মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা (জিএসপি) অব্যাহত রাখার অনুরোধ নিয়ে ওয়াশিংটন যাচ্ছে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল। পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ১৪ মে তিন দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে।
জানতে চাইলে মো. শহীদুল হক গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরের সময় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, বাণিজ্য দপ্তর ও শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। মূলত সাভারের বিয়োগান্তক ঘটনার পর সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ এবং আইএলওর সহযোগিতায় কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেওয়া কর্মকৌশলসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। ’
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, পররাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে ওয়াশিংটনগামী বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে শ্রম ও কর্মসংস্থানসচিব মিকাইল শিপার ছাড়াও বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা থাকবেন।
এদিকে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে আসছেন। ১৭ মে দুপুরে তাঁর সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির বৈঠকের খসড়া সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই বৈঠকটি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের (ইউএসটিআর) চূড়ান্ত প্রতিবেদন মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তরে যাওয়ার আগে ঢাকার শেষ অবস্থান জানাতেই এ সফর হচ্ছে। বিশেষ করে গত ২৪ এপ্রিল সাভারে ভবনধসের ঘটনায় কয়েক শ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে সংশয়ের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের জিএসপি-ভাগ্য।
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা বিয়োগান্তক ঘটনার পরদিন সাংবাদিকদের বলেন, সাভারের ঘটনার জিএসপির ভাগ্যনির্ধারণীতে প্রভাব ফেলবে।
পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত ২৮ মার্চের শুনানির পর যেসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্ন ছিল, সে ব্যাপারে ২৪ এপ্রিল উত্তর পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রকে আস্থায় নিয়ে শুনানি-পরবর্তী ওই সব প্রশ্নের উত্তর তৈরি করা হয়েছিল। ফলে বাংলাদেশের জিএসপি-ভাগ্য নিয়ে শঙ্কা অনেকটা দূর হয়েছিল। কিন্তু সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনা জিএসপির সামনে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের দেওয়া উত্তরের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর বাংলাদেশের জিএসপি নিয়ে একটি সুপারিশ তৈরি করবে ইউএসটিআর। এরপর ওই সুপারিশ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নিয়মানুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দপ্তরে পাঠানো হবে। এর মার্কিন প্রেসিডেন্টের সইয়ের পর ওই সুপারিশ চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হবে।
জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তরে ইউএসটিআরের সুপারিশ ১৫ মে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। আর এ বিষয়ে পরবর্তী তিন সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে দেখা করেন তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে বিজিএমইএর সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ চোখে পড়ছে। এটি কাটাতে সরকারের প্রচেষ্টার পাশাপাশি বিজিএমইএ কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা করতেই পররাষ্ট্রসচিব বিজিএমইএর নেতাদের ডেকেছিলেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।