আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কি যেন সে খুলে বলতে পারছিল না ; উচিত ছিল আরো একটু খুলে বলা তাতে জাতি অন্ধকার রাজনীতির গোপন দিকটার কিছুটা জানতে পারত

নির্বাচনী এলাকার কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এক চিঠিতে সদ্য পদত্যাগী সাংসদ তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেছেন, অনেক ‘চিন্তা-ভাবনা’ করেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যদিও এর কারণ ‘খুলে বলা’ তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। সোমবার সকালে এপিএস আবু কাওসারের মাধ্যমে স্পিকার আব্দুল হামিদের কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ। পাশাপাশি নিজের অবস্থান ব্যখ্যা করে তিনি একটি চিঠিও লিখেছেন, যা সোমবার নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা নিউজওয়ার্ল্ডর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। এপিএস আবু কাওসার জানান, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সোহেল তাজ গাজীপুরের কাপাশিয়ায় নিজের নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের উদ্দেশ্যে ওই চিঠি লিখেছেন। এতে তিনি বলেছেন, “সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত নিতে আমার অনেক চিন্তাভাবনা করতে হয়েছে।

মানুষের প্রত্যাশা, ভালবাসা, স্নেহ, আমার জন্য এলাকার মানুষের ত্যাগ স্বীকার, আবেগ এই সবকিছু চিন্তা করার পরও বাস্তবতা বিচার করে আমি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি। ” “কাপাশিয়ার মানুষের সম্মান রক্ষার্থে আমার সামনে এছাড়া আর কোন পথ খোলা ছিল না। কারণ কাপাসিয়ার মানুষের মর্যাদা ও সম্মান আমার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি জানি, আমার এই সিদ্ধান্তে আপনারা ক্ষুব্ধ ও অভিমানী হবেন, প্রতিবাদ করবেন। কারণ যে ভালাবাসা ও সম্মান আপনারা আমাকে দিয়েছেন এই সম্মানের ওপর কোন কালিমা পড়–ক তা আমি চাই না।

সঙ্গত কারণেই সবকিছু খুলে বলতে পারছি না। ” সংসদ সদস্য পদ ছাড়ার কারণ চিঠিতে স্পষ্ট কিছু বলেননি সোহেল তাজ। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, “কথার পেছনে অনেক কথা থাকে। অনেক লুকায়িত সত্য থাকে। যা দেশ, জনগণ ও দলের বৃহত্তর স্বার্থে জনসম্মুখে বলা উচিত না।

আর তা সম্ভবও নয়। শুধু এইটুকু বলি, আমি ‘সঙ্গত’ কারণেই এমপি ও মন্ত্রীত্বের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। ” বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের ছেলে সোহেল তাজ এই চিঠিতে দাবি করেছেন, যে কয়দিন দায়িত্বে ছিলেন, শপথ ও আদর্শ থেকে তিনি বিচ্যুত হননি। সক্রিয় রাজনীতিতে ‘আর না ফেরার’ ইংগিত দিলেও এলাকার মানুষের ‘পাশে থাকার’ কথা বলেছেন। “সক্রিয় রাজনীতিতে পুনরায় আসার সম্ভাবনা না থাকলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাবা তাজউদ্দীন আহমেদের আদর্শে গড়া আওয়ামী লীগই আমার শেষ ঠিকানা”, বলেন তিনি।

ক্ষমতা, অর্থসম্পদ, খ্যাতি প্রতিপত্তির জন্য রাজনীতিতে যোগ দেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যদি উদ্দেশ্য তাই হতো, তাহলে সবকিছু মেনে নিয়ে এখনো এমপি ও মন্ত্রীত্বের পদ আঁকড়ে থাকতাম। ” ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন সোহেল তাজ। এর পাঁচ মাসের মাথায় ২০০৯ সালের ৩১ মে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। তবে সে সময় রাষ্ট্রপতি তা ‘গ্রহণ করেননি’ বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ওই পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার তিন বছর পরও সোহেল তাজের ব্যাংক হিসাবে প্রতিমন্ত্রীর বেতন-ভাতা জমা হতে থাকায় গত ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি দেন তিনি।

পাশাপাশি তিনি পদত্যাগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারিরও আবেদন জানান। কাপাশিয়াবাসীর উদ্দেশে লেখা চিঠিতে সোহেল তাজ বলেন, “২০০৯ সালের ৩১ মে বাংলাদেশ সংবিধানের ৫৮(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর হাতে আমার পদত্যাগপত্র দিই। ১ জুন আবারো সেই পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাই। এরপর থেকে অদ্যাবধি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমি কোথাও কোনো কিছুতে স্বাক্ষর করিনি। ” বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের পাঁচ বছরে হামলা, মামলা ঠেকাতে বেশিরভাগ সময় রাজপথ ও আদালত প্রাঙ্গণে সময় কাটাতে হয়েছে উল্লেখ করে সোহেল তাজ তার চিঠিতে বলেন, “কোনো ব্যবসা বাণিজ্যে নিজেকে জড়াইনি।

পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে যা আয় হতো তাই দিয়েই চলতো আমার রাজনীতি। এমনকি পৈত্রিক সম্পত্তিও বিক্রি করেছি রাজনীতির জন্য। খুব সাদামাটা সাধারণ জীবন যাপন করেছি। ” একটি সুন্দর সমাজব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যে মন্ত্রণালয় কেউ নিতে চায়নি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসে সেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। এই দায়িত্বটি ছিল শুধু মন্ত্রীত্ব নয়, একটি চ্যালেঞ্জ।

“আমার সব সময়ই চেষ্টা ছিল পুলিশ বাহিনীকে একটি সৃশৃংখল পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে জনগণের বন্ধু করে তোলা। মন্ত্রীত্বের শেষ দিন পর্যন্ত আমার সেই চেষ্টা অব্যাহত ছিল”,বলেছেন সোহেল। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।