যেমন কর্ম তেমন ফল।
ভালো নেই ঢাকা ওয়াসার নারী কর্মিরা। পুরুষ সহকর্মিদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন তারা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কিছু অপেক্ষাকৃত জেষ্ঠ্য সহকর্মি বিশেষ করে প্রধান কর্তা নানা ছলে নিজেদের লালসার শিকারে পরিণত করছেন। চুক্তিভিক্তিক চাকরিতে নিয়োজিত নারী কর্মিরাই প্রায় প্রতিনিয়ত পদে পদে এর শিকার হচ্ছেন।
তাদের উপর পুরুষ সহকর্মিদের যৌন হয়রানির মাত্রা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। চাকরি হারানোর এবং লোক লজ্জার ভয়ে তারা এ ব্যাপারে কোন প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে ঢাকা ওয়াসার একদল নারী কর্মি ‘নারীস্বার্থ ঐক্য পরিষ’ ব্যানারে নিজেদের নিরাপত্তা এবং পুরুষ সহকর্মিদের যৌন নিপিড়নের প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করেছেন। ঢাকা ওয়াসা পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের কাছেও অনুরূপ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা ওয়াসায় দুই শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মি। চুক্তিভিত্তিক কর্মিরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তাকে সন্তুষ্টু রাখতে চায়। এই দূর্বলতার সুযোগে কিছু কর্মকর্তা নারী কর্মিদের উপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছেন। চাকরি হারানোর ভয়ে ভুক্তভোগী নারী কর্মিরা তা মেনে নিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, ঢাকা ওয়াসার সাচিবিক দপ্তরে কর্মরত এক চুক্তিভিত্তিক নারী কর্মির সঙ্গে ওই বিভাগীর কর্তার অবৈধ মেলামেশায় গর্ভবতী ওই নারী কর্মি হন প্রভাবশালী এক উপ-সচিব এ ঘটনার নায়ক।
এ ঘটনাটি এখন টক অব দ্যা ওয়াসায় পরিণত হয়েছে। নারী স্বার্থ সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আবেদন জমা পড়ার পর কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি অনুসন্ধান করছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
নারী স্বার্থ সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের আবেদনে উল্লেখ্য করা হয়েছে, নারী কর্মিদের সঙ্গে পুরুষ কর্মিদের অসদাচারণের ফলে ওয়াসার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ওই আবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াসার প্রতিটি বিভাগে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অধীনে এক কক্ষ বিশিষ্ট অফিসে আনুপাতিক হারে দুইজনের বেশি নারীর কাজ করার ব্যবস্থা করা, একাধিক পুরুষের মাঝে একজন নারী কর্মি না রাখা। এমন দফতরে নারী কর্মির স্থলে একজন পুরুষ কর্মি নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখতে আহবান জানানো হয়েছে।
ঢাকা ওয়াসার গোয়েন্দা বিভাগে নারী জনবল বৃদ্ধি করে স্ব-স্ব বিভাগে নিরাপত্তা ও সুষ্ঠ কাজের পরিবেশ তৈরি করারও দাবি জানানো হয়েছে। ঢাকা ওয়াসার কর্তৃপক্ষের সুন্দর ও সুষ্ঠ পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনিক বিজ্ঞাপন জারি করতে হবে। যাতে নারী উত্পীড়নকারীর শাস্তির বিধান সম্বলিত শর্ত থাকে এই পত্রে সকলের অবগতির জন্য জারি করা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য কমপক্ষে ৬ মাসে একবার পরিবেশ সংক্রান্ত, শৃঙ্খলা, সঠিক দায়িত্বপালন, ওয়ার্কসপ ও সেমিনারের প্রচারপত্র বিলি করার ব্যবস্থা করার ও দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াসার এক বিভাগীয় কর্মকর্তা বলেন, ভাই কি বলবো! এখন ওয়াসায় চাকির করি এটা বলতে লজ্জা পাই।
নারী কর্মিদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এক নারী কর্মি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রতিদিন বাসা থেকে অফিসে এসে শঙ্কায় থাকি সম্ভব নিয়ে বাসায় ফিরতে পারবো কিনা। বসদের আপত্তিকর আচারণে ওয়াসার নারী কর্মিরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চাকরিটা না করে সংসার চললে এ চাকরি ছেড়ে দিতাম বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ওই কর্মি।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান ওয়াসার নারী কর্মিরা পুরুষ কর্মিদের দারা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে আমি মনে করিনা।
দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে তিনি বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে ঘটনাটি তিনি অনুসন্ধান করে দেখবেন। এ ধরনের কোন অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার চাকরিচ্যুত করা হবে বলেও জানান তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।