অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!
আজ প্রায় ঘন্টাচারেক বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার এর উদ্যোগে হয়ে যাওয়া লিডারশিপ সামিটে কাটিয়েছি। ইজাজ আহমেদ নামে একজন হার্বার্ড ফেরৎ উদ্যোক্তা বছর তিনেক আগে এই সেন্টার শুরু করেছে। আর সামিট শুরু হয়েছে গতবছর থেকে।
২৬-২৮ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমি যকণ পৌছাই ততক্ষণে আবু সাঈদ স্যার তাঁর বক্তৃতা দিয়ে ফেলেছেন।
আলী যাকেরের বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে আমি পৌছাই। আলী যাকের বলছিলেন তাঁর তারুণ্যের কথা। ১৯৭১ সনে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা প্রতিরোধ করেছেন তাদের বেশিরভাগই ছিলেন তরুন। তারুন্যের সেটাই ধর্ম। অন্যায়, অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর প্রজ্বলিত সাহস তাদেরই বেশি থাকে এবং তারা তাদের ভেতরকার জ্বলুনিটা টের পায়।
তিনি খুব পরিস্কার করে ৪৫০ জন ডেলিগেটকে বলেছেন – বিশ্বাস করো, নিজের ওপর আস্থা রাখো। পারবে।
কারণ, ওনারা পেরেছিলেন।
আজকে আমারও একটা সেশন ছিল। প্রযুক্তি আর প্র্যাকটিস নিয়ে।
জাফর স্যারের সেই সেশন মডারেট করার কথা ছিল, সশরীরে। কিন্তু তাঁকে থাকতে হয়েছে মোবাইলে। আমার সঙ্গে ছিলেন বিকাশের সিইও কামাল কাদির এবং পাই স্ট্র্যাটেজিক কনসাল্টিং-এর পিয়াল ইসলাম। সেলবাজারের জন্য কামাল কাদিরের কথা অনেক শুনেছি। আজ তার গল্পও শুনলাম।
আমেরিকা থেকে এসে একটি এনিমেশন ফার্ম করেছিলেন। কিন্তু পারেন নি। পরে সেল বাজার আর এখন বিকাশ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন যে, প্যশনেটলি লেগে থাকতে হবে। তার গল্পটা মজার এবং অনুপ্রেরণাদায়ক।
আশাকরি তরুনদের সেটা মনে থাকবে।
দুপুরে খাবার পর ওরা নিজেরা বলছিল সামিট থেকে কী শিখেছে। সেখানে প্রায় ঘন্টাখানেক থেকে ওনেক কিছুই শিখলাম। ভাল লাগলো ওরা এদের মনের কথা কতো অকপটে বলতে পারে সেটা দেখে। একজন বললো – তার ঐটা ভাল লাগে নাই।
(এরকম স্পস্ট কথা বলার বুকের পাটা আমার এখনো হয় নাই!)
সবাই নিজেদের ঋদ্ধ হওয়ার কথা বলেছে। প্রথমদিনই খেয়াল করেছিলাম, আজ ভালভাবে বুজলাম যে, এই ৪৫০জন সমাজের প্রায় সব সেক্টর থেকে এসেছে। বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম, গ্রামের কলেজ, দামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীও ছিল আনুপাতিক হারে। এসেছে দেশের প্রায় সবজায়গা থেকে। ভাবা যায়!
এদের কথা থেকে বোঝা যাচ্ছিল ওরা কীভাবে মুখিয়ে আছে তথ্যের জন্য, নির্দেশনার জন্য।
নিজেদের দুর্বলতাগুলোও ওরা অকপটে স্বীকার করছে!
আমাদের শেষনে যে মেয়েটি টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছে ও মাত্র ক্লাশ নাইনে পড়ে! খাবার টেবিলে ঘুরে ঘুরে আলাপ করার সময় একজন এসে জানতে চাইল এইচএসসির পর ইন্টার্নশীপ করা যায় কিনা?
বললাম- জীবনকে উপভোগ করো আর নিজেকে তৈরি করো। পুরো জীবনটাইতো ইন্টার্নশীপ। কাজে ইচ্ছে হলে মোবিলে ভাজা পিয়াজু খাও, রাস্তায় দাড়িয়ে আখের রস খাও, কয়েকজন মিলে কয়েকদিনের জন্য হারিযে যাও। দল বেধে বেদের মেয়ে জ্যোস্না দেকো!
নিজের কথা বলেছি, এখন রুবাই যত কিছুতে যেতে পারে আমি পারি না। সামনে আরো পারবো না।
কিন্তু তোমাদের সেই দু:খ নেই। মন যা চায় সেটাই করো। ইট ইজ ইওর লাইফ, কালার ইট। তোমার মাত্র একটি জীবন।
একজন অনেকক্ষণ তর্ক করলো কেন আমি বলেছি চাকরি করলে চাকরের অভিজ্ঞতা হয়।
আমার যুক্তিগুলো ও শুনেছে। তবে, শেষ পর্যন্ত নিজের মতে অটল ছিল।
এজাজ যখন প্রথম আমাকে এই সামিটের কথা বলেছিল তখন বলেছিলাম তিনদিনই থাকবো। পারিবারিক কারণে পারলাম না। তবে, পরের বার যে তিনদিনই থাকবো এতে কোন সন্দেহ নেই!!!
সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।