বিষন্নতা উচ্ছাসের উৎসব ফেসবুকে লগ-ইন হতেই কলেজের বন্ধু বিদিশার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস 'সিংগল' দেখে মাথায় হাত অনিন্দ্যর। সঙ্গে সঙ্গে বাকি বন্ধুদের মোবাইলে সেই বার্তা রটি গেল ক্রমে-'বিদিশার আবার ব্রেক আপ হয়ে গেছে'! জানা গেল, গত ৫ বছর এই নিয়ে সাত বার। ব্যস্ সমবেদনা এবং কারণ সন্ধানে ইউনিভার্সিটির মাঠে বসল বন্ধুদের গোল টেবিল। কারণটি কী? 'কী আবার? এই পুরুষ জাতটাকে বিশ্বাস করাটাই পাপ। পটানোর আগে লেজ নেড়ে পিছনে ঘুরবে, আর একবার হ্যাঁ বললেই ব্যাস-পাশে হাঁটতে হাঁটতেও অন্য মেয়ে দেখলেই ছোকছোক।
সব ক'টা এক রকম! সাফ বিবৃতি বিদিশার।
হয়ে গেল গোলটেবিলে বিভাজন! দলের সব ছেলে এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদী-'এভাবে জেনারালাইজ করিস না বস। সবাই এক রকম নয়। 'বরাবর মুখরা বলে পরিচিত পায়েল তেড়েই গেল অনিন্দ্যর দিকে-'একদম সাধু সাজবি না। অল মেন আর সেম।
প্রপোজ করার আগে কত কমিটমেন্টের বুলি! আর তারপর যে কোনও সুন্দরী মেয়ে দেখলেই, টেরিয়ে ঝাড়ি আর জিভ বের করে তাকানো। কমিটমেন্টের মানে বুঝিস তোরা?'
একটু দমের ফাঁকে পুরুষ জাতির মুখপাত্র হয়ে নীলাঞ্জন-'আই অপোজ। ছেলেরা সুন্দরের পূজারী। তাই সে যেমন মেয়েই হোক, আমরা তাকাই। কিন্তু ওইটুকুই।
ব্যস তারপরে নিজের কমিটমেন্টে আমরা অটল। '... ক্যামেরা ডিফিউজ হতে হতে দেখাচ্ছে দুই দলে লড়াই এখনো চলছে। বলা বাহূল্য এ চিরকাল চলবে। কিন্তু পুরুষ পাঠক-এবার তো আপনার দাঁত কিড়মিড়ের পাল। খোদ মার্কিন দেশের বিজ্ঞানীরা তো আপনাদের বিরুদ্ধেই পেপার লিখে জার্নাল ছাপিয়ে ফেললেন।
তাঁরাও বলছেন, প্রেমিকা অথবা স্ত্রী বর্তমান থাকা সত্ত্বেও পাশে বা বাসে সুন্দরী মেয়ে দেখলেই 'এই ছোকছোকানি' পুরুষ জাতির মজ্জাগত। যারা ইতিমধ্যেই ধোলাইয়ের হাত থেকে বাঁচার জন্য পিঠে কুলো বাঁধবেন, ঠিক করেছেন, তাদের জন্য- টুক করে গুগুল সার্চ করে মারমুখী প্রেমিকা বা স্ত্রীকে দেখিয়ে দিন, ছোকছোকানির দায় আপনার সদা কমিটেড মনের নয়, এক লক্ষীছাড়া পুরষ হরমোনের! নাম অ্যাণ্ড্রোজেন।
অক্সিজেন ছাড়া যেমন মানুষ বাঁচে না, তেমনই অ্যাণ্ড্রোজেন ছাড়া পুরুষ বাঁচে না। কারণ এই হরমোন পুরুষের কিডনি নিঃসৃত হয়। সৃষ্টির আদি থেকে কেন, ছেলেদের গায়ে এই 'ছোকছোকানি' তকমা সেঁটে আছে, তার ইতিহাস ও বিজ্ঞান খুঁজতে খুঁজতে আমেরিকার একদল শরীর বিজ্ঞানী অ্যাণ্ড্রোজেন-এর গোপন সুড়সুড়ির তথ্য পেয়েছেন।
তাঁরা জানাচ্ছেন, লোভনীয় খাবার দেখলেই জিভে যেমন জল আসে, ঠিক সেই রকম রমণী দেখলেই স্থান-কাল-পাত্র ভেদে পুরুষের কিডনি নিঃসৃত এই হরমোন শরীর-মনে না চাইতেও পুলক জাগায়। ফলস্বরুপ খানিকটা সে আড় চোখে ঝাড়ি মারে। পরিণতিতে অবশ্য বৌয়ের ঝ্যাঁটা বা প্রেমিকা বিয়োগ! ব্যস হাফ ছেড়ে বাঁচুন। একগোছা গোলাপ নিয়ে অবধারিত বিচ্ছেদও মেটাতে বলুন-'এ আমার মন নয় সোনা, শুধুই হরমোন'। আর মহিলারা? চাপ নেবেন না।
ভাবুন তো-আহা গো বেচারা পুরুষ! কিডনি গেলে বাঁচবে নাকি?
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।