আমার লেখা পড়ে..................
বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তিতে জনাব তাজউদ্দিন-এর অবদানকে খাটো করে দেখার কোন উপায় নেই । তিনি মুক্তিযুদ্ধ কালীণ সময়ে দেশ পরিচালনা করেছেন দক্ষতার সাথে । একটি নিরীহ জনগোষ্ঠী, অনিয়মিত সশস্ত্র বাহিনী থেকে পূর্ণাঙ্গ একটি সামরিক বাহিনী নির্মাণ যা তা ব্যাপার নয় । কিন্তু তাও সম্ভব করেছেন বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহচর এই যাদুকর । একদিকে যুদ্ধ পরিচালনা অপরদিকে অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে সকল ধরণের আলাপ আলোচনা হয়েছে তারই নেতৃত্বে ।
সে কাজও দেবী দুর্গার মত সাফল্যের সাথে করেছেন সাদা মাঠা চালচলনের তাজউদ্দিন আহমেদ । সকল ধরণের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেই তিনি বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন । অভিমানে মুখ লুকাননি । সত্যিকারের একজন যোদ্ধা কখনও তা করেও না, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যায় ।
তখনও থেমে ছিলা না ক্ষমতা লিপ্সু রাজনৈতিক নেতাদের ষড়যন্ত্র ।
সাত্তার থেকে শুরু করে বর্তমানের কয়েকজন ডাকসাইটে নেতা ও বঙ্গবন্ধুর কয়েকজন নিকট আত্নীয় ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত । বিষয় একটাই ক্ষমতা, ক্ষমতা, ক্ষমতা ।
এই নির্লোভ, আজম্ম যোদ্ধা ক্ষমতা চাইলে তখনই বঙ্গবন্ধুর দেশে ফেরা নিয়ে কিছুটা হলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারতেন । কিন্তু বঙ্গবন্ধু’র দেশে ফেরার সময় তার আবেগ আপ্লুত আশ্রু ভিডিও ফুটেজের কল্যাণে আমরা দেখেছি । অথচ বর্তমান সরকার এমন কি শেখ হাসিনাও তার ব্যাপারে সব সময় কিছুটা নির্লিপ্ত ! কারণ কি? কারণ কি এমন হতে পারে যে বর্তমানের আওয়ামী লগের নেতারা মুক্তিযুদ্ধ কালীণ সময়ের ব্যার্থ ষড়যন্ত্রের প্রতিশোধ নিচ্ছেন, আর শেখ হাসিনা কোন কারণে হীণমন্যতায় ভোগেন জনাব তাজউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে? আসল প্রসঙ্গে যাই..........
সোহেল তাজ সরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হওয়ার সাথে সাথেই তরুণ প্রজম্মের আইকন হয়ে উঠছিলেন প্রায় ।
পাগলের সম্মেলনে একজন সুস্থ মানুষ । বিনা নোটিশে তার মধ্যরাতে ঢাকার রাস্তায় ঘুরে পুলিশ/র্যাব-এর ঠহল পরিদর্শন, যাতায়ত করা মানুষদের সাথে কথোপকথন বা তাদের জিজ্ঞেস করা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করছে কিনা ইত্যাদি মনে করিয়ে দিচ্ছিল আরব্য রজনী বা ঐ সময়কার কথা । আল্প দিনেই সোহেল তাজ বাংলাদেশের মন জয় করে নেন । হায় তার প্রাপ্তির চেয়ে তাকে মানুষ বেশী ভালবাসা দিয়েছে ! শেখ হাসিনার আত্নীয় (আওয়মী লীগ নেতা) -এর হাতে শারিরীক অপমানিত হয়ে বা দিসাহারা খাতুনের সাথে অভিমান করে তিনি মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিলেন । পরে ছাড়লেন সংসদ সদস্যপদ ।
হায়, কি বাবার কি পুত্র । তিনি কি ভেবেছিলেন রাজনিতী িএত সহজ । তার বাবা এর চেয়ে বেশী প্রতিকূলতার সাথে যুদ্ধ করেই বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমতা তুলে দিয়েছিলেন । তাজউদ্দিন আহমেদ এটা পেরেছিলেন শুধূ মাত্র তার দেশ প্রেমের কারণে । তিনি যদি তখন অভিমানে চলে যেতেন তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কি হতো তখন ? তিনি যদি বঙ্গবন্ধু বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করতেন কি হতো তখন? তিনি সত্যিকারের যোদ্ধা, তিনি প্রতিটি রক্তকণায় দেশ প্রেমিক ।
সোহেল তাজ পদত্যাগ করার আগে একবার বাংলাদেশের কথা ভাবলেন না?! ভাবলেন না তার নির্বচনী এলাকার জনগনের কথা ?!! তার কাছে দেশের চেয়ে দেশের মানুষের চেয়েও বড় তিনি নিজে ! তাকে রাস্তায় লাঠির বাড়ী খেয়ে, জেল সহ্য করে , প্রচন্ড গরমে মিছিল করে নেতা হতে হয়নি । তার পুরা আচরণে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ যদি বাসর ঘর হতো তবে তিনি মন্ত্রী/এম.পি থাকতেন । কোন ঝামেলা থাকবে না , সব কিছুই আনন্দময় (এমন যদি হতো আমিও মিনিস্টার হইতাম) । তিনি ক্ষমতা নিতে রাজী, কিন্তু কোন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে রাজী না । প্রাসাদ সড়যন্ত্র আগেও হয়েছে ভবিষ্যতেও হবে ।
একজন সাচ্চা দেশপ্রেমিক, একজন সত্যিকারের যোদ্ধা ঘরে-বাইরের সব সহ্য করে, যুদ্ধ করে এগিয়ে যায় তার লক্ষ্যে।
তিনি চলে যাওয়াতে শেষ পর্যন্ত কিন্তু লাভ হলো ঐ অর্বাচীনদেরই । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।