যুথি ঢাকা পৌঁছার ক'দিন পরই বীথি মোবাইল করল কিন্তু যুথির আর কোন খবর নেই। যুথির মোবাইল সবসময় বন্ধ, মোবাইল করলেই সেই বেরসিক মহিলার কন্ঠস্বর, এই মুহূর্তে মোবাইল সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না অনুগ্রহপূর্বক কিছুক্ষণ পর আবার ডায়াল করুন। যুথি কোনদিন যোগাযোগ না করলেও বীথি প্রায়ই জামালের সঙ্গে কথা বলে। প্রথম প্রথম একবার মোবাইল করে কল ব্যাক করতে বলতো তারপর একটা করে মিস কল। জামাল রিং ব্যাক করে অনেকক্ষণ কথা বলে।
আজকাল বীথি সঙ্গে কথা বলার সময় জামাল কোনদিন যুথির কথা জিজ্ঞেস করে না। একদিন বীথি নিজেই কথা প্রসঙ্গে বলল, ভাইয়া যুথির কোন খবর জানেন?
জামাল বলল, না তো? কি হয়েছে?
শুনলে অবশ্য আপনি কষ্ট পাবেন।
তবু বলো।
হঠাৎ করে যুথির বিয়ে হয়ে গেছে।
জামালের বুকে যেন হঠাৎ করে প্রচণ্ড আঘাত লাগল।
তার হৃৎপিন্ডের গতি বেড়ে গেল। তার মনে অনেক কথার ঝড় বইছে, তবে কি যুথির বিয়ের জন্য খালা আম্মা ওকে ঢাকা পাঠিয়ে দিয়েছে? এতদিন বাসার এমন কোন কথা নেই যে খালা আম্মা, জুঁই-যুথি আমার কাছে লুকাতো আর যুথির বিয়ের মতো একটা এতবড় ঘটনা আমাকে পাশ কাটিয়ে গেল। তবে কি তারা কৌশলে আমাকে পাশ কাটিয়েছে নাকি শুধু আমাকে পাশ কাটানোর জন্যই ঢাকায় খালার বাড়িতে যুথির বিয়ের আয়োজন করেছে?
জামাল কোনমতে সামলে নিয়ে বলল, কষ্ট পাবো কেন? যুথির বিয়ে হয়েছে জেনে আমি খুব খুশি হয়েছি বিয়ের আগে জানলে একটা সুন্দর গিফ্ট দিতাম।
বীথির কন্ঠস্বর ভেসে এলো, সত্যিই খুশি হয়েছেন?
হ্যাঁ সত্যিই আমি খুবই খুশি হয়েছি।
কেন?
আমি তোমার মতো সুন্দর একটা মেয়ের সঙ্গ পাচ্ছি বলে।
বীথি যেদিন থেকে যুথি কথা বলছে না সেদিন থেকে আমার মনে হচ্ছিল যুথি হয়ত আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ পাচ্ছে না। কিন্তু যখন দেখলাম তুমি আমাকে মোবাইল করছ অথচ যুথি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে না তখন বুঝলাম কিছু একটা হয়েছে। তারপর যখন তোমার সঙ্গে কথা বলাটা নিত্যদিনের একটা অভ্যাসে পরিণত হলো এবং একদিন কথা না বললে আমি একটা শূন্যতা অনুভব করলাম। সেদিন থেকে যুথির স্মৃতি আমার মন থেকে মুছে যেতে লাগল এবং ওর ছবির জায়গায় তোমার ছবিটা ভেসে উঠল। তাই আমি যুথির বিয়ে হয়েছে শুনে খুশি হলাম, বলে জামাল কৃত্রিম হাসি হাসল।
জামাল অনেক কথা বলার পরও বীথির কোন কথা ভেসে না আসায় জামাল বলল, হ্যালো বীথি।
জি বলুন শুনছি।
তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
জি বলুন।
তোমার কি প্রতিদিন আমার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে না?
ইচ্ছে করে বলেই তো প্রতিদিন আপনার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলি। আপনার সঙ্গে কথা বলতে আমার খুব ভালো লাগে।
কোনদিন কথা না বললে খুবই খারাপ লাগে।
জামাল হেসে বলল, তুমি কি বুঝতে পাচ্ছ? আমরা দু'জনে প্রেমে পড়েছি।
বীথির কোন কথা ভেসে এলো না।
জামাল বলল, বীথি তুমি চাইলে আমি ঢাকা আসতে পারি।
বীথির উৎফুল্ল কন্ঠস্বর ভেসে এলো, আপনি ঢাকা আসছেন? সত্যি?
বলছি তো তুমি যখন চাইবে তখনই চলে আসবো তবে আমার একটা শর্ত আছে?
জি বলুন আপনার শর্ত?
আমি তোমাদের বাসায় যাবো না, তুমি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসবে।
আপনার মাথা খারাপ, আপনাকে বাসায় নিয়ে গেলে তো আমিই বিপদে পড়বো। আপনি ঢাকা চলে আসুন আমি গিয়ে আপনার সঙ্গে দেখা করবো।
তাহলে একথাই থাকলো কাল যখন তুমি কথা বলবে তখন আমি তোমাকে সব বলবো। তুমি আগামী পরশুদিন সকালে আমাকে রিং দিও তারপর আমি যেখানে আসতে বলবো তুমি চলে আসবে, বলে জামাল মোবাইল অফ করল।
জামাল আজ আনন্দে মেতে উঠল।
সে সবসময় নতুনত্বের প্রত্যাশী, জামালের স্ত্রী অনন্যা সুন্দরী, স্মার্ট, শিক্ষিতা কোনদিক থেকে তার কোন কমতি নেই তবুও অনন্যাকে জামালের ভালো লাগে না। অনন্যাকে জামালের খুব পুরাতন, অসুন্দর এবং একঘেয়ে বলে মনে হয়। তারপর জীবনে এলো জুঁই, জুঁইকে নিয়ে চলল বেশ কিছুদিন। আবাসিক হোটেলে রাত কাটানো থেকে শুরু করে জুঁইদের বাসায় দিনের পর দিন তাকে ভোগ করার পর এক সময় জুঁইকেও তার পুরাতন বলে মনে হলো। তার নজর পড়ল যুথির উপর, যুথি তখন সবেমাত্র যৌবনে পা দিয়েছে তার মাঝে ছিল রূপ, যৌবন আর সতীত্বের অহংকার কিন্তু জামাল তাকেও কৌশলে এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ব্যর্থ হবার পর একরকম জোরপূর্বক যুথির সমস্ত অহংকার দুমড়ে মুচড়ে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল।
কিন্তু সে পরিকল্পনা পরিকল্পনাই থেকে গেল। আজ জানলো তাকে না জানিয়ে যুথিকে ঢাকায় তার খালার বাসা থেকে বিয়ে দিয়েছে। অবশ্য বীথিকে দেখার পর থেকে জামালের কুনজর পড়ে বীথির ওপর সে নিজেও যুথিকে পাশ কাটিয়ে বীথিকে পাবার জন্য জাল বুনতে থাকে।
বীথি উচ্চাভিলাসী, তাই প্রথম দিন জামালের সঙ্গে কথা বলার পর আর যুথির মুখে তার অর্থবিত্তের কথা শুনে সে জামালের আভিজাত্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। বীথিও জামালের মনে স্থান দখল করার স্বপ্ন দেখতে থাকে।
প্রায় দিন জামালের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বীথি নিজেই একরকম জামালের কাছে ধরা দিয়েছে। আজ বীথির সঙ্গে কথা বলার পর জামালের মনের মধ্যে বীথির ছবিটা ভেসে উঠল। জামাল আপন মনে একবার হেসে উঠল। এমনসময় রশিদ সাহেব চেম্বারে ঢুকে সালাম দিলেন।
কী খবর রশিদ সাহেব?
ভাইজান কাল টেণ্ডার আছে তাই সিডিউলগুলো যদি সই করে দিতেন?
হ্যাঁ নিয়ে আসুন।
রশিদ সাহেব বেরিয়ে গেলেন এবং কয়েক মিনিট পর কয়েকটি সিডিউল নিয়ে চেম্বারে ঢুকলেন। জামাল সিডিউলগুলো সই করতে করতে বলল, রশিদ সাহেব অনেক তো সিডিউল ড্রাপ করলাম কাজ তো পাচ্ছি না। এবার বেশি করে লেস দিবেন যেন দু'একটা কাজ পাই, এভাবে বসে আর কতদিন? ভাগ্যিস চাউলের ব্যবসাটা আছে নইলে তো বাবার পেট্রোল পাম্পে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকতো না।
ঠিকাদারী ব্যবসা এমনই ভাইজান এক সময় দেখবেন কাজ পেতেই থাকবেন।
জামাল শুষ্ক হাসি হেসে বলল, রশিদ সাহেব আপনার কথাই যেন হয়। আর হ্যাঁ আমি পরশুদিন ঢাকা যাবো ফিরতে কয়েকদিন দেরি হবে আপনি ঐদিকটা সামলে নিবেন আর একান্ত প্রয়োজন হলে মোবাইল তো আছেই কথা বলতে বলতে জামাল সই করা শেষ করল।
ঢাকায় পৌঁছে জামাল হোটেলে সিট বুক করে কেবল বসেছে সেই মুহূর্তে বীথি মোবাইল করল, জামাল মোবাইল রিসিভ করল।
অপর পাশ থেকে বীথির কন্ঠস্বর ভেসে এলো, জামাল ভাই এসেছেন?
হ্যাঁ আমি এখন ঢাকায়? তুমি কোথায়?
আমি বাসা থেকে কলেজের কথা বলে বের হলাম। এখন বলুন কোথায় আপনার সঙ্গে দেখা করবো?
তুমি আমার হোটেলে চলে এসো তারপর হালকা কিছু খেয়ে এক সঙ্গে বের হবো বলে জামাল তার হোটেলের নাম ঠিকানা এবং রুম নাম্বার বলল।
বীথিকে আসার কথা বলেই জামাল তার কথা মনে মনে ভাবতে শুরু করেছে। এমনিভাবে জামাল জুঁইকে এই হোটেলে এনেছিল। তাকে বাগে আনতে জামালের বেশ সময় লেগেছিল কিছুটা কৌশলও অবলম্বন করতে হয়েছিল কিন্তু বীথি খোলামেলা, উচ্চাভিলাসী এবং লোভী। হয়তবা বীথিকে বাগে আনতে তেমন একটা ঝামেলা পোহাতে হবে না।
হোটেলের রিসিপশনে ঢুকে বীতি জামালের নাম জিজ্ঞেস করল।
রিসিপশনিস্ট বলল, দু'শ এগারো নাম্বার রুমে যান প্লিজ।
বীথি বুঝতে পারল যে দ্বিতীয় তলার এগারো নম্বর রুম কিন্তু হোটেলের আভিজাত্য দেখে বীথি বিস্মিত হলো এবং দ্বিতীয় তলায় উঠতে গিয়ে তাঁর পা যেন শিথিল হয়ে গেল। তার মনে হলো এখানে জামাল আছে তো? আমি কোন ভুল পথে যাচ্ছি না তো? ভাবতে ভাবতে ধীর পদে বিথী দু'শ এগার নাম্বার কক্ষে দরজা নক করল।
জামাল দরজা খুলে দিয়েই বলল, এসো বীথি, কোন অসুবিধা হয় নি তো।
না।
কেউ কিছু বলেছে?
না, আসলে আমি ভয় পেয়েছিলাম এখানকার চাকচিক্য আর আভিজাত্য দেখে, আপনাকে দেখার পর ভয় কেটে গেছে।
রুমের মধ্যে পাশাপাশি দু'টা সোফা আছে, জামাল সেদিকে ইঙ্গিত করে বলল, বসো।
বীথি সোফায় বসল। জামাল বীথি পাশাপাশি সোফায় বসে বীথির একটা হাত নিজের হাতের মধ্যে নিল। বীথি নিজের হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার মৃদু চেষ্টা করল।
জামাল বলল, কিছু খাবে?
বীথি মাথা নেড়ে সায় দিল।
শুধু কফি দিতে বলি, বলে জামাল উত্তরের অপেক্ষায় না থেকে ইন্টাকমের মাধ্যমে কফির অর্ডার দিল।
কয়েক মিনিটের মধ্যে কফি চলে এলো, দু'জনে কফি খেতে খেতে গল্প করল। জামাল বার বার করে বীথির দিকে তাকাচ্ছিল বীথি কফি খাওয়ার পর জিজ্ঞেস করল, বার বার কী দেখছেন?
আজ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
বীথি কিছুটা লজ্জা পেল।
জামাল বীথির সোফার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বীথির দু'হাতে হাত রেখে বলল, একবার আয়নার সামনে দাঁড়াও, বলে জামাল একরকম জোর করে বীথিকে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরল বীথি নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বলল, ছি: ছি: জামাল ভাই আপনি কী করছেন।
জামাল বীথিকে বুকের মধ্যে নীবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরল।
বীথি বিনয়ের সাথে বলল, জামাল ভাই ছেড়ে দিন প্লিজ আমি তো আসছি শপিং করে তারপর-
জামাল বীথির মুখের দিকে তাকাল তার চোখে মুখে লজ্জা ও ভীতির একটা স্পষ্ট ছাপ ফুঠে উঠল। কিন্তু কোন ছলনা বা চাতুরতার চিহ্ন নেই। জামাল বিথীর কানে ফিস্ ফিস্ করে কী যেন বলল তারপর সায় দিতেই জামাল বীথিকে ছেড়ে দিয়ে আবেগজড়িত কণ্ঠে বলল, তুমি খুব ভালো মেয়ে, লক্ষ্মী মেয়ে।
ইষ্টার্ন প্লাজার চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে দু'জনে প্রথমে একটা মোবাইল ফোনের দোকানে গেল। বীথি কিছু বলল না, বীথির একটা হাত জামাল ধরে রেখেছে, জামাল ইচ্ছা করে ঘা ঘেঁষে হাঁটছে বীথিও বুঝতে পেরেছে জামাল তার সান্নিধ্য চায়, তার শরীরের একটু উষ্ণতা চায়। সে জন্যই হয়ত জামাল তাকে খুশি করতে চায়।
দোকানদার কয়েকটা মোবাইল সেট টেবিলের গ্লাসের উপর রাখল।
জামাল বীথিকে বলল, বীথি পছন্দ করো।
বীথি আমতা আমতা করে বলল, জামাল ভাই আসলে আপনার বাজেট-
জামাল বীথির কানের কাছে ফিস্ ফিস্ করে বলল, আসলে তোমার জন্য আমার বাজেটের অভাব নেই।
তবুও আপনি দেখুন, কারণ মোবাইল সেট সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা নেই।
তারপর জামাল একটা সেট বীথির হাতে দিয়ে বলল, দেখতো এটা তোমার কেমন মনে হচ্ছে?
বীথি বলল, ভাইয়া এটার দাম অনেক, মোবাইল কথা বলার জন্য, শুধু কথা বলতে পারলেই তো হলো, এতকিছু ফাংশন থাকার তো প্রয়োজন নেই।
জামাল বীথির চোখে চোখ রেখে বলল, বীথি আমি জানতে চাচ্ছি তোমার পছন্দ হয়েছে কি না?
বীথি মনে মনে খুব খুশি হলো। সে মিষ্টি হেসে মাথা বাঁকিয়ে সায় দিল।
তার মোবাইল সেটের সঙ্গে সিমকার্ড সেট করে নিয়ে বীথি প্রথমে জামালের মোবাইল নাম্বারে রিং দিল। জামাল একটু দুরে সরে গিয়ে মোবাইল রিসিভ করল।
বীথি বলল, ইউ আর সো গ্রেট।
মোবাইলের দোকান থেকে বেরিয়ে আবার দু'জনের হাত এক হয়ে গেল। জামাল বীথির গা ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে বীথির কানে ফিস্ ফিস্ করে কি যেন বলতেই বীথির চোখ মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠল।
তারপর সমস্ত মার্কেট ঘুরে বীথির জন্য অনেক কাপড়-চোপড় কসমেটিক্স আরো অনেক কিছু কেনা হলো। শপিং করা শেষে দু'জনে হোটেলে ফিরল। হোটেলে ফিরে বীথি ব্যাগটা মেঝেতে রেখে ধপাস করে সোফায় বসে পড়ল।
জামাল বলল, তোমাকে বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।
আচ্ছা, বলে বিথী টয়লেটে ঢুকলো।
কয়েক মিনিট পরে খাবার চলে এলো। দু'জনে খেতে খেতে জামাল কয়েকবার বীথির দিকে তাকাল, নিজ হাতে বীথির প্লেটে খাবার তুলে দিল।
বীথি জামালের অতি উৎসাহী আচরণ আর লোলুপ দৃষ্টি বুঝতে না পেরে আপন মনে মাঝে মাঝে মৃদু হাসল।
জামাল জিজ্ঞেস করল, হাসছ কেন?
আমাকে এভাবে কেউ কোনদিন তুলে খাওয়ানি তো তাই।
জামাল মনে মনে বলল, আমিও কাউকে এমনিভাবে তুলে খাওয়ানি তবে তোমাকে তুলে খাওয়ানোর পিছনে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য আছে।
খাওয়া শেষ হলে বয় প্লেট গ্লাস নিয়ে চলে গেল। জামাল বীথির গা ঘেঁষে বসে বীথির দু'বাহুতে হাত রাখল। বীথির সমস্ত শরীর শিউরে উঠল।
বীথি অষ্ফুট স্বরে বলল, ভাইয়া।
এতক্ষণে বীথি জামালের আসল রূপ দেখতে পেল।
জামাল বলল, বীথি আজ আমি তোমার সব ইচ্ছা পূরণ করেছি তাই না?
বীথি মাথা বাকিয়ে সায় দিল।
আচ্ছা বীথি তোমার কি আর কিছু নেওয়ার ইচ্ছা ছিল যা হয়ত তুমি আমাকে বলতে পারোনি।
বিথী মাথা বাকিয়ে বলল, না, আসলে আমি কোনদিন ভাবতেও পারিনি যে আপনি আমার জন্য এতকিছু করবেন।
জামাল বীথির আরো গা ঘেঁষে বসল, আচ্ছা বীথি এখন আমি যদি তোমার কাছে কিছু চাই?
বীথি শুষ্ক কন্ঠে বলল, আমার তো দেওয়ার কিছু নেই।
জামাল অদ্ভুত ভঙ্গীতে তাকিয়ে বলল, বীথি তোমার যা আছে তা অফুরন্ত, আমি তোমার কাছ থেকে সেই অফুরন্ত জলরাশি থেকে সামান্য কিছু আশা করছি।
তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না। জামালের শেষের কথাগুলো বীথির মনে করুণার সৃষ্টি হলো কিন্তু তবুও বীথি জামালের কথার সায় দিল না।
জামাল বলল, বীথি আমি তোমার অনেকগুলো ইচ্ছা পূরণ করলাম তুমি শুধু-
বীথি জামালের কথায় বাধা দিয়ে বলল, না ভাইয়া, না প্লিজ।
জামাল দু'হাতে বীথিকে জড়িয়ে ধরল, না বলো না, আমি অনেক আশা করে এসেছি।
বীথি নিজেকে জামালের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করল।
জামাল বীথিকে একরকম জোর করেই বিছানায় নিয়ে গেল।
বীথি বিছানা থেকে নেমে মেঝেতে দাঁড়ালো।
মুহূর্তেই জামাল তার কথার সুর পাল্টালো। বীথি একটা কথা মনে রাখবে। কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয় এটাই নিয়ম।
তুমি শুধু নিবে কিছু দিবে না তা কী করে হয়? আমি তোমাকে অনেক কিছু দিয়েছি, এখন তুমি আমাকে কিছু দাও।
বীথি প্রচণ্ড রেগে বলল, তাহলে আপনি আমাকে দেয়া জিনিস-পত্র ফেরত নিন, আমাকে যেতে দিন প্লিজ।
না তা হয় না, বলে জামাল বীথিকে জড়িয়ে ধরে জোরপূর্বক বিছানায় তুলে তার স্পর্শকাতর অঙ্গসমূহ দলিত মোথিত করল।
হয়ত এমনই হয় মেয়েরা প্রথমে নিজেকে ধরে রাখার, নিজের সম্মান, নিজের রুপ, লাবন্য ধরে রাখার চেষ্টা করে তারপর নিজের অজান্তেই নিজেকে সমর্পন করে। বীথিও একসময় নিজেকে জামালের কাছে সমর্পন করল।
তারপর অনেকক্ষণ চলল আদিম খেলা। বীথিও নতুনত্বের নেশায় মাতাল হয়ে গেল। সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো ঢেউয়ের পর ঢেউ ছলাৎ ছলাৎ শব্দে সমস্ত ঘরের চার দেয়ালে আছড়ে পড়ল। তারপর ক্লান্ত দেহ, এলোমেলো চুল, আর মুখের চুম্বনের চিহ্ন নিয়ে বীথি বাথরুমে ঢুকলো।
জামাল বীথির গা ঘেঁষে বসে বীথির গালে চুমু দিয়ে বলল, বীথি তুমি খুব সুন্দর, খুব রোমান্টিক, খুব মিষ্টি মেয়ে।
বীথি মুচকি হেসে জামালের বুকে মাথা রেখে বলল, আপনিও-
চলবে...
গডফাদার-০১ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।