যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই
মেঘকে আমি যখন দেখি তখন ওর বয়স আড়াই বছর। ভীষণ দুষ্টু আর প্রাণচন্চ্ঞল একটা বাচ্চা। সব ভেঙ্গে ফেলছে, ছুড়ে ফেলছে। আমার চুল টেনে ধরছে। একবার তো এমন চুল টেনে ধরেছে যে আর ছাড়ছে না।
রুনী আপা আর সাগর ভাই হাজার চেষ্টা করে ছাড়াতে পারছেনা। ও আমার চুল টেনে ধরে রেখেছে। আমি চিৎকার করছি ছাড়ো, ছাড়ো। কিছুতেই আমার চুল ছাড়েনা। তখন রেগে গেলাম আমি, বললাম মেঘ এক চড় মেরে দাঁত ফেলে দিবো।
আমার বকা শুনে মেঘ ভ্যা ভ্যা করে কান্না শুরু করলো। আর তখন আমার চুল ছেড়ে রুনী আপার পিছনে গিয়ে লুকালো। আর আমি তখন মেঘকে ধরার চেষ্টা করছি, আদর করার জন্য কিছুতেই আসলো না তখন। সাগর ভাই দুঃখ দুঃখ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমাকেও কিছু বলতে পারছেনা।
আর মেঘকেও না। এক ঘন্টা পরে অবশ্য আমি আর মেঘ আবার খেলা শুরু করি। কিন্তু এখনও কষ্ট লাগে মেঘকে আমি বকেছিলাম।
আরেকবার হলো কি !! মেঘ ওদের নতুন কেনা এলসিডি টিভি খুচিয়ে নষ্ট করে ফেললো মেঘ। রুনী আপা দুঃখে কষ্টে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলো।
সাগর ভাই বললো, আমার ছেলে আমার টাকা নষ্ট করছে। বাপ কা বেটা।
সেই মেঘ আজ বাবা মায়ের কবরের সামনে দাড়িয়ে দোয়া করে।
কি দোয়া করো মেঘবাবা? তুমি দোয়া করা শিখেছো, দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারছিনা। আমরা বড় নিষ্ঠুর মেঘ।
আমরা কোনদিনও তোমার বাবামায়ের আত্মাকে শান্তি দিতে পারবো না। আমরা সবাই মিলে তোমার বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করলেও তারা যেমন আর কোনদিন ফিরে আসবেনা, তেমনি নিষ্ঠুর প্রশাসন কোনদিন তাদের খুনীদের চিহ্নিত করবেনা। আমরা বড় দুঃসময়ের মধ্যে বাস করছিরে মেঘ। আমাদের দোষ আমরা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি, আমরা একটি দূর্নীতিতে শ্রেষ্ট দেশের বাসিন্দা। যেখানে নিজের শরীরে গুলি না লাগা পর্যন্ত আমরা ক্যামেরা ধরে ভিডিও ফুটেজ তৈরী করে যাই।
ফারজানা কবীর খান (স্নিগ্ধা) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।