আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডঃ জাকির vs হিন্দুধর্ম ।।

ডঃ জাকির vs হিন্দুধর্ম । । ডঃ জাকির নায়েক এর দাবী- অথর্ববেদ ২০/১২৭/১; তিনি নরসংশ যার অর্থ প্রশংসিত, তিনি কৈরামা অর্থ শান্তির রাজপুত্র- যিনি ৬০০৯৯ জন শত্রুর মধ্যেও নিরাপদ ছিলেন; যেহেতু মুহম্মদ শব্দের অর্থও প্রশংসিত আর তখনকার সময়ে মক্কার অধিবাসী সংখ্যাও ছিল প্রায়৬০০০০ সেহেতু এটা মুহম্মদ কেই ইঙ্গিতকরা হয়েছে । । ** প্রকৃত অর্থ বিশ্লেষন- নরসংশ শব্দের অর্থ কোনভাবেই 'প্রশংসিত' নয় বরং প্রশংসাকারী, তাই এটার অর্থ মুহম্মদ এর সমার্থক নয় ।

আরযদি হতও তারপরও নামের অর্থ মিল দিয়ে এরুপ বলাটা হাস্যকর । যেমন ধরুন, 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম' এর অর্থ পরম করুনাময় এর নামে শুরু করছি । অপরদিকে সংস্কৃত তে'দয়ানন্দ নমো নমোঃ' এর Literal অর্থ হচ্ছেপরম দয়াময় এর নামে শুরু করছি । তার মানে কি এই যে কোরান মহর্ষি দয়ানন্দ স্বরস্বতী এর ভবিষ্যত্বানী করছে?? কৈরামা শব্দের অর্থআসলে হচ্ছে, যিনি শান্তির সাথে পৃথিবী তে বসবাস করেন । সারাজীবন অসংখ্য রক্তহ্ময়ী যুদ্ধে লিপ্ত থাকা (হোক তার কারন Positive or Negative) মুহম্মদ, তাই ছিলেন কি ?? পরন্তু মক্কার অধিবাসী কত ছিল তা কোন জায়গায়ই লিপিবদ্ধ নেই ।

জাকির নায়েক এর এই জনসংখ্যা সম্পুর্ন মনগড়া কল্পনা । জাকির নায়েকের দাবী- ২০.১২৭.২- তিনি উট আরোহনকারী ঋষি যার রথ স্বর্গ স্পর্শ করে- যেহেতু উটের কথা বলা হয়েছে সেহেতু এটা মরুভুমির কথা । এছাড়া মনুসংহিতা (১১.২০২) মতে, একজন ব্রাক্ষ্মন এর উটে চরা নিষিদ্ধ সেহেতুএখানে কোন ভারতীয় এর কথা বলা হয়নি । । **প্রকৃত অর্থ বিশ্লেষন- মনুসংহিতা ১১.২০২ এ বলা হয়েছে, ব্রাক্ষ্মন এর উট আরোহন নিষিদ্ধ কিন্তু বেদের এই সুক্তটি একজন রাজর্ষি বা ক্ষত্রিয় ঋষির জন্য ।

অপরদিকে মরুভুমি শুধু আরবে নেই ভারতেও আছে (রাজস্থান)। । জাকির নায়েকের দাবী-২০.১২৭.৩- তিনি একজন 'MAMAH' ঋষি যাকে দেয়া হয়েছে ১০০ টি স্বর্নমুদ্রা, ১০ টি হার, ৩০০টা অশ্ব, ১০০০০ গাভী । এখানে MAMAH অর্থ উচ্চ শ্রদ্ধাযুক্ত, ১০০ টি স্বর্নমুদ্রা দিয়ে মুহম্মদ এর ১০০ জন অনুসারী এবং ১০ টি হার দিয়ে ১০ জন সাহাবীকে বোঝানোহয়েছে । এছাড়া গো অর্থ গরু ছাড়াও GAW or Go to war এবং এর মাধ্যমে যুদ্ধে যাওয়া ১০০০০ সাহাবী কে বোঝানো হয়েছে ।

তাছাড়া গরু খুবই দয়াশীল ও শান্ত প্রানী, ঠিক যেমন ছিলেন মুহম্মদএর ওই সৈন্যরা । ** প্রকৃত অর্থ বিশ্লেষন- প্রথমেই বলে নেই যে,এই দাবীটি ছিল সবগুলো দাবীর মধ্যেসবচেয়ে হাস্যকর । এখানে শব্দটি MAMAH(মমহ) নয় বরংMAMAHE(মম-আমি ,অহে-দেই), কোনভা­বেই যার অর্থ উচ্চ শ্রদ্ধাশীল নয় । এছাড়া কোনখানেই পাওয়া যায়না যে গো অর্থ GO TO WAR হতে পারে । গোপথ ব্রাক্ষ্মন এ গো অর্থ দেয়া হয়েছে- গরু, পৃথিবী ।

কিন্তু যখনই কোন উপহার অথবা দানের কথা (যেটা এখানে বলাহচ্ছে) বলা হয় তখন গরু অর্থটা প্রযোজ্য । তখনকার দিনে গাভীদান অত্যন্ত প্রচলিত একটা রীতি ছিল । আর গরু অর্থ দয়াশীল এবং শান্তইহয়ে থাকে তবে মুসলমানরা গরু হত্যা করে কেন ?? এখন আবার ১০টি হার ১০ জন সাহাবী হয়ে গেছে । মুসা এরও তো ১০ টি Commandment ছিল । তাহলে এখন ইহুদিরা যদি দাবী করে এটা MOSES এর কথা বলেছে ? জাকির নায়েকের দাবী- ঋগবেদ ১/৫৩/৯- ঋষিকেবলা হয়েছে সুশ্রম যার অর্থ প্রশংসিত, আরবীতে মুহম্মদ শব্দের অর্থও একই ।

** আবার ও শব্দের বিকৃতি । এখানে শব্দটি হচ্ছেসুশ্রবস যার অর্থ বিশ্বাশযোগ্য সহচর । জাকির নায়েকের দাবী- অথর্ববেদ ২০/২১/৬- এখানে একটি শব্দ আছে Karo যার অর্থ Praying one আরবীতে যার অর্থ আহমদ, মুহম্মদ এর অপর নাম । কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হল মন্ত্রটিতে KARO বলতে কোন শব্দই নেই! এখানে শব্দটি হচ্ছে KARAVE যার অর্থ 'কর্মদক্ষ' । জাকির নায়েক এর দাবী- সামবেদ ২.৬.৮- একটি অংশ আছে Ahm At Hi যেটা আসলে পন্ডিতগনভূল বুঝেছেন ! এটা আসলে হবে Ahmed ! প্রকৃত অর্থ বিশ্লেষন- আসলেই বুঝতে পারছিনা যে এটা কি ইসলামের ভাষায় তথাকথিত কাফেরদের হাসাতে হাসাতে মেরেফেলার নতুন জিহাদ কিনা ।

কেননা সামবেদের আগাপাস্তালা খুঁজেও ২.৬.৮ বলে কোনমন্ত্র পেলাম না ! জাকির নায়েক এভাবেআরো একবার বেদ এ হিজাব খুঁজতে গিয়েঋগবেদ ১০.৮৫.৩০ এর রেফারেন্স দিয়েছিলেন যা আসলেবেদ এ নেই ই ! বেদ জীবনে চোখে না দেখেই কাদিয়ানীদের বই থেকে কপি পেস্ট করার ফলাফল এটা । অপরদিকে জাকির এর নূন্যতম সংস্কৃত জ্ঞান না থাকার প্রমান হল অহম (Ahm)শব্দটি না বোঝা । বৈদিক ধর্মের অত্যন্ত বিখ্যাত একটি মন্ত্র 'অহম ব্রহ্মাস্মি' অর্থাত্ আমার(এই) আত্মা ই ব্রহ্মের স্বরুপ । অহম অর্থ আমি নিজে, এই সামান্য অর্থটাওজানেনা যে সে এসেছে বেদ নিয়ে ভন্ডামী করতে !! সাধারন হিন্দুদের অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে এসব অপপ্রচারচালাচ্ছে তারা । তাই আমাদের সকলেরই বেদ শিক্ষা অত্যন্তজরুরি ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।