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।