আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন আগে হরতালকে প্রতিরোধ করি

আসুন আগে হরতালকে প্রতিরোধ করি আহমেদ ফয়েজ হরতাল বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে যেন বর্তমানে একটা মামুলী ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন বিষফোড়া। সরকারি দল বিরোধী দল সকলেই হরতালকে আন্দোলন বা অনিহা প্রকাশের একটা অতি সাধারণ মাধ্যম হিসেবে কেবল মনেই করছেন না গণমাধ্যমে তা বলেও বেড়াচ্ছেন যে, বিরোধী দল হরতাল করতে পারে, এটা একটা গণতান্ত্রিক প্রকৃয়া। আবার বলছেন, হরতাল তারা করতেই পারেন তবে তা হতে হবে শান্তিপূর্ণ। কোন কোন সরকারি বা বিরোধী দলের নেতা গণমধ্যমে এসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন তাদের নাম ব্যবহার করার প্রয়োজন মনে করলাম না।

হরতাল কিভাবে আবার শান্তিপূর্ণ হবে? হরতাল মানেই তো জোর করে কিছু করা। আর বিপরীত পক্ষ তা মেনে না নেওয়া। এখানে শান্তিপূর্ণ শব্দটি ব্যবহার করে দেশের শান্তিকামী মানুষকে ধোকা দেওয়ার মতই অনেকটা। আমাদের কাছে অবাক লাগে একটি হরতালে যেখানে কোটি কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে দেশের অর্থনীতির। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা যেখানে দেশের বিনিয়োগের ব্যপারে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সেখানে আমাদের দেশের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, হরতালে দেশের অর্থনীতির তেমন কোন ক্ষতি হয় না।

আরো অবাক হতে হয় সেই দায়িত্বশীল নেতা সরকার দলেরই কোন বিভাগের মন্ত্রী। কি আর বলব। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীতো বিবিসি’র এক সাক্ষাতকারে বলেই দিলেন দেশের এই উত্তেজনাকর অবস্থায় অর্থনীতিতে কোন প্রভাব পড়ছে না। বিনিয়োগকারীরা কিভাবে আবার ফিরে আসবেন সেসব কায়দা কানুন নাকি তাঁর জানা-ই আছে। অর্থাৎ বিরোধীদল যে হরতালের পর হরতাল দেবে তা এখন একটা নিয়মেই পরিণত হয়েছে।

একে থামাবার কোন প্রচেষ্টা কারো পক্ষেই নেওয়া সম্ভব নয়। সরকারি দলের নেতারা হরতালকে বৈধতা দিয়ে চলেছেন যাতে করে তারা যখন বিরোধীদলে থাকবেন তখনও তারা বৈধ ভাবেই হরতালের নামে জ্বালাও পোড়াও করতে পারেন। আর তাই দেশের সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী সমাজ থেকে শুরু করে জনসাধারণ ‘আইন করে হরতাল নিষিদ্ধ করুন’ বলে যতই বুলি আওরাচ্ছেন তাতে কর্ণপাত করছেনা সরকার। এমন অনেক কঠিন বিষয়ে আইন করে সরকার নিজেদের সুবিধাগুলো আদায় করে নিচ্ছেন। আর দেশের স্বার্থে সংসদে সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে আসা একটি সরকার এমন একটি বিধ্বংসীরূপী আন্দোলনকে নিষিদ্ধ করতে উদাসীন।

সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কিন্তু দেশের আঠার কোটি মানুষ জিম্মি নয়। তারা নিজেরাই হরতাল নামক দানবটিকে প্রতিহত করতে পারে। আমরা লক্ষ্য করেছি ঢাকা শহরের বেশ কিছু দোকান এখন হরতালে খোলা থাকে। গতকাল ৯ এপ্রিল হরতালের মধ্যেই দোকান মালিক সমিতির লোকেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে হরতালেও তাদের দোকানপাট খোলা থাকবে। রাজশাহীতে পিকেটারদেকে জনতা ধাওয়া দিয়েছে।

পিকেটার কয়জন। দোকানপাট খোলা রাখাই উচিত। আর যদি পিকেটাররা বেশী বাড়াবাড়ি করে তাহলে দোকান মালিক সমিতি ও ক্রেতাবৃন্দ মিলে তা প্রতিহত করা উচিত। শক্ত হাতে। তারা যে হাত ব্যবহার করে প্রয়োজনে সে হাতে।

আসুন হরতাল প্রতিরোধ করি। যারা হরতাল ঘোষণা করছে তারা কি দেশের শত্রু না? আসুন যারা হরতাল ঘোষণা করছে তাদেরকে দেশদ্রোহী ঘোষনা করি। দেশটা কি কারো নিজের সম্পত্তি যে পান থেকে চুন খসে গেলেই হরতালের ডাক দিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভদ্র ও ভাল আচরণের অধিকারী। দেশের মানুষ যদি এক সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে তাহলে দেশে যে হাজারটি যুদ্ধ জয় করা যায় তা এই জাতির মানুষ ভাল করেই জানে।

এই বিষয়টি দেশের হর্তা কর্তদের মনে করলে চলবে না বাঙ্গালি কিছুই বুঝে না। তারা যা করে তাই মেনে নেবে। সরকারকেই বলছি, আন্দোলনের নামে দেশের অর্থ-সম্পদের বারোটা বাজিয়ে এ কি ধরনের রাজনীতি চলছে বাংলাদেশে। আর তা এই অপার সম্ভাবনাময় দেশটিকে কোন স্তরে নামিয়ে দিচ্ছে? এসব প্রশ্নের যদি কোন সদুত্তর আমাদের কাছে না থাকে তা যদি দেশের সকল শ্রেণীর মানুষ এখনো টের না পায়, তাহলে দেশটিকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে পাওয়া খুব বেশী দিনের ব্যাপার নয় হয়তো। আর এর দায় ভার নিতে হবে- সরকার দলকে বিরোধী দলকে এবং ইসলামের নামে যারা রাজপতে ভ-ামী করছে তাদেরকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।