নারীদের মা হওয়াটা নিয়ে যে পরিমাণ ফ্যান্টাসী, যে পরিমাণ মর্যাদা দেবার প্রহসন আমাদের সমাজে করা হয় তা সত্যিই অতুলনীয়। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই একজন নারী সন্তান ধারণ করে। কিন্তু আমাদের সমাজে এটাকে নারীর এক অভাবনীয় গুণ(!) হিসেবেই দেখানো হয়। বলা হয় নারীরা মায়ের জাত। কই কেউ তো বলে না যে পুরুষরা বাবার জাত।
আমি নারীবাদী নই। এটা আমার সরল সত্য স্বীকারোক্তি। কিন্তু চারপাশের সমাজব্যবস্থা এবং নারীর প্রতি যে সামাজিক প্রত্যাশা বা আচরন সেটা নিয়ে আমার যথেষ্ট প্রশ্ন আছে।
ধরুণ একজনন নারী সন্তান জন্ম দিলেন। তার পরপরই তার কাছ থেকে প্রত্যাশা করা হয় তিনি ফেরেশতার মত করে সন্তানের মনের সব ভাব বুঝে ফেলবেন।
একজন নারী প্রাকৃতিকভাবে মা হন। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সন্তান জন্মের পর তাকে লালন পালনের ব্যাপারটা তো তাকে আয়ত্ব করতে হয়। একটা ছোট্ট শিশু কথা বলতে পারে না। সে যখন কাঁদে তখন একজন নতুন মায়েরও মনে প্রশ্ন জাগে কেন সে কাঁদে।
যেমন করে একজন নতুন বাবার মনে হয়!
আর প্রহসন বলছি এ কারণেই যে একজন নারী যখন মাতৃত্বকালীন ছুটি গ্রহন করেন তখন অফিস বা সহকর্মীরাই বা বিষয়টা কতটুকু ইতিবাচক ভাবে গ্রহণ করেন। সন্তিান জন্মের পর সন্তানকে ২৪ ঘন্টা সআমলানো যেন কেবল মায়েরই দায়িত্ব। সন্তান কাঁদে কেন তার কি সমস্যা এসব নিয়ে জবাবদিহিতা একজন মাকে করতেই হয় প্রায় সবার কাছেই।
কিন্তু সন্তান যতই বড় হয় সন্তানের জীবনের ব্যাপারে সকল সিদ্ধান্ত দিতে এগিয়ে আসে অন্যরা । মা গৃহিনী হলে তো কথাই নেই।
সন্তানের ব্যাপারে তার কোন সিদ্ধান্ত ....!!!!????
হয়ত পাঠক বলবেন সময় বদলেছে সবাই অধুনিক হচ্ছে। কিন্তু দৃশ্যপট কতটা বদলেছে। নারীকে যদি তার মাতৃত্ব দিয়েই সর্বোচ্চ মর্যাদা দিতে হয়, দিন। নিজ জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে একটি প্রাণ সৃষ্টি করার মত দুঃসাহস যে নারীর রয়েছে তাকে শ্রদ্ধা না জানিয়ে উপায় নেই। কিন্তু সেই সাথে লক্ষ্য রাখুন একে কেন্দ্র করে যে সামাজিক প্রত্যাশার সৃষ্টি তা যেন নারীর স্বাভাবিক জীবনে ছন্দোপতন না ঘটায়.....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।