অরুণালোক পাকিস্তান থেকে আসার বছর তিনেক পরেই বিশেষ কারণে দাদার বাড়ি ছাড়তে হলো। আমার দাদার বাড়ি মাণিকগঞ্জের সিংগাইর থানার ইরতা গ্রামে। দাদার বাড়ি ছেড়ে আমরা যখন বাড়ি ভেঙে ধামরাই এলাম, মাণিকগঞ্জ তখন ঢাকা জেলার একটি মহকুমা ছিলো। বর্ষাকালের তম্বী দেহের ধলেশ্বরী নদী পেরিয়ে তিনটি গয়নার নৌকা ভর্তি করে আমাদের মালামাল এসে ভিড়লো ধামরাই থানার কাছে ঈদগাহ সংলগ্ন সাত্রাই বিলে। তখন ওটিকে আর বিল বলা যাচ্ছিল না, সাত্রাই বিল তখন যুবতী ধলেশ্বরীর সখি হয়ে গেছে।
লাল শাপলায় ছেয়ে আছে সারা বিল। ১৯৭৪ সালের কথা, আমি ছ’বছরের বালক। ধামরাই আমাদের ছোটদের কাছে তখন নতুন। তাই বালকের চোখে নতুন জায়গা দেখে দেখে বিস্মিত হচ্ছিলাম।
পাঠানটোলা প্রাইমারি স্কুলে তখনও ভর্তি হই নি।
বিভূতি ভূষণের ‘পথের পাঁচালি’র মতো আমার ইমিডিয়েট বড়ো বোনটা দূর্গা এবং আমি অপুর রোল প্লে করে চলেছিলাম। ধামরাই অধিকাংশ এলাকা তখনও জঙ্গলে পরিপূর্ণ। ঐনা মাসির জঙ্গল, আতা মিয়ার জঙ্গল, গোডাউনের জঙ্গল, ইসলামপুরের জঙ্গল, দক্ষিণপাড়ার জঙ্গল। ছোট ছোট ঝোপ-ঝাড়সহ জঙ্গলের কি আর শেষ আছে! এতো জঙ্গল দেখে আমাদের এডভেঞ্চারপ্রিয় মন তখন জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে চায়, ঘুরিও। কিন্তু বড়ো বোনটাকে স্কুলে ভর্তি করে দেওয়ার আমার এভাবে স্বাধীন আর অবারিত দিন কাটানোতে একটু ব্যাঘাত ঘটলো।
কি করি কি করি করতে করতে শীতকাল এসে গেল। কিন্তু ধামরাইয়ের শীতকালটা আমার কাছে একটা বিস্ময় হয়ে দেখা দিলো। মাঠে মাঠে দাড়িয়া বাঁধা, গোল্লাাছুট, ডাং-টুঙ্গি (ডাং-গুলি), মার্বেল আর কুতকুত খেলাগুলো কেমন যেন মিইয়ে গেল। তার বিপরীতে ছেলে, জোয়ান আর বুড়োদের হাতে নাটাই আর লম্বা লম্বা বাঁশ এসে মাঠের দখল নিলো। শুধু বাঁশ হলে কৌতুহল জাগতে না, কৌতুহলটা জাগিয়ে তুললো বাঁশের মাথায় বঙ্খই কাঁটা বা বড়ই কাঁটা বাঁধা দেখে।
বাঁশের মাথায় কাঁটা বাঁধার মাহাত্ম পরে টের পেলাম। মাঠ তো গেল এসবের দখলে। কিন্তু আকাশ? আকাশ দখল করলো ঘুড়ি মানে ঘুড্ডি (ধামরাইয়ের আঞ্চলিক উচ্চারণে গুড্ডি)। শত শত ঘুড়ি, লাল-নীল, হলুদ, বেগুনী, কমলা, দুইদু’রঙ্গি কতো যে রঙ- শেষ নেই। সাইজে যে ঘুড়িটি ছোট, তার নাম চাইরানি (চার আনায় কেনা হতো বলে এরকম নাম), কোনটা আধলী (আধুলি মানে আট আনা দাম), কোনটা ডবলি (যার দাম একটাকা)।
এ মাঠ সে মাঠ, এ বাড়ির ছাদ ও বাড়ির টিনের চালা থেকে এসব ঘুড়িগুলো আকাশে উড়তে থাকতো। এরই মাঝে আবার সুযোগ বুঝে এক ঘুড়ি আরেক ঘুড়ির সাথে প্যাঁচ খেলতো। প্যাঁচ খেলতে গিয়ে কোন ঘুড়ি যদি কাটা পড়তো, অমনি চারদিক থেকে একযোগে (শেয়ালের এক রা’র মতো) উচ্চস্বরে ধ্বনিত হতো- ‘অই যে যায়, ভম’। কেটে যাওয়া ঘুড়িটির রঙ যদি সাদা হতো, তবে চিৎকারটা হতো- ‘সাদা ডিব্বা ভম’। যে ঘুড়ি কাটতে পারতো, সে তখন গর্বে , উল্লাসে চেঁচিয়ে বলতো- ‘কেউই নাই এই জগতে, আমি আছি একলা’।
এখন এই ‘ভম’ হয়ে যাওয়া ঘুড়িগুলোকে ধরার জন্য ছুটতো বাঁশের মাথায় যারা কাঁটা বেঁধে ঘোরাঘুরি করতো তারা। চেঁচামেচি সেখানেও হতো-, ‘অই সর সর আমি ধরছি, না না আমি ধরছি, এই দ্যাখ আমার কুটায় (বাঁশ দিয়ে কিছু টেনে আনার কাজে ব্যবহার করলে ধামরাইতে তাকে ‘কুটা’ বলে) সুত্যা (ওখানে সুতার তা’ টা একটু ত্যা এ্যার মতো উচ্চারিত হয়)। চারদিকে ঘুড়ি নিয়ে সকাল থেকে চেঁচামেচি, হৈ হট্টগোল, এতো আনন্দ আমাকেও ঘুড়ির দিকে টেনে নিয়ে গেলো। দাদার বাড়ি থাকা অবস্থায় ঘুড়ি উড়তে দেখলেও নিজে কখনও উড়াই নি। কিন্তু ধামরাই এসে আমি নাটাই বানাতে শিখলাম, সুতায় মাঞ্জা দিতে শিখলাম, ঘুড়ি উড়াতে শিখলাম, ভম হয়ে যাওয়া ঘুড়ি ধরতে কুটা বানালাম।
এরই মাঝে স্কুলেও ভর্তি হলাম। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে ঘুড়ি আমাকে এতো টানতো যে, মায়ের বকুনি খেতে হতো। এভাবে কতোদিন কেটে গেছে....। অথচ আফসোস, সেই মা আজ নেই, সেই অম্ল মধুর বকুনি নেই, আমার কৈশোরের সেই দুরন্তপনা নেই, সেই মাঠ আর নেই, সেই ঘুড়ি আর আগের মতো উড়ে না এখন। বয়স হয়ে গেলে বুঝি কৈশোরের সে আনন্দে আর মেতে উঠা যায় না।
কিন্তু না- মিরপুরের দেখলাম, ঘুড়ি উড়াতে কারো বয়স লাগছে না। মিরপুরের ২ নম্বর সেকশনের মনিপুর, কাঁঠালতলার ১০৯৯/১ নং বাসার আতাউর ভাই দেখলাম পঞ্চাশ বছর বয়সেও ঘুড়ির সাথে প্রেম করে যাচ্ছেন। তিনি নিজে হাতে কাজের অবসরের আনন্দে ঘুড়ি বানাচ্ছেন, নাটাই বানাচ্ছেন, সুতায় মাঞ্জা দিচ্ছেন, ঘুড়ি উড়াচ্ছেন। এবং তারই মতো আরও অনেককেই তিনি এ আনন্দে অংশী করতে পেরেছেন। তারই ফলশ্রুতিতে তিনি তার বন্ধুদের (যদিও অনেকেই অসম বয়সী, এবং প্রায় সবাই চল্লিশোর্ধ বয়সের) সাথে উদ্যাদপন করলেন বৈশাখ ১৪১৯ কে স্বাগত জানিয়ে ঘুড়ি উৎসব।
কেন তিনি এমনটি করলেন জানতে চাইলে বললেন, ‘আসলে বাংলাদেশে ঘুড়ি উড়ছে প্রাচীন কাল থেকেই। এটি বাংলা সংস্কৃতির একটি অংশ, বাংলাদেশের ঐতিহ্য। আর ঢাকার আকাশে ঘুড়ি উড়ানোর ইতিহাসও অনেক প্রাচীন। তো, এ ঐতিহ্যটি ইদানিং হারিয়ে যেতে বসেছে। কাজের অবসরে এটি একটি চমৎকার চিত্তবিনোদন।
ঢাকায় যদিও আগের মতো মাঠ নেই, খোলা জায়গা নেই, তবু ঘুড়ি আছে, সংখ্যায় অল্প হলেও আকাশে ঘুড়ি উড়ছে। এখন ঘুড়ি উড়াতে হয় বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে। আমি ঘুড়ি উড়াই মূলতঃ ঐতিহ্যটিকে ধরে রাখার জন্য এবং নতুন প্রজন্মের কাছে ঘুড়িকে আগের মতোই জনপ্রিয় করে তোলার জন্য। পৃথিবীর অনেক দেশেই ঘুড়ি উৎসব হয়ে থাকে। এ থেকে যেন আমাদের দেশও পিছিয়ে না থাকে, আমার ঘুড়ির প্রতি আকর্ষণের এটিও একটি কারণ।
”
গত ৬ই বৈশাখ ১৪১৯ তারিখে আতাউর রহমানের নেতৃত্বে ঘুড়ি উৎসব উদ্যাপন করলেন অনেকেই। তাদের মধ্যে জুয়েল, আতাউর রহমান, জুয়েল টু মানে দুই নম্বর জুয়েল, পারভেজ, রাকিব, কাজী সেলিম, মুখলেসুর রহমান মুকুলসহ ছিলেন নাম না জানা অনেকেই। উৎসবের উদ্বোধনী শেষে কেউ নিজের বাড়ির ছাদে, কেউ বন্ধুদের ছাদে দাঁড়িয়ে উড়ালেন ঘুড়ি। সে এক চমৎকার দৃশ্য। একের পর এক ঘুড়ি উড়ছে, ঘুড়ির কাটাকাটি খেলা চলছে।
যে ঘুড়ির প্যাঁচের খেলায় অন্যজনকে হারিয়ে দিতে পারছে, তার মুখে দেখা যাচ্ছে আনন্দোজ্জ্বল হাসি, বন্ধুদের কটাক্ষ করছে। ভাবটা এমন, ‘কি রে, আর লাগতে আসবি?’ যার ঘুড়ি কাটা পড়ছে, সে পরের চান্সে জেতার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছে। সে দৃশ্য দেখার জন্য উঁচু উঁচু বাড়ির ছাদে থেকে দর্শকরা ভিড় জমিয়েছে। অবসরের চিত্ত বিনোদন যে এতোটা প্রাণবন্ত হবে, না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। আগেই বলেছি, বয়সে উনারা অনেকেই প্রবীণ, কিন্তু ঘুড়ি উড়ানো উত্তেজনায় তারুণ্যকে হার মানায়।
ওদের তারুণ্য দেখে গুরু কাজী নজরুল ইসলামের ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের “আমি বার্ধক্যের উর্দির নিচে দেখেছি তারুণ্যের প্রদীপ্ত যৌবন” মতো করে বলতে হয়-
বয়সের কাছে মানে নিকো হার তারুণ্য হৃদয়ের
তাই বুঝি ওরা মেতেছে এখানে আনন্দ চিত্ত জয়ের।
হ্যাঁ, উনারা ঘুড়ি উড়ানোকে কেন্দ্র করে চিত্ত জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছেন। উনাদের কাছে বয়স কোন বাধা হয়ে দেখা দেয় নি। নির্মল আনন্দ, চিত্তবিনোদনের জন্য বয়স কোন বিষয়ই নয়, উনারা প্রমাণ করলেন।
**********
পৃথিবীতে ঘুড়ির ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গাছের পাতা দিয়ে ঘুড়ি বানিয়ে উড়ানোর ইতিহাসও জানতে পারা যায়। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারতে গাছের পাতাকে সুতোয় বেঁধে ঘুড়ির মতো করে উড়ানোর খরবও পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৪শ’ বছর আগে প্রথম ঘুড়ি উড়ানোর দাবীদার বলে ভাবতেন গ্রিসের বিজ্ঞানী আরকেতিয়াস। তবে গ্রিসের আগেও চীনারা ঘুড়ি উড়িয়েছে, এমনটা দাবী করে বলে শোনা যায়। তারা ৩ হাজার বছর আগে থেকেই ঘুড়ি উড়ায়।
তবে দাবীদার হিসেবে যেই ভাবুন না কেন, ঘুড়ি উড়ানো থেমে নেই। পৃথিবীতে অনেক দেশেই ঘুড়ি উড়ানোকে জাতীয় উৎসবের মর্যাদা দিয়ে থাকে। যেমন চীন, জাপান, তাইওয়ান। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও সত্য যে, এসব দেশে ঘুড়ি উড়ানোকে কেন্দ্র করে সরকারি ছুটির ঘোষণা করা হয়। অনেক দেশে ঘুড়ি উড়ানো ধর্মীয় সংস্কৃতি হিসেবে পালন করে।
ভারতের গুজরাট প্রদেশের লোকেরা সুন্দর সুন্দর ঘুড়ি উড়িয়ে সূর্য দেবতাকে খুশি করে মনের আকুতি, অভিলাষ প্রকাশ করে। তবে চীনাদের ঘুড়ি উড়ানোটা শুধু উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো না। ঘুড়ি দিয়ে তারা গোয়েন্দার বাহনের কাজটিও সারতো। তারা শত্রু সৈন্যদের অবস্থান জানার জন্য বড়োসড়ো ঘুড়ির সাথে মানুষ বেঁধে আকাশে উড়িয়ে দিতো। শুধু তাই না, তারা নিচে থেকে উপরে মালামাল পাঠানোর জন্য ঘুড়ির ব্যবহার করতো।
মালয়েশিয়ায় ঘুড়িকে পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। তার ঘুড়িকে জ্বিন বা ভূতের ওঝা হিসেবে মান্য করে। বাড়ির আশপাশ থেকে ভূত তাড়াতে তাই ওরা ঘুড়ি উড়ায়। তৈরি করার সময় এসব ঘুড়ির মধ্যে কিছু ছিদ্র রাখা হয়। উড়ন্ত ঘুড়ির সে ছিদ্রপথে বাতাস ঢুকে এক ধরনের শব্দ হয়।
ঐ শব্দ জ্বিন-ভূতের শত্রু, তাই তারা নাকি পালিয়ে যায়। এবার বুঝুন ঠ্যালা। তবে কিনা, বিশ্বাসে বস্তু মেলে, তর্কে বহুদূর। নেপালে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবকে মাঘি নামে ডাকা হয়, থাইল্যান্ডে সংক্রান, লাওসে পিমালাও, মিয়ানমারে থিং ইয়ান। আমাদের দেশে পৌষ সংক্রান্তি, সাকরাইন হিসেবে সবাই জানে।
তবে অঞ্চলভেদে একে হাকরাইনও বলা হয়।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুড়ির আকার আকৃতির পার্থক্য আছে। ড্রাগন ঘুড়ি, ফিনিক্স ঘুড়ি, ঈগল ঘুড়িসহ আরও অনেক রকম ঘুড়ি। আমাদের দেশের ঘুড়িগুলোর বেশিরভাগই পতেঙ্গা। তবে বাঙ্ঘুড়ি, আকাশপ্রদীপ, মদনা, আউক্কা, চংগঘুড্ডি, সাপাঘুড্ডি, গোয়াঘুড্ডি, মানুষঘুড্ডি, চিলাঘুড়িসহ আছে নানা জাতের ঘুড়ির দেখা পাওয়া যায়।
ঘুড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ, বাঁশ, পাতলা কাগজ, আঠা। মাপ মতো সবকিছুর ব্যবহার করে ঘুড়ি তৈরি না করলে ওটি আকাশে ভাল উড়বে না। শুধু কি তাই! ঘুড়ি উড়ানোর জন্য চাই শক্ত সুতা। আর কেউ যদি কাটাকাটি বা ঘুড়ির প্যাঁচ খেলতে চায়, তবে তাকে সুতায় মাঞ্জা দিতে হবে। সুতার মাঞ্জার কাছে সাধারণত কাঁচের মিহি গুড়ো, সাবুদানা বা ভাতের মার বা এরারোট পাউডার ব্যবহৃত হয়।
গরম পানিতে পরিমাণ মতো উপকরণ মিশিয়ে সুতার মাঞ্জা সঠিকভাবে দিতে না পারলে ধার উঠবে না। ফলে কাটাকাটি খেলতে গিয়ে শুধু হেরে যেতে হবে। তাই মাঞ্জার জন্য ভাল সুতা নির্বাচন করা থেকে সবগুলো উপকরণের সঠিক ব্যবহার জানতে হয়। আর সবকিছু ঠিকঠাক মতো হলেই কেউ কাটাকাটিতে অংশ নিতে পারে। কিন্তু অন্যের ঘুড়ি কাটতে যাওয়ার আগে তাকে বাতাসের গতিবিধি সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকতে হবে।
বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশও ঘুড়ি উড়ানোতে পিছিয়ে নেই। সেই মুঘল আমল থেকে এ দেশের মানুষ ঘুড়ি উড়ানো উৎসব করে। শোনা যায়, নবাবরাই নাকি এ উৎসবের অগ্রপথিক। এটা নাকি তাদের রেওয়াজ ছিলো। তারা পৌষ সংক্রান্তির দিনে এ উৎসব পালন করতেন।
কালক্রমে তাদের এ পৌষ সংক্রান্তির উৎসবটাকে পুরানো ঢাকার বাসিন্দারা আজও ধরে রেখেছেন। ঘুড়ি উড়ে সেন্টমার্টিনেও। নানা বর্ণের, নানা আকৃতির ঘুড়ি নিয়ে উৎসব হয় সেখানে। আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে, সেন্টমার্টিনে উড়ানো হয় প্যারাসুট ঘুড়ি। এটি কি যে সে ঘুড়ি! এ ঘুড়ি উড়াতে নাকি জনা বিশেক লোকের দরকার পড়ে এবং এ লোকগুলো ঘুড়ির সাথে সাথে আকাশে উড়ে।
ভাবা যায়! ঘুড়ির আকৃতি কতো বড়ো হলে আর বাতাসের বেগ কতো প্রবল হলে এ ধরনের ঘুড়ি উড়ানো যায়! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ঘুড়ির উৎসব হয়। এ বছরই ঢাকা আদিবাসী ফোরাম, বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন আয়োজন করেছিলো ঘুড়ি উৎসবের। মানিকগঞ্জের ঘুড়ি উৎসবও বেশ আলোড়ন সৃষ্টিকারী। নানা জাতের, বর্ণের ঘুড়ি উড়ে ঐ উৎসবে। বিশেষত: মাণিকগঞ্জের ঝিটকা, হরিরামপুর ঘুড়ি উৎসবের জন্য বিখ্যাত।
ঘুড়ি উড়ে ঢাকার মিরপুরে। ঘুড়ি উড়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়। অবশ্য ঘুড়ি উড়ানোর সত্যিকার মৌসুম হচ্ছে শীতঋতুর পৌষ মাস। এ মাসেই পৌষ সংক্রান্তির মেলা হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এবং পৌষ সংক্রান্তির প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে ঘুড়ি উড়ানো।
এতোসব ঘুড়ি উড়ানোর খবর শোনে আপনারও যদি উড়াতে ইচ্ছে করে, তবে হাতে নাটাই আর ঘুড়ি তোলে নিন। আর যদি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চান তবে বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
তৈয়ব খান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
পাক্ষিক সময়ের বিবর্তন
তারিখ: ২৪ এপ্রিল, ২০১২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।