আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বয়স বাড়ছে আর দিন দিন কমছে আত্মবিশ্বাস।

ছোট বেলা থেকেই বলা যায় মোটামোটি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। মনে হতো, আমি এটা পারবো, আমার দ্বারা এমন ভুল হতে পারে না। কিন্তু কিছুদিন ধরে আমিও ভুল করা শুরু করেছি। যে ভুলগুলো অন্য কেউ করলে হয়ত আমি নিজেই হাসাহাসি করতাম। নিজের উপর প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসে চীড় ধরে গতবছর একদিন শীতের সকালে।

পরিচিত একজনকে বিদায় জানাতে বাস কাউন্টারে গেলাম। একটা পেপার কিনেছিলাম। একটু পড়ছিলাম, এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম, মাঝে মাঝে হাটাহাটি করছিলাম। পরিচিত জনের বাস ছেড়ে দিলে আমি ও বাসায় ফিরার জন্য গাড়িতে উঠলাম। হঠাৎ খেয়াল হলো, আমার হাতে পেপারটা নাই।

ছোট্টঘটনা, কিন্তু মনটা খুব বিষিয়ে গিয়েছিলো। রাস্তঘাটে ভীড়ের মাঝে কারো মোবাইল চলে যেতে পারে, এটা শুনে আমি অবাক হতাম, একটা ইয়াং ছেলে, তার পকেট দেখে শুনে রাখতে পারবে না, এটা কেমন কথা? বাসে, ভীড়ের মাঝে সবসময় পকেট দেখে শুনে রাখতাম, ঢাকার রাস্তায় নিয়মিত বাসে চলাচল করি। আর মোবাইল ব্যবহার করছি গত ৯ বছর ধরে। পকেট থেকে মোবাইল হাওয়া হয় নাই কখনো। কিন্তু কয়েকমাস আগে হঠাৎ একটু ভীড়ের মাঝে গিয়েছিলাম, পরে দেখি আমার মোবাইল নাই।

দুঃখ পেয়েছিলাম অনেক, মোবাইলের জন্য নয়, নিজের আত্মবিশ্বাসে চীড় ধরছে, সেজন্য। আর একবার হলো, এটিএম মেশিন থেকে টাকা তুলেছি। কার্ড নিতে ভুলে গেছি। ৩-৪ ঘন্টা পরে যখন চেক করলাম, দেখি ব্যাগে এটিএম কার্ড নাই। প্রথমে বুঝতে পারি নাই, কার্ড কি মেশিন থেকে নিতে ভুলে গেছি নাকি মানিব্যাগে ঢুকাতে ভুলে গেছি।

সর্বশেষ যেটা হলো, সেটা খুবই হাস্যকর। এটাও এটিএম বুথ নিয়ে। এটিএম থেকে ২০,০০০ টাকা তুললাম। ১০টা এক হাজার টাকার নোট। বাকী গুলো ৫০০ টাকার নোট।

গুনে দেখি আমার হাতে বেশি টাকা চলে এসেছে। সর্বমোট নোট ২৮টা। মানে ২৪ হাজার টাকা। একবার গুনি, দুইবার গুনি বার বারই ২৪,০০০ টাকা। মনের মধ্যে কেমন জানি খটকা লাগছিলো।

এটিএম বুথ থেকেতো বেশি টাকা কখনো আসে নাই, আসা সম্ভবও না। তাহলে কেমনে হলো? ব্যাংকের স্লীপে আসছে ২০,০০০ টাকা। বাকী টাকা কি আমার একাউন্ট থেকে কেটে রাখবে? আমি এই ৪,০০০ টাকা কিভাবে ফেরৎ দিবো? ব্যাংকে কাকে জানাবো। এখন আমার একাউন্ট থেকে টাকা কাটে নাই, ধরলাম, আমি ফেরৎ দিলাম, পরে যদি আবার আমার একাউন্ট থেকে ঐ টাকা কেটে নেয়? এইসব নানা চিন্তা করতে করতে বাসায় আসলাম। মাকে খুলে বললাম পুরো ঘটনা।

তারপর মাকে গুনতে দিলাম। আমার ৬৮ বছর বয়সী মা টাকা গুনে বললো, এখানে তো ২০,০০০ টাকাই আছে। ১০টা একহাজার টাকা, বাকী ১৮টা পাঁচশ টাকার নোট, বাকী ১০টা তো একশ টাকার নোট। পাঁচশ আর একশ টাকার নোটগুলো নতুন এবং কাছাকাছি রঙ এর হওয়াতে আমি একবারও আলাদা করতে পারি নাই। শেষের তিনটি ঘটনা কিন্তু গত দুইমাসে ঘটেছে।

আসলেই বুড়ো হয়ে যাচ্ছি।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।