সংঘাত এড়াতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দুটি করা হচ্ছে। ‘ঢাকা মহানগর উত্তর’ ও ‘ঢাকা মহানগর দক্ষিণ’ নামের এ দুই কমিটি ১০-১৫ দিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে। এর পরই মহানগরের সব থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হবে।
সূত্রগুলো বলছে, কোন্দল এড়াতে মহানগর কমিটি দুই টুকরো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে এতে কোন্দল কমবে, না বাড়বে, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকা এক নেতা প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের পরিধি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি কমিটি দেওয়া হলে এটা নিয়ে বিশৃঙ্খলা ও গ্রুপিং হবে। তা ছাড়া, ঢাকা সিটি করপোরেশনকে ভাগ করায় এবং ঢাকা মহানগরে আন্দোলনে গতি আনতে দুটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
কোন্দলের বিষয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ বলেন, ‘বিশ্বাস করেন, আমাদের মধ্যে কোনো অন্তর্দ্বন্দ্ব বা কলহ নেই। এটা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার।
’
তবে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দুই টুকরো করা নিয়েও বিতর্ক আছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এতে ঝঞ্ঝাট বাড়বে, না কমবে, তা নিয়ে সংশয় আছে তাঁদের মধ্যে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, ‘সব আন্দোলন-সংগ্রামে মহানগর আওয়ামী লীগ সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই মহানগরকে বিভক্ত করলে সাংগঠনিকভাবে তা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কোন্দল মাথা চাড়া দিতে পারে।
’
মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, প্রায় সাড়ে নয় বছর পর গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনের পর মহানগরের অন্তর্গত ৯৩টি ওয়ার্ড, ১৮টি ইউনিয়ন ও ৪৯টি থানা কমিটি গঠন ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
ওই সময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হলে কমিটির কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে—এ রকম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার পরও আজ পর্যন্ত সব ইউনিটের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।
ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলনের পর নতুন কমিটি ঘোষিত না হওয়ায় নেতৃত্বপ্রত্যাশীরা হতাশ হয়ে পড়ছেন। তাঁদের অনেকেই দলের কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন।
এতে করে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে। এ কারণে একের পর এক সময় বেঁধে দেওয়ার পরও ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা কমিটির সম্মেলন করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, ২০ জুন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সামনেই প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ২৬ জুন পরবর্তী বর্ধিত সভায় সবার কথা শুনে মহানগরসহ সব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর শাখার সর্বশেষ কমিটি গঠিত হয় ২০০৩ সালের ১৮ জুন।
ঢাকা মহানগর কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর হলো আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু। কেন এত দিন এ কমিটি হয়নি, সেটা খুঁজে বের করা হবে। আশা করছি, ১০-১৫ দিনের মধ্যেই এ কমিটি গঠন করা হবে। ’।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।